শীতের শহরে এলো রেকর্ড গড়া তাসকিন ঝড়

আসল প্রশ্নটা হচ্ছে তাসকিন আদতে নিজের ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে চান কি-না? তার পারফরমেন্স নিশ্চিতরূপেই বলছে তিনি ভাগ্য বদল করতে চান। তাইতো একা হাতে ধসিয়ে দিলেন ঢাকা ক্যাপিটালসকে, সেই সাথে গড়ে ফেললেন রেকর্ডও।

তাসকিন আহমেদের ভাগ্য যেন কখনোই তাকে সহয়তা করে না। কাগজে-কলমে দুর্বল দলে খেলাই যেন তার নিয়তি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের একাদশ আসরেও সে ভাগ্যে বদল আসেনি। কিন্তু আসল প্রশ্নটা হচ্ছে তাসকিন আদতে নিজের ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে চান কি-না? তার পারফরমেন্স নিশ্চিতরূপেই বলছে তিনি ভাগ্য বদল করতে চান। তাইতো একা হাতে ধসিয়ে দিলেন ঢাকা ক্যাপিটালসকে, সেই সাথে গড়ে ফেললেন রেকর্ডও।

দুর্বার রাজশাহীর বোলিং আক্রমণটা যথেষ্ট নড়বড়ে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১৯৭ রান স্কোরবোর্ডে তুলেছিল রাজশাহীর ব্যাটাররা। তবুও সে ম্যাচ হেরেছে দলটি। সে ম্যাচে তাসকিন ৩ উইকেট বাগিয়েছিলেন। একই ধারা অব্যাহত রেখেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে।

ঢাকার দুই ওপেনারকে শিকার করে শুরু হয় তাসকিনের যাত্রা। প্রথম স্পেলে লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট নিয়ে তিনি ম্যাচের মোমেন্টাম রাজশাহীর পক্ষে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু বাকি বোলারদের উদারতায়, সেই মোমেন্টাম হয়ে যায় হাতছাড়া।

পরবর্তীতে ডেথ ওভারে এসেও প্রতিপক্ষে উইকেট তুলে নেওয়ার কাজটা অব্যাহত রাখেন। সতেরোতম ওভারে দুইটি উইকেট তুলে নেন তিনি। ফিফটি করা শাহাদাত হোসেন দীপুকে ফিরিয়েছেন তিনি প্যাভিলিয়নে। এরপর চতুরঙ্গ ডি সিলভাকেও নিজের উইকেটে পরিণত করেন।

এরপর ইনিংসের শেষ ওভারেও তার ঝুলিতে জমা পড়ে উইকেট। দ্বিতীয় বার স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ফাইফার নেওয়ার স্বাদ অর্জন করেন তাসকিন আহমেদ। তবে সেখানেই থেমে থাকেননি তিনি, সন্তুষ্ট থাকেননি পাঁচ উইকেটে। শীতের চাদরে ঢেকে থাকা ঢাকায় তিনি উষ্ণতা ছড়ালেন নিজের বোলিং দিয়ে।

বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে সেরা বোলিং ফিগার এখন তাসকিনের। ৭ উইকেট বাগিয়েছেন তিনি মাত্র ১৯ রানে। সাকিব আল হাসানকে পেছনে ফেলে তিনিই এখন সেরা বোলিং ফিগারের মালিক। সাকিব ৬ রানে ৬ উইকেট শিকার করেছিলেন ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে।

দল নড়বড়ে হলেও তাসকিন যেন ইস্পাত কঠিন। তিনি তার পারফরমেন্সে নিজের ভাগ্য বদলে দিতে চান, সেই সাথে বদলে দিতে চান দলের ভাগ্য। দুর্বার গতিতে ছুটে চলা তাসকিন সেই বার্তাই তো দিচ্ছেন।

তাছাড়া একটা বিশ্বরেকর্ডেও যুক্ত হয়ে গেলেন তিনি। সব ধরণের ক্রিকেট মিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে সাত উইকেট পাওয়া তৃতীয় বোলার তাসকিন। প্রথম স্থানে আছেন মালয়েশিয়ার সিয়াজরুল ইদ্রুস। চীনের বিপক্ষে মাত্র আট রানে সাত উইকেট বাগিয়েছিলেন।

এছাড়াও ভাইটালিটি ব্লাস্টে কলিন অ্যাকারমান ১৮ রানে সাত উইকেট বাগিয়েছিলেন। এরপরই তাসকিন আহমেদের অবস্থান। বাংলাদেশের প্রিমিয়াম ফাস্ট বোলার এখন বিশ্বরেকর্ডেও জায়গা করে নিচ্ছেন।

Share via
Copy link