পেপ, আপনি পাগলামিই করে যান!

পেপ গার্দিওলা, নেভার স্টপ দিস ক্রেজিনেস, ম্যান! ফুটবল বদলে যাবে। বদলে যাবে টুর্নামেন্টগুলোও। কিন্তু আপনার ভেতরের ‘পেপ গার্দিওলা’ সত্ত্বাটি যেন কখনোই না বদলায়!

পেপ গার্দিওলার বিশেষত্ব এটা নয় যে তিনি কোচ হিসেবে অনেক বেশি সাক্সেসফুল। বরং তার বিশেষত্ব এখানেই যে কোচ হিসেবে তার অভিষেক হওয়ার পর ফুটবলকে ট্যাক্টিকালি তার চেয়ে বেশি প্রভাবিত অন্য কেউ করতে পারেন নি।

আমি এটা বলতে চাচ্ছি না যে তার জেতা ট্রফিগুলো ইউজলেস, একেবারেই মিথ্যা কথা হবে সেটা বললে। আমার কথার মিনিং হলো, তিনি যাই জিতেছেন তার জীবনে, সব এসেছে তার নিজের স্টাইলে। তিনি প্রতিপক্ষকে নিজের চিন্তাভাবনা দিয়ে প্রভাবিত করেছেন, টপ টু বটম।

সফল কোচদের তালিকা দুই রকম। এক দলের ম্যানেজিং ক্যারিয়ার ট্রফির দিক থেকে ভারী না হলেও তারা ফুটবলের ফিলোসফার। তারা বিভিন্ন নতুন ট্যাক্টিক্স, প্লেয়িং স্টাইল, ফর্মেশন বা অ্যাপ্রোচ ডেভেলপ করেন৷ কিন্তু ট্রফি জেতা হয় না অত বেশি। এজন্য স্ট্যাটসের চোখে তারা সফল নন।

আরেক দলের ট্রফির পাল্লা থাকে ভারী। কিন্তু তাদের নিজস্ব ফিলোসোফি থাকে না। তারা সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী যখন যে রকম অ্যাপ্রোচ নেয়া দরকার তাই করেন। কিন্তু তারা নতুন কিছু নিয়ে আসার সুযোগ পান না।

পেপ গার্দিওলা এক্সট্রা অর্ডিনারি কোচ। তিনি দুই দিক থেকেই সফল। পোজেশনাল ফুটবলে বিভিন্ন দশকের ট্যাকটিক্স হতে ছোট ছোট টুকরো কুড়িয়ে এনে তিনি গড়ে তুলেছেন তার নিজস্ব সিস্টেম।

ইউ ক্যান হেইট ইট, বাট ইউ ক্যান্ট ইগনোর দ্য ইউটিলাইজেশান। পোজেশনাল ফুটবলকে মাত করা কাউন্টার বা গগেন প্রেসিং অরিয়েন্টেড অ্যাপ্রোচ নিতে গেলেও আপনাকে পোজেশনাল ফুটবল থেকে কিছু না কিছু ধার করতেই হবে।

পেপ একজন সার্ভাইভার। তিনি তার ফিলোসোফি, তার স্টাইল প্রতিনিয়ত খাপ খাইয়ে নিয়েছেন পরিবর্তনশীল ফুটবল এনভায়রনমেন্টের সাথে। কিন্তু কোর আইডিয়া থেকে কখনোই সরে যাননি।

ইউ ক্যান কিল এভ্রিওয়ান বাট ইউ ক্যান নেভার কিল এ সলিড আইডিয়া। বার্সেলোনার পেপ এখন অতীত। বায়ার্ন মিউনিখের পেপও মুছে গেছেন ৷ কিন্তু ম্যানচেস্টার সিটির পেপ এখন দোর্দণ্ড প্রতাপে দাঁড়িয়ে আছেন তার আইডিয়োলজি নিয়ে ৷

পেপ গার্দিওলা সাইডলাইনে দাঁড়াবেন। উল্টোপাল্টা নিত্য নতুন ট্যাকটিক্স অ্যাপ্লাই করবেন। কোনো একদিন প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেবেন, আবার হঠাৎ দুই একটা খারাপ দিন তাকে দুমড়েমুচড়ে মাটিতে এনে ফেলবে৷ কিন্তু তিনি থামবেন না।

আবার উঠে দাঁড়াবেন। তিনি খুঁজে বের করবেন সেই দুর্বলতাগুলো, এরপর ব্লু-প্রিন্ট হবে নতুন। সকল বাঁধা অতিক্রম করে সিজন শেষে বারবার ট্রফি উঁচিয়ে ধরা চলতেই থাকবে। মার্ক ফিফটি কাজ না করলে মার্ক ফিফটি ওয়ান অবশ্যই করবে, ওন্ট ইট?

সবাই বলে যে পাগলামিটা কমালে পেপ এর ট্রফির পাল্লা আরো ভারী থাকত। তৃতীয় ইউসিএল এর জায়গায় হয়তো আজ চতুর্থ বা পঞ্চম ইউসিএল জিততে পারতেন।

হয়তো পারতেন, হয়তো পারতেন না। কিন্তু পাগলামিটা করেন বলেই তিনি আজকের জোসেফ পেপ গার্দিওলা। ওয়ান অব এ কাইন্ড। দ্য সুপিরিয়র ওয়ান। পাগলামি না থাকলে আজকের দিনের পোজেশনাল ফুটবলের ঝান্ডাধারী ম্যানেজাররা কাকে আইডলাইজ করতেন বলুন তো? অন্য কাওকে। কিন্তু তিনি তো আর পেপ গার্দিওলা হতেন না।

পেপ গার্দিওলা, নেভার স্টপ দিস ক্রেজিনেস, ম্যান! ফুটবল বদলে যাবে। বদলে যাবে টুর্নামেন্টগুলোও। কিন্তু আপনার ভেতরের ‘পেপ গার্দিওলা’ সত্ত্বাটি যেন কখনোই না বদলায়!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...