ছেলেকে ছোয়ার আগে বাবাকে সামলাতে হবে

যখন কোহলি আইপিএল জিতলেন, তাঁর ১৮ বছরের স্বপ্ন পূরণ হল, তখন সেই সাফল্যের প্রথম ভাগটুকু তিনি ভাগ করে নিলেন সেই মানুষটার সঙ্গে, যিনি তাঁর সবচেয়ে কঠিন দিনগুলোতে ভরসা হয়ে ছিলেন। এটা নিছক একটা ট্রফির গল্প নয়, এটা শুধুই একটা জড়িয়ে ধরা নয় - এটা একটা ভরসার প্রতিদান দেওয়ার গল্প।

চাঁদের হাটে আইপিএল ট্রফি হাতে তখন বিরাট কোহলি হাঁটছেন। মুখে হাসি, কিন্তু চোখে জল লুকনো। ঠিক তখনই কালো স্যুট, সাদা প্যান্ট পরে এক পৌঢ় এলেন। কোহলি গিয়ে দৌঁড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন সেই মানুষকে। রীতিমত কোলে উঠে পড়তে চাইলেন। যেন, ছোট্ট এক শিশু গিয়ে উঠতে চাইছেন পরম মমতাময় বাবার কোলে।

মানুষটার নাম রবি শাস্ত্রী। একটা আলিঙ্গন — নি:শব্দ, অথচ বজ্রধ্বনির মতো শক্তিশালী। ক্যামেরায় ধরা পড়লো মুহূর্তটা, কিন্তু বোঝা গেল না সেই আলিঙ্গনের পেছনে কত ইতিহাস ছিল, ছিল কত না বলা গল্প। এটা একটা বোঝাপড়ার ছবি, একটা বিশ্বাসের ছবি।

রবি শাস্ত্রী ছিলেন ভারতের প্রধান কোচ, কোহলি ছিলেন অধিনায়ক। দুজন মিলে ভারতীয় ক্রিকেটকে নিয়ে গিয়েছিলেন অন্য উচ্চতায় — বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল, অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ জয়, আর বিশ্বজুড়ে এক আগ্রাসী ভারতীয় দলের পরিচয় গড়ে উঠল।

এই সম্পর্কটা কখনও শুধু ‘কোচ ও অধিনায়ক’ হয়ে থাকেনি। শাস্ত্রী সবসময় পাশে থেকেছেন — কোহলির আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব, মানসিকতা গড়ে তোলার পেছনে তাঁর বড় অবদান ছিল। আর কোহলি সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন মাঠে পারফর্ম করে, নিজের নেতৃত্ব দিয়ে। যেন মুফাসা আর সিম্বা। যার ছেলেকে ছোয়ার আগে বাবাকে সামলাতে হবে।

যখন কোহলি আইপিএল জিতলেন, তাঁর ১৮ বছরের স্বপ্ন পূরণ হল, তখন সেই সাফল্যের প্রথম ভাগটুকু তিনি ভাগ করে নিলেন সেই মানুষটার সঙ্গে, যিনি তাঁর সবচেয়ে কঠিন দিনগুলোতে ভরসা হয়ে ছিলেন। এটা নিছক একটা ট্রফির গল্প নয়, এটা শুধুই একটা জড়িয়ে ধরা নয় – এটা একটা ভরসার প্রতিদান দেওয়ার গল্প। শাস্ত্রীরা থাকেন বলেই বিরাট কোহলিরা কিংবদন্তি হয়ে গড়ে উঠতে পারেন।

Share via
Copy link