সেই এক ভিডিওতেই আর্জেন্টিনা দলে ঠাই হয় মেসির

লিওনেল মেসির বার্সেলোনার হয়ে খেলার পিছনে গল্পটা জানেন না এমন কোন ফুটবলভক্তকে বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। যদিও তাঁকে দখলে নেয়ার অদৃশ্য লড়াইয়ে কিভাবে স্পেনকে টপকে গেলো আর্জেন্টিনা সেই গল্পে খানিকটা রহস্য রয়ে গিয়েছে। হ্যাঁ, তাঁর ব্যক্তিগত আগ্রহ আর্জেন্টিনাকে ঘিরেই ছিল কিন্তু সত্যি বলতে একটা ভিডিও ক্লিপ মূলত নাটকীয়ভাবে বদলে দিয়েছে পুরো ঘটনা।

আর্জেন্টিনার সাবেক ফুটবলার ও তৎকালীন টিম ম্যানেজম্যান্টের অংশ ক্লদিও ভিভাসকে দেখানোর জন্য মেসির পরিবার তাঁর খেলার কিছু ভিডিও সংগ্রহ করেছিল। সেসময় আবার স্পেন চেষ্টা করছিল কাগজ-কলমের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে তাঁকে নিজেদের জাতীয় দলে নেয়ার; তবে তিনি নিজেই আকাশী-নীল জার্সিতে খেলার আশায় ভিভাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

এই আর্জেন্টাইন গোলকিপার অবশ্য খুব একটা পাত্তা দেননি তখন, ফেলে রেখেছিলেন ফেডারেশনে। কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে স্পেনের কাছে আর্জেন্টিনার হারের পর স্প্যানিশ তারকা সেস ফ্যাব্রেগাস প্রতিপক্ষ কোচের কাছে এসে বলেন তোমরা হেরে গিয়েছো কারণ তোমাদের সেরা খেলোয়াড়কেই খেলাওনি।

মেসিকে ইঙ্গিত করেই এমন কথা বলেছিলেন ফ্যাব্রেগাস, নামটা আর ভুলেননি কোচ হুগো টোকাললি। টুর্নামেন্ট শেষে দেশে আসার পর একদিন হুট করেই পুরনো ভিডিওটেপ পেয়ে যান তিনি; সেটা দেখে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের তৎকালীন কোচ মার্সোলা বিয়েলসাকে জানান সঙ্গে সঙ্গেই।

বিয়েলসা ভিডিও একবার দেখার পর বলে উঠেন, ‘ভালোই কিন্তু ভিডিও এত গতিতে চালাচ্ছো কেন, স্বাভাবিকভাবে দেখাও।’ আসলে স্বাভাবিকভাবেই ভিডিও চলছিল তখন, মেসির ফুটবলীয় দক্ষতাই তাঁকে বাধ্য করেছিল এমনটা ভাবতে।

অবিশ্বাস্য ক্ষীপ্রতা আর গতির সঙ্গে ড্রিবলিং – এই কিংবদন্তি কোচ অবাক না হয়ে পারেননি। তারপর আর লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনায় সুযোগ পাওয়া নিয়ে কোন সংশয় ছিল না। সেবার সুযোগ পেয়ে ভিডিওর মতই দ্রুতগতিতে আলবি সেলেস্তাদের উপরের সারিতে নিয়ে এসেছেন তিনি; জিতিয়েছেন আরাধ্য সব ট্রফি – নিজেও অমর হয়ে রইলেন ফুটবল দুনিয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link