স্টুয়ার্ট একাদশ

ক্রিকেট মাঠে একই নামের একাধিক খেলোয়াড় প্রায়ই দেখা যায়।

একই দলে হয়তো একই নামের দুজন খেলছেন। কিংবা বিপক্ষ দলেও কেউ থাকতে পারেন। এমন ঘটনা ক্রিকেট মাঠে নিয়মিতই। তবে একই নামের পুরো একটা একাদশ নিশ্চই কখনো দেখেননি। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ক্রিকেট মাঠে স্টুয়ার্টদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে একাদশ। এই একাদশের সবার প্রথম নাম স্টুয়ার্ট বা Stuart!

আসলে ক্রিকেট মাঠে এত এত স্টুয়ার্ট যে এই একাদশটা গঠন খুব কঠিন কাজ। পরিসংখ্যান বলছে স্বীকৃত ক্রিকেট খেলেছেন এমন স্টুয়ার্ট ইতিহাসে আছেন ১৫৭ জন। তাঁদের কেউ ওপেনার, কেউ বোলার কেউ আবার অলরাউন্ডার। চলুন দেখে আসা যাক সেই স্টুয়ার্ট একাদশ। তবে এই একাদশ কাদের বিপক্ষে খেলবে এমন প্রশ্ন করে লজ্জা দিবেন না।

  • স্টুয়ার্ট মাৎসিকেনেরি (জিম্বাবুয়ে)

আমাদের একাদশের ওপেনার হিসেবে আছেন জিম্বাবুয়ের সাবেক এই ক্রিকেটার। দেশটির হয়ে তিন ফরম্যাটেই খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান। ১১৩ ওয়ানডে ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে ২২২৪ রান। এছাড়া ৮ টি টেস্ট ও ১০ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলেছিলেন এই ব্যাটসম্যান। বল হাতেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর ঝুলিতে আছে ১৮ টি উইকেট।

  • স্টুয়ার্ট উইলিয়ামস (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের বড় তারকা হয়ে উঠার কথা ছিল উইলিয়ামসের। তবে মাত্র ৩১ টেস্ট ও ৫৭ ওয়ানডে ম্যাচেই থেমে যায় তাঁর ক্যারিয়ার। ৫৭ ওয়ানডে ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে ১৫৮৬ রান। টেস্টেপ ১১৮৩ রানের মালিক তিনি।

  • স্টুয়ার্ট কার্লাইল (জিম্বাবুয়ে)

জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের বড় নাম দেশটির সাবেক এই অধিনায়ক। দেশটির হয়ে খেলেছেন ৩৭ টেস্ট ও ১১১ ওয়ানডে ম্যাচ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চার হাজারেরও বেশি রানের মালিক এই ব্যাটসম্যান। পাঁচটি সেঞ্চুরি ও ১৭ টি হাফ সেঞ্চুরি আছে তাঁর ঝুলিতে।

  • স্টুয়ার্ট ল (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট ও ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই খেলেছিলেন এই ব্যাটসম্যান। এছাড়া লেগ স্পিন ও করতে পারতেন তিনি। ৫৪ ওয়ানডে ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে ১২৩৭ রান। ওদিকে বল হাতেও নিয়েছেন ১২ উইকেট। ওদিকে টেস্টে মাত্র ১ টি ম্যাচই খেলেছিলেন তিনি।

  • স্টুয়ার্ট পয়েন্টার (আয়ারল্যান্ড)

আমাদের একাদশে উইকেট কিপার হিসেবে আছেন আয়ারল্যান্ডের এই ব্যাটসম্যান। আয়ারল্যান্ডের হয়ে তিন ফরম্যাটেই মাঠে নেমেছেন তিনি। দেশটির হয়ে ২১ ওয়ানডে , ২৫ টি-টোয়েন্টি ও ১ টি টেস্ট খেলেছেন তিনি।

  • স্টুয়ার্ট বিনি (ভারত)

ভারতের অলরাউন্ডার স্টুয়ার্ট বিনিও আছেন আমাদের এই একাদশে। এই অলরাউন্ডার ভারতের হয়ে তিন ফরম্যাটেই খেলেছেন। ১৪ ওয়ানডে ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে ২৩০ রান ও ২০ টি উইকেট। এছাড়া ৬ টেস্টে ১৯৪ রান করে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ভারতের হয়ে ৩ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলেছেন তিনি।

  • স্টুয়ার্ট থম্পসন (আয়ারল্যান্ড)

আয়ারল্যান্ডের এই অলরাউন্ডারও দেশটির হয়ে তিন ফরম্যাটেই খেলেছেন। ৩ টেস্ট, ২০ ওয়ানডে ও ৪১ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দেশটির হয়ে মাঠে নেমেছেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৩২৮ রানের পাশাপাশি আছে ১৮ টি উইকেটও।

  • স্টুয়ার্ট ব্রড (ইংল্যান্ড)

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বড় নাম স্টুয়ার্ট ব্রড। ইংল্যান্ডের এই পেস বোলার টেস্ট ক্রিকেটে সেরাদের একজন। ১৪৮ টেস্টে তাঁর ঝুলিতে আছে ৫২৩ উইকেট। ১৮ বার পাঁচ উইকেট ও ৩ বার দশ উইকেট নেয়ার কীর্তিও আছে তাঁর। এছাড়া ১২১ ওয়ানডে ও ৫৬ টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলেছেন তিনি। সেখানে তাঁর উইকেট সংখ্যা যথাক্রমে ১৭৮ ও ৬৫। ফলে আমাদের বোলিং ডিপার্টমেন্টের নেতৃত্বে থাকবেন ইংল্যান্ডের এই পেসার।

  • স্টুয়ার্ট ক্লার্ক (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়ার পেসার স্টুয়ার্ট ক্লার্ক ও থাকবেন পেস বোলিং ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তিন ফরম্যাটেই মাঠে নেমেছেন এই পেসার। ২৪ টেস্ট, ৩৯ ওয়ানডে ও ৯ টি-টোয়েন্টির সংক্ষিপ্ত ক্যারিয়ারের মালিক তিনি। টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে তাঁর ঝুলিতে আছে মোট ৯৪ ও ৫৩ উইকেট।

  • স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের এক দুর্ভাগা ক্রিকেটের নাম ম্যাকগিল। দারুণ এই লেগ স্পিনার লম্বা সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারেননি শেন ওয়ার্ণের সমসাময়িক ছিলেন বলে। তবুও দেশটির হয়ে ৪৪ টেস্ট খেলে নিয়েছিলেন ২০৮ উইকেট। ৩ ওয়ানডে ম্যাচেও ৬ উইকেট আছে তাঁর ঝুলিতে।

  • স্টুয়ার্ট গিলেস্পি (নিউজিল্যান্ড)

নিউজিল্যান্ডের হয়ে মাত্র ৩ বছরে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১ টেস্ট ও ১৯ টি ওয়ানডে খেলেছিলেন তিনি। ১৯ ওয়ানডে ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে ২৩ উইকেট। ব্যাট হাতেও একেবারে মন্দ ছিলেন না এই পেসার।

  • দ্বাদশ ব্যক্তি: অ্যান্থনি স্টুয়ার্ট (অস্ট্রেলিয়া)

অ্যান্থনি স্টুয়ার্ট সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে দূর্ভাগা ক্রিকেটার। যিনি হ্যাটট্রিক করে, পাঁচ উইকেট নিয়েও পরের ম্যাচেই আর দলে জায়গা পাননি; আর কখনোই জাতীয় দলে জায়গা পাননি। মাত্র ১২ দিনেই গল্প শেষ হয়ে গেছে অ্যান্থনি স্টুয়ার্টের।

১৯৯৭ সালে তিন ম্যাচে নিলেন আট উইকেট। এর মধ্যে শেষ ম্যাচে হ্যাটট্রিক করলেন এবং নিলেন পাঁচ উইকেট। সবমিলিয়ে তিন ম্যাচে তার বোলিং গড় ১৩.৬২। ২৬ বছর বয়সী অ্যান্থনি তখন নিশ্চয়ই দারুণ একটা ক্যারিয়ারের স্বপ্ন দেখছিলেন। তবে, এরপর আর কখনোই জাতীয় দলে খেলতে পারেননি তিনি।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link