গিল আছেন, ভরসা আছে

গিলের ব্যাট কথা বলছে, শাসন করছে বোলারদের। পিচে নামলেই যেন তার ব্যাটে ছন্দ জাগে, প্রতিটি স্ট্রোক যেন ব্যাটিং সৌন্দর্যের একেকটি শিল্পকর্ম।

রোদ-ঝড়ের দোলাচলেও দিগভ্রান্ত নাবিক তিনি ছিলেন না কখনও। তবে, এবার সেই নাবিক পেয়েছে নির্ভরতার বাতিঘর — নাবিকের নাম শুভমান গিল। বাতিঘরের নাম, তাঁর অভাবনীয় ফর্ম। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ভারতের জন্য স্বস্তির বার্তা হয়ে এলেন তিনি। ভারতের ওপেনিং পজিশনে শুভমান গিল থাকলে, আর পথ হারানোর সুযোগ নেই।

টানা তিনটা বড় ইনিংস। দুটি হাফ সেঞ্চুরির পর একটা সেঞ্চুরি তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বোলারদের ঘুম কেড়ে নিলেন আরও প্রতাপশালী হয়ে! গিলের ব্যাট কথা বলছে, শাসন করছে বোলারদের। পিচে নামলেই যেন তার ব্যাটে ছন্দ জাগে, প্রতিটি স্ট্রোক যেন ব্যাটিং সৌন্দর্যের একেকটি শিল্পকর্ম। তার এই ধারাবাহিকতা ভারতীয় শিবিরকে দিল বিশাল স্বস্তি। ওপেনিং নিয়ে আর কোনো দোলাচল থাকল না। তাইতো তরুণ প্রতিভা যশস্বী জয়সওয়ালকে আপাতত বাইরে বসতে হল।

বাস্তবতা হল, ভারতের ওপেনিংয়ে কোনো দোলাচল ছিল না, বরং স্থিরতা ছিল শুভমান গিল নামক এক অনন্য প্রতিভায়। গিলের ধারাবাহিকতা এতটাই দুর্দান্ত যে তার জন্য একাদশে জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে লোকেশ রাহুলের মতো ব্যাটসম্যানেরও। যদি সুযোগ মেলে, তবে সেটি ওপেনিংয়ে নয়— বরং মিডল অর্ডারে, পাঁচ নম্বরে।

ক্রিকেট মাঠের ব্যাকরণ বলে, বড় টুর্নামেন্টের আগে একটি সেট কম্বিনেশন দরকার। শুভমান গিল সেই সমীকরণ মেলালেন। তিনি শুধু রান করেন না, দলের ভিত গড়ে দেন, বড় ইনিংস খেলেন, প্রতিপক্ষের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরান। তার ব্যাটিংয়ে ধীরস্থিরতা, শট নির্বাচনে প্রজ্ঞা আর ম্যাচ পড়ার ক্ষমতা— সব মিলিয়ে ভারত পেয়েছে এক পরিপূর্ণ ওপেনার।

র‌্যাংকিংও তাই প্রমাণ করে। ওয়ানডে ব্যাটারদের র‌্যাংকিংয়ে আছেন দুই নম্বরে। গিল নিজেও জানেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আসছে। আর ভারতের চোখ সেই ট্রফির দিকে। ডান হাতি এই ব্যাট যদি এভাবে হাসতে থাকে, তাহলে প্রতিপক্ষের বোলারদের জন্য অপেক্ষা করছে এক দু:স্বপ্ন— যে দু:স্বপ্নের নাম শুভমান গিল!

Share via
Copy link