রাজধানীর তেজকুনি পাড়ায় অসংখ্য ছোট বড় অলিগলি। হঠাৎ সেই ছোট্ট একটা গলিতে দেখা গেলো বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটার তামিম ইকবাল খানকে। তামিম ইকবাল একা নন। সাথে সাদা রঙের একটা সেডান গাড়ি।
সেই গাড়িটি তেজকুনি পাড়ার বাসিন্দা অনুপ এলভিন অধিকারীর হাতে ঈদ উপহার স্বরূপ তুলে দিতে এসেছেন তামিম। বিষয়টা স্বপ্নের মত ঠেকারই কথা অনুপ। কিন্তু অনুপ স্বপ্নেও হয়তো যা ভাবেননি কখনো সে বিষয়টিই সত্য হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদের সৌজন্যে।
ছোট্ট এই গলিতে তামিমের মত তারকার উপস্থিতি যেন খানিকটা অবিশ্বাস্যই। পুরো এলাকায় তখন খবর ছড়িয়ে পড়েছে। পুরো তেজকুনি পাড়ার অলি গলিতে তখন যেন উৎসব উৎসব ব্যাপার বিরাজ করছে। তামিম আর সেই সাদা সেডান গাড়িটিকে ঘিরে তখন অনেক মানুষের ভিড়। পুরো বিষয়টি যেন তখনো অবিশ্বাস্য ঠেকছিলো অনুপের কাছে।
ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদ চালাচ্ছে একটি বিশেষ ক্যাম্পেইন। ই-কমার্স সাইট থেকে মাত্র ৫০০ টাকা বা এর বেশি কেনাকাটা করে নগদের মাধ্যমে পেমেন্ট করলেই কোটি টাকার উপহার জেতার সুযোগ থাকছে নগদ ব্যবহারকারীদের। এমনকি এই ক্যাম্পেইনের সবচেয়ে বড় উপহার হিসেবে থাকছে এক কোটি টাকা বিএমডব্লু গাড়ি।
কিছুদিন আগেই একটি ই-কমার্স সাইট থেকে তেল, চাল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনেছিলেন অনুপ এলভিন অধিকারী। মোট ১১৩৫ টাকার বাজার করে নগদ ওয়ালেট ব্যবহার করে পেমেন্ট করেছিলেন তিনি। হয়তো তখনো অনুপ ভাবেননি যে এই সামান্য কেনাকাটা তাঁর জন্য কত বড় সৌভাগ্য বয়ে আনতে যাচ্ছে।
সেই অনুপ হঠাত একদিন ঘরের দরজা খুলে দেখলেন দেশের অন্যতম বড় তারকা তামিম ইকবাল দাঁড়িয়ে আছেন তাঁর জন্য গাড়ি নিয়ে। যদিও অনুপকে প্রথমে বলা হয়েছিলো নগদে কেনাকাটা করে একটি ফ্রিজ জিতেছেন তিনি। এরপর তামিমের সাথে বাসার বাইরে বেরিয়ে এসে দেখলেন এমন কিছু যা অনুপের ভাবনারও বাইরে।
উপহার বুঝে পাবার আরো বেশ কিছুক্ষন পরেও যেন ঘোর কাটছিলো না অনুপের। সেই ঘোর লাগা কন্ঠেই সংবাদমাধ্যমকে অনুপ বলেন, ‘আমার জন্য তামিম ইকবালকে দেখাটাই জীবনের সেরা প্রাপ্তি ছিলো। উনি তো সারা বিশ্বের তারকা। ওনাকে কাছ থেকে দেখাও কঠিন। সেখানে উনি নিজে আমার বাসায় এসে হাজির হয়েছেন। আমি কোনো কিছু মিলাতে পারছিলাম না। তামিম আমার বাসায় আসবেন কেনো, তামিম আমার সাথে কেনো কথা বলবেন, কিছু বুঝতে পারছিলাম না।’
প্রথম উপহার হিসেবে ফ্রিজের কথা শুনলেও পরে সেডান গাড়ি দেখে যেন আরো অবাক অনুপ। তিনি বলেন, ‘আমার জীবনে এর আগে এমন দিন কখনো আসেনি। আর আসবে বলেও মনে হয় না। তামিম ইকবালের কাছ থেকে একটা সেডান কার বুঝে পেলাম, এটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার। আমার মত একজন মানুষের জন্যে একটা সেডান গাড়ি তো সারাজীবন মনে রাখার মত ব্যাপার।’
শুধু সেডান গাড়িই নয়, অনুপের পরিবারের জন্য এরচেয়েও বড় সুসংবাদ যেন নিয়ে এসছেন তামিম। অনুপের বাবা একজন বেসরকারী অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবি। ভুগছেন ভয়ানক হৃদরোগ সমস্যায়। অর্থের অভাবে বাবার ঠিকঠাক চিকিৎসাও করাতে পারছিলেন না অনুপ। অনুপের বাবা সুশান্ত অধিকারীর হৃদরোগের সমস্যা এতটাই প্রবল যে ছেলের এই খুশির দিনেও আবেগ প্রকাশে ভয় পাচ্ছিলেন তিনি। শুধু তাঁর চোখ গড়িয়ে পড়লো কয়েক ফোটা পানি। তামিম ইকবাল তাঁর সাথে দেখা করার পর দায়িত্ব নিয়েছেন তাঁর চিকিৎসার। অনুপের আনন্দটা যেন তাই আজকে একটু বেশিই।
অনুপ বলেন,’বাবার চিকিৎসা করানোটা কঠিন একটা ব্যাপার ছিলো। তামিম নিজেই বাবার সাথে কথা বলে মুগ্ধ হয়েছেন। তিনিই বলেছেন, বাবার চিকিসা করাতে যা দরকার, সেটা তিনি করাবেন। আমি আর ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। নগদ আমার জীবনটাই বদলে দিয়েছে।’