খানিকটা দেরিতে জাতীয় দলে অভিষেক হলেও আলো ছড়িয়েছেন ভারতীয় ব্যাটসম্যান সুরিয়াকুমার যাদব। টি টোয়েন্টিতে রীতিমতো ব্র্যাডম্যান সুলভ গড়ে রান করেছেন এই তারকা। সীমিত ওভারের স্পেশালিস্ট এই তারকার সামনে এবার টেস্টে আলো ছড়ানোর সুযোগ।
ভারতের ৩০৪ নম্বর টেস্ট ক্যাপ পেয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নাগপুরে হয়ে গেছে টেস্ট অভিষেক। সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রীর হাত থেকে টেস্ট ক্যাপ হাতে পান তিনি।
টেস্ট ক্রিকেটকে বলা হয় ক্রিকেটের অভিজাত ফরম্যাট। নিজের সামর্থ্যের পুরোটা ঢেলে দিতে হয় লাল বলের ক্রিকেটে সফল হতে। ব্যাটিং কিংবা বোলিং দুই বিভাগেই ক্রিকেটারদের চূড়ান্ত পরীক্ষা নিয়ে থাকে টেস্ট ক্রিকেট।
সাদা বলের ক্রিকেটে আলো ছড়ানোর পর থেকেই সমর্থকদের দাবি ছিল সুরিয়াকে টেস্টের দলে নেয়ার। অবশেষে নির্বাচকদের মন গলেছে, ভারত জাতীয় দলের টেস্ট দলে জায়গা পেয়েছেন এই ব্যাটার। তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত ক্রিকেট ঈশ্বর শচীন টেন্ডুলকারও। সুরিয়াকে সাদা জার্সি গায়ে দেখতে যেন তর সইছে না তাঁর। তাঁর মতে লাল বলে সফল হওয়ার সকল গুণবলীই আছে তাঁর এই ব্যাটারের মাঝে।
শচীন বলেন, ‘টি টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে ভালো করার পর এবার সুরিয়া টেস্টে সুযোগ পেলো। অভিষেকেই পর থেকেই আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় জায়গা করে নিয়েছে সে। তাঁর ব্যাটিং দেখলে যে কেউই তাঁর প্রেমে পড়ে যাবে।’
শচীন আরো বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট নিশ্চিতভাবেই বাকি দুই ফরম্যাটের চাইতে আলাদা। তবে তাঁর মতো সামর্থ্যের ক্রিকেটারকে লোকেশ রাহুল এবং শুভমান গিলের পাশাপাশি সুযোগ দেয়া উচিত। এই তিনজনই যোগ্য খেলোয়াড় এবং নিজেদের সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন পূর্বে। তিনজনেই জাতীয় দলের একাদশে সুযোগ পাবার সামর্থ্য রাখে।’
নিজে টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক, তাঁর পরামর্শকে মাথা পেতে গ্রহণ করবে বিশ্বের যেকোনো দল। তবে শচীন নিজে কখনো আগ্রহ দেখাননি দল গঠন বিষয়ে মন্তব্য করার। এবারেও যেমন এড়িয়ে গেছেন আদর্শ টেস্ট একাদশের প্রশ্নটাও। তবে জানিয়েছেন ধারাবাহিকতা হওয়া উচিত দলে সুযোগ পাবার মাপকাঠি।
তিনি বলেন, ‘আমি টিম কম্বিনেশন নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে আমরা যদি সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করি, তাহলে দেখবো শুভমান গিল দুর্দান্ত ফর্মে আছেন। রাহুল অবশ্য নিজের সেরা ফর্মে নেই। তবে ক্যারিয়ারে উত্থান – পতন থাকবেই। আপনাকে এসব মেনে নিতে হবে। তাঁরা দুজনেই অসাধারণ ক্রিকেটার এবং সেরা একাদশে থাকার যোগ্য। তবে তাঁদেরকে নিয়মিত রান করে যেতে হবে।’
এছাড়া সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতের এক নম্বর ক্রিকেটার বিরাট কোহলির ফর্মে ফেরা নিয়েও কথা বলেছেন মাস্টার ব্ল্যাস্টার। অজিদের বিপক্ষে সিরিজে ফুরফুরে মেজাজের কোহলিকেই চান তিনি। তাঁর মতে, ‘গত কয়েক মাস ধরে সে যেভাবে খেলছে, সেটা সত্যিই প্রশান্তির। তাঁকে অনেক বেশি ফুরফুরে লেগেছে, নিজের পরিকল্পনামাফিক খেলতে পেরেছে কোহলি।’
২০১৭ সালের পর ভারত সফরে আসছে প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া। ভারতের মাটিতে এবারে তাই বিরাট কোহলি এবং নাথান লিঁওকে মুখোমুখি দেখতে আর তর সইছে না শচীনের। তাঁর ভাষায়, ‘বিশ্ব ক্রিকেটের এমন দ্বৈরথের দরকার আছে। আমার মনে পড়ে ১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়া যখন খেলতে এসেছিল তখন সবাই আমার আর ওয়ার্নের মুখোমুখি হওয়ার কথা বলতো। তখন আমাকেই বলতে হতো এটা ওয়ার্ন বনাম শচীন নয়, বরং ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়ার খেলা। তবে সবাই এমন দ্বৈরথ দেখতে পছন্দ করে।’