তাসকিন অ্যান্ড আদার্স

কারো কারো মতে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা বাংলাদেশের জন্য সফল। আবার অনেকেই মনে করেন বাংলাদেশ এবারো ব্যর্থ। এবারই প্রথম মূল পর্বে একাধিক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচ অবধি ছিল সেমিফাইনালের রেসে। ওদিকে দুটি জয় আবার এসেছে জিম্বাবুয়ে ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। ফলে বাংলাদেশ সফল নাকি ব্যর্থ এই নিয়ে তর্ক বিতর্কের শেষ নেই।

আবার বাংলাদেশ কোন ডিপার্টমেন্টে বেশি সফল সেই তর্কও হতে পারে। ব্যাটিং নাকি বোলিং? ব্যাট হাতে শান্ত দলের সর্বোচ্চ স্কোরার। লিটনের ইনিংসটা এখনো চোখে লেগে আছে। তবে বল হাতেই অ্যাজ অ্যা ইউনিট বেশি জ্বলে উঠতে পেরেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে তাসকিন আহমেদ অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে রীতিমত গতির ঝড় তুলেছেন। সবমিলিয়ে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা বোলারদের নিয়েই এই তালিকা।

  • তাসকিন আহমেদ

২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা বোলার কে? নামটা যে কেউ চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারে। কিংবা এই বিশ্বকাপে সেরা পেসারদের তালিকা করা হলেও নিশ্চিতভাবেই থাকবেন তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশের হয়ে এই পেসার আরেকবার দেখালেন নিজের ক্লাস।

ভালো কন্ডিশন, ভালো উইকেট পেলে তাসকিন আহমেদ কী করতে পারেন সেটা আরেকবার প্রমাণ হলো বিশ্বমঞ্চে। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই তিনি ছিলেন দলের স্ট্রাইক বোলার। বিশেষ করে ভারতের বিপক্ষে তাঁর টানা চার ওভারের স্পেলটা বাংলাদেশের ক্রিকেটেরই এক অনন্য দৃষ্টান্ত। সেদিন তাসকিন উইকেট হয়তো পাননি, তবে চার ওভারে খরচ করেছিলেন মাত্র ১৫ রান। আর বিশ্বকাপ শেষে তাসকিনের ঝুলিতে আছে মোট ৮ উইকেট। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ২৫ রান দিয়েই নিয়েছিলেন ৪ উইকেট।

  • হাসান মাহমুদ

পেস বোলিং ইউনিটে বাংলাদেশের নতুন সেনসেশন হাসান মাহমুদ। অনেকদিন ইনজুরির কারণে ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন। তবে জাতীয় দলে ফিরেই আবার নিজেকে প্রমাণ করতে শুরু করেছেন। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন চারটি ম্যাচ।

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মাত্র ২৪ রান খরচ করে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। এছাড়া ভারতের সাথেও এই পেসারের ঝুলিতে আছে তিন উইকেট। সবমিলিয়ে এবারের বিশ্বকাপে চার ম্যাচ খেলে এই পেসার তুলে নিয়েছেন ছয় উইকেট।

  • সাকিব আল হাসান

ব্যাট হাতে বিশ্বকাপটা ভালো যায়নি সাকিব আল হাসানের। বল হাতেও সাকিব ঠিক সাকিব সূলভ ছিলেন না। তবুও বাংলাদেশের সেরা বোলারদের তালিকায় আছেন তিনি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণটা তিনিই সামলেছেন।

যদিও সবসময়ের মত এবার বল হারে তেমন একটা ইকোনমিক্যাল ছিলেননা এই অধিনায়ক। প্রতি ম্যাচেই খরচ করেছেন ওভারপ্রতি আটের বেশি রান। তবে বিশ্বকাপ শেষে সাকিব আল হাসানের নামের পাশে আছে মোট ছয়টি উইকেট। হাসান মাহমুদের সাথে যৌথভাবে বাংলাদেশের দ্বতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি।

  • মুস্তাফিজুর রহমান

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুস্তাফিজুর রহমান খুব একটা ভালো অবস্থান থেকে যাননি। বল হাতে একেবারেই কার্যকর হতে পারছিলেন না বাঁহাতি এই পেসার। তবে বিশ্বকাপে নিজের বোলিং ফর্মটা একটু হলেও ফিরে পেয়েছেন দ্য ফিজ।

এই বিশ্বকাপে মুস্তাফিজ খুব বেশি উইকেট না পেলেও ছিলেন বেশ ইকোনমিক্যাল। বল হাতে প্রায় প্রতি ম্যাচেই ব্যাটারদের ভুগিয়েছেন। অনেকদিন পর মুস্তাফিজকে আবার সেই চেনা ছন্দে দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য এটাই আপাতত বড় প্রাপ্তি। এছাড়া পাঁচ ম্যাচ খেলে মুস্তাফিজ উইকেট পেয়েছেন মোট তিনটা।

  • মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত

পুরো বিশ্বকাপেই বাংলাদেশ পঞ্চম বোলারের সংকটে পড়েছে। কেননা বাংলাদেশ দল চারটি ম্যাচই খেলেছে আট ব্যাটার নিয়ে। অর্থাৎ সাকিব সহ পুরোদস্তুর বোলার একাদশে ছিলেন মাত্র চারজন। ফলে বাংলাদেশের মত আমাদের এই তালিকাতেও আছে পঞ্চম বোলারের সংকট।

এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পঞ্চম সেরা উইকেট শিকারি হয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। দলের প্রয়োজনে প্রায় প্রতি ম্যাচেই হাত ঘুরিয়েছেন এই পার্টটাইম স্পিনার। সবমিলিয়ে বিশ্বকাপে তাঁর ঝুলিতেও আছে দুই উইকেট।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link