ক্লাসেন কেন অবসর নিলেন!

কোন কিছু উপভোগ না করলে, তা ছেড়ে দেওয়াই উত্তম। অতএব উত্তম পথই বেছে নিয়েছেন হেনরিখ ক্লাসেন। 

ফর্মের তুঙ্গে ছিলেন এনরিখ ক্লাসেন। বয়সটা ছিল মাত্র ৩৩ বছর। তবুও তিনি অবসর নিয়ে নেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। এরপরই মূলত কারণ জানার জন্যে রীতিমত উৎসুক হয়ে পড়েন সকলে। কি এমন ঘটল যে তিনি অবসর গ্রহণ করলেন? অবশেষে ক্লাসেন নিজেই পরিষ্কার করেছেন তার সিদ্ধান্তের কারণ।

শেষ ছয় ওয়ানডে ম্যাচের পাঁচটাতেই ক্লাসেনের ব্যাটে ছিল ফিফটি। তাছাড়া ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও তার ব্যাটটা চলছিল বেশ। তবুও হুট করে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। প্রথমে অবশ্য বলেছিলেন পরিবারকে বাড়তি সময় দেওয়ার জন্যেই এমন পদক্ষেপ গ্রহণ।

পরবর্তীতে সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা করেছেন কেউ কেউ। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হয় তাকে। সেখান থেকেই অভিমান, তার পর অবসর। এমন একটা কারণ দাঁড় করিয়েছেন অনেকে। কিন্তু বিষয়টি মোটেও তেমন নয়।

মূলত প্রোটিয়াদের হয়ে মাঠে নামা উপভোগ করছিলেন না হেনরিখ ক্লাসেন। দল জিতুক কিংবা হারুক, তার ব্যাটে রান আসুক কিংবা না আসুক- কোন কিছুই আর ক্লাসেনের ভাল লাগছিল না। ঠিক সে কারণেই তিনি অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলেন। এ বিষয়ে প্রোটিয়াদের সদ্য সাবেক কোচ রব ওয়াল্টারের সাথে দীর্ঘ আলাপ করেন।

ওয়াল্টার তাকে ২০২৭ বিশ্বকাপ অবধি অবসরের সিদ্ধান্ত না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এমনকি তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ক্লাসেনকে ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ করে দেওয়া হবে। সেই রব ওয়াল্টার ছেড়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সাদা বলের দায়িত্ব।

আর এতে করে ক্লাসেনের সুবিধা হয়েছে তার সিদ্ধান্ত নিতে। তাছাড়া ক্লাসেনের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ডের সম্পর্ক খানিকটা তেঁতো হয়ে উঠেছিল সাম্প্রতিক সময়ে। ক্লাসেনের মানসিক দিকটা যেন বুঝে উঠতে পারেননি বোর্ড কর্তারা। এ কারণেই খানিকটা নাখোশ ছিলেন তার উপর।

এসব কিছু মিলিয়ে ক্লাসেন অবসরের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এমনকি রব ওয়াল্টারের বিদায়ের পরই তিনি জাতীয় দলের হয়ে আর মাঠে নামবেন না বলে জানিয়ে দেন। যদিও এক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার নব নিযুক্ত তিন ফরম্যাটের কোচ শুকরি কনরাডের সাথে ক্লাসেনের বাজে সম্পর্কের একটা গুঞ্জন চাওড় হয়েছে। তবে সে বিষয়টিও ক্লাসেন পরিষ্কার করেছেন। কনরাড কোচ হওয়ার আগেই ক্লাসেন নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন।

পরবর্তীতে স্রেফ নিজের নেওয়া পদক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। এমন এক হার্ডহিটার ব্যাটারকে হারানো প্রোটিয়া ক্রিকেটের জন্যে বিশাল বড় ক্ষতি বটে। দলটার শিরোপার স্বপ্নকে খানিকটা ধাক্কা দিয়েছেও। তবুও কোন কিছু উপভোগ না করলে, তা ছেড়ে দেওয়াই উত্তম। অতএব উত্তম পথই বেছে নিয়েছেন হেনরিখ ক্লাসেন।

Share via
Copy link