সেই ২০০৫ সালে অভিষেক হয়েছিল মুশফিকুর রহিমের। দেখতে দেখতে প্রায় দুই দশক হতে চলল মুশফিকের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। একটানা খেলে গেছেন তিনি। দীর্ঘ এই পথচলায় প্রায় প্রতিটা টুর্নামেন্টেই তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। প্রতিনিধিত্ব করেছেন বাংলাদেশের।
অভিষেক থেকে এখন অবধি প্রতিটা এশিয়া কাপের আসরেই তিনি খেলেছেন। ওয়ানডে ফরম্যাটের ষষ্ঠ এশিয়া কাপের দলেও জায়গা করে নিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। আগের খেলার পাঁচ আসরের শুরুর দিকে বেশ সাদামাটা ছিলেন তিনি। তবে সময় যত গড়িয়েছে, অভিজ্ঞতার পাশাপাশি উজ্জ্বল হয়েছে মুশফিকের পারফরমেন্স।
২০০৮ সালে প্রথম এশিয়া কাপ খেলেছিলেন মুশফিক। সেই আসরে তার ব্যাট থেকে এসেছিল ১০৫ রান। ৫ ম্যাচে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। ২১ গড়ে এই রান করেছিলেন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটার। উইকেটের পেছনে নিজের কাজটা ঠিকঠাক করে, সতীর্থদের পাইয়ে দিয়েছিলেন ২টি উইকেট।
শুরুর আসরটা ঠিকঠাক খেললেও ২০১০ সালে একেবারেই মলিন ছিলেন মুশফিক। মোটে ৩৭ রান করেছিলেন তিনি, ৩ ম্যাচে। যার মধ্যে ৩০ রান তিনি করেছিলেন ভারতের বিপক্ষে। বাকি দুই ম্যাচে সবমিলিয়ে সাত রান এসেছিল তার ব্যাট থেকে। তবে এদফা উইকেটের পেছনে দক্ষতা বৃদ্ধি পায় মুশফিকের। চারটি উইকেট পেতে সহয়তা করেছিলেন সতীর্থদের।
২০১২ সালে যেবার বাংলাদেশ ফাইনালে প্রথমবার হারল, সেই আসরে নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন মুশফিক। ব্যাট হাতে মাত্র ৬০ রান করেন। সেই সাথে তার নামের পাশে ছিল ৫টি ডিসমিসাল। ২০১৪ এশিয়া কাপ থেকে মুশফিকের পারফরমেন্সের গ্রাফ উর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। ঠিক এর আশেপাশের সময় থেকেই তার নামের পাশে যুক্ত হয়েছিল ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ তকমা।
সেই আসরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন মুশফিকুর রহিম। ৪ ম্যাচে তার গড় ছিল ৬৫। কাটায় কাটায় ১০০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করেছিলেন মুশফিক। রান এসেছিল ১৯৫। একটি সেঞ্চুরি ও একটি হাফ সেঞ্চুরি এসেছিল তার ব্যাট থেকে। সেই আসরে উইকেটের পেছনের দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন মুশফিক।
পারফরমেন্সের সেই ধারা মুশফিক অব্যাহত রেখেছিলেন ২০১৮ এশিয়া কাপে। সেই আসরেও বাংলাদেশকে শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার আক্ষেপে পুড়তে হয়েছিল। তবে মুশফিক ছিলেন সমহীমায় উজ্জ্বল। সেই আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। ৫ ম্যাচে ৩০২ রান করেছিলেন মিডল অর্ডার এই ব্যাটার।
এক সেঞ্চুরি ও এক হাফ সেঞ্চুরির সেই টুর্নামেন্টে মুশফিকের গড় ছিল, ৬০.৪০। দলের মধ্যভাগের ভীতটা নিজ হাতে আগলে রেখেছিলেন ডান-হাতি এই ব্যাটার। পাঁজরের ইনজুরির কারণে গ্রুপ পর্বে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলতে পারেননি মুশফিক। তাহলে হয়ত তার পরিসংখ্যানটাআরও খানিকটা হৃষ্টপুষ্ট হতে পারত।
সেই আসরে উইকেটের পেছনে ৬টি ডিসমিসালে অবদান রেখেছিলেন মুশফিকুর রহিম। দস্তানা হাতেও যে খুব খারাপ করেছেন তা কিন্তু নয়। নিজের ষষ্ঠ এশিয়া কাপের ঠিক আগ মুহূর্তে বেশ ভাল ফর্মেই রয়েছেন মুশফিক। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের ধারা নিশ্চয়ই অব্যাহত রাখবেন তিনি।