আবিষ্কারের বিস্ময়

সেই ২০১৭ সালের কথা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন ভারতের রবিচন্দ্রন অশ্বিন। সেটাই গত চার বছরের মধ্যে অশ্বিনের খেলা শেষ শর্টার ফরম্যাটের আর্ন্তজাতিক ম্যাচ ছিলো। অবশেষে বিপাকে পড়ে আবার সেই পুরোনো সৈনিকের দ্বারস্ত হয়েছিলো ভারত। তিনি হতাশ করেননি। ১৪ রানে ২ উইকেট নিয়ে ভারতকে ‘মাস্ট উইন’ ম্যাচে জয়ের পথ দেখিয়েছেন।

অশ্বিন কেবল ম্যাচ জিতিয়েছেন, তাই নয়। এই ম্যাচে তিনি দুনিয়ার সামনে এনেছেন নয়া এক ডেলিভারি-ব্যাক ফ্লিপ। অন্তত এই নামেই বলটাকে চিহ্নিত করেছেন শচীন টেন্ডুলকার।

অফস্পিনের নতুন একটা ভেরিয়েশন বলা হচ্ছে এই বলটাকে। অনেকটা লেগ স্লিপের দিকে সিম পজিশন থাকা এই বলটা যে একটা দূরন্ত আবিষ্কার হয়েছে, তা নিয়ে শচীনের কোনো সন্দেহ নেই। তিনি বলছেন, এটা সামলাতে সামনের দিনগুলোতে ব্যাটসম্যানদের অনেক অনুশীলন করতে হবে।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ের পর এক আলোচনায় ভারতের কিংবদন্তি সাবেক ক্রিকেটার শচীন বলছিলেন, এই ম্যাচে তিনি মূলত অশ্বিন এবং শেষ ৩ ওভারের ব্যাটিংয়ে দারুণ মুগ্ধ। অশ্বিন ও তার এই নতুন ডেলিভারি নিয়ে শচীন বলছিলেন, ‘অশ্বিনের নতুন এই ডেলিভারির কথা আমি বলবো, লম্বা লম্বা সময় পর এরকম কিছু দেখলাম। আর সে এটা খুব দারুন করে দেখিয়েছে।’

শচীন সবসময়ই স্পিন বোলিংয়ের শ্রেয়তর বিশ্লেষক। তিনি এই বলটা সম্পর্কে আরেকটু বিস্তারিত করে বলেছেন, ‘অশ্বিনের এই ভেরিয়েশনটাকে বলা যায় ব্যাক ফ্লিপ। আপনি বলটা যদি দেখেন, এটার সিম পজিশন অনেকটাই লেগ স্লিপের দিকে থাকে। অশ্বিন সম্ভবত নিজে নিজেই এটাকে নেটে আবিষ্কার করেছেন; এখন পর্যন্ত এটা কেউ ধরতে পেরেছে বলে মনে হয় না। এটাই একটা কারণ, যে জন্য অশ্বিন তার চার ওভারের পুরো কোটা বল করার পরও তাকে একটাও বাউন্ডারি হজম করতে হয়নি।’

অশ্বিন বলছিলেন, এই বল সামলাতে সামনের দিনগুলোতে ব্যাটসম্যানদের বেশ সংগ্রাম করতে হবে। তিনি বলেছেন, ‘ব্যাটারদের আগামী দিনগুলোতে এই ডেলিভারির বিপক্ষে অনেক অনুশীলন করতে হবে। আমি একটা ব্যাপার বলতে পারি, আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরা তার এই বলের বিপক্ষে মোটেও স্বাচ্ছন্দ ছিল না।’

অশ্বিনের এই ডেলিভারির পাশাপাশি আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে ভারতের হার্দিক পান্ডিয়া ও ঋষাভ পান্তের ব্যাটিং খুব নজর কেড়েছে টেন্ডুলকারের। তিনি বলছিলেন, ‘হার্দিক ও পান্তের জুটিটা অসামান্য ছিল। ওরা শেষ ৩.৩ ওভারে ৬৩ রান তুলেছে। এখানে স্ট্রাইক রেট ছিল ৩০০। এটাই আসলে আমার মতে গেম চেঞ্জার ছিল। ১৯৫ রান আর ২১০ রানের মধ্যে অনেক বড় পার্থক্য আছে। আমরা যত বড় ব্যবধানে জয় পেতাম, সেটাই দরকার ছিল। এটা ভারতীয় দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link