লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে (এলপিএল) অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের চার ক্রিকেটার, যেখানে দুইজন নিয়মিত একাদশে জায়গা পেয়েছেন। খেলার সুযোগ পাওয়া সাকিব আল হাসান আর তাওহীদ হৃদয় দুইজনেই ভরসার প্রতিদান দিয়েছেন; টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সেরা রান সংগ্রাহক হৃদয়, অন্যদিকে, যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার।
লাল-সবুজের দুই প্রতিনিধিদের মাঝেও হয়েছে জমজমাট লড়াই। জাফনা কিংস আর গল টাইটান্সের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন টাইগার তারকারা, আর সেখানে একে অপরকে পরাস্ত করার চেষ্টা করে গিয়েছেন তাঁরা।
মূলত জাফনা কিংসের হয়ে ব্যাটিংয়ে আসার পরেই তাওহীদ হৃদয়কে মোকাবিলা করতে হয় সাকিব আল হাসানকে। জাতীয় দলের অভিজ্ঞ সতীর্থকে দারুণভাবে সামলেছেন হৃদয়, সাকিব নিজেও ছাড় দেননি জুনিয়রকে।
শুরুতে সাকিবের বল পেয়েই জ্বলে উঠেছিলেন তাওহীদ হৃদয়। প্রথম বলে হুইপ শটে দুর্দান্ত এক ছয় হাঁকিয়ে সবাইকে বিস্মিত করেন তিনি। পরে বলে ব্যাকফুট পাঞ্চে কভার অঞ্চল দিয়ে চার। সবমিলিয়ে প্রথম তিন বলে করেছিলেন ১১ রান। কিন্তু ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগেনি অভিজ্ঞ সাকিবের; সুনিপুণ বোলিংয়ে হৃদয়ের রানের গতি থামিয়ে দেন।
বলের ফ্লাইট কমিয়ে বাড়িয়ে, কখনো আবার আর্মার দিয়ে তাওহীদ হৃদয়কে পরীক্ষা করেছেন বাংলাদেশ দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। এছাড়া স্পিড ভেরিয়েশনও ব্যবহার করেছেন তিনি। অফস্টাম্প ঘেঁষা বলে দুর্বলতা আছে হৃদয়ের, সেটা প্রয়োগ করতেও ভুল হয়নি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের।
সাকিব আল হাসানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সাবধানী হতে বাধ্য হন তাওহীদ হৃদয়। পরের ৮ বলে করতে পেরেছেন মাত্র সাত রান। তার মধ্যে আবার ইনসাইড এজে চার হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে, আরেকটু হলে হয়তো বোল্ডও হতে পারতেন এই তরুণ।
স্পিনারদের বিপক্ষে বরাবরই শক্তিশালী তাওহীদ হৃদয়। এদিনও তাব্রিজ শামসি আর আকিলা ধনাঞ্জয়াকে খুব সহজেই বাউন্ডারি ছাড়া করেছেন , সাকিবও শুরুতে সুবিধা করতে পারেননি, তবে হৃদয় ঠিকই পরের দিকে সংগ্রাম করেছেন তাঁর বলে!
১১ বলে ১৮ রান, আরো স্পষ্ট করে বললে সাকিবের শেষ আট বলে সাত রান – দারুণ ফর্মে থাকা তাওহীদ হৃদয় যে সাকিবের বিপক্ষে নিজেই সেরা ছন্দে ছিলেন না সেটা বোঝাই যায়। তবে দেশীয় কোন তরুণ ব্যাটসম্যানকে কোন পর্যায়েই বল করতে এর আগে এতটা মাথা খাটাতে হয়নি সাকিবকে।
তাই তো সাকিব-হৃদয়ের এই লড়াইয়ে এগিয়ে রাখা যাবে না কাউকেই, দুজনে নিজেদের জায়গা থেকে সেরাটা দিয়েছেন। সমানে সমানে শেষ হওয়া এই দ্বৈরথে জয়টা অবশ্য বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাই পেয়েছে, কেননা সুদূর লঙ্কার মাটিতে দেশের দুই সুপারস্টারের এমন পারফরম্যান্স নিশ্চিতভাবেই তাদের জয়ের আনন্দে ভাসিয়েছে।