আইন কানুনের কড়াকড়ির ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়েই কাতারের জুড়ি মেলা কঠিন। আর বিশ্বকাপ যখন মাঠে গড়াচ্ছে এই দেশটিতে, তখন সেখানকার আরোপিত নিয়ম কানুনে পশ্চিমা বিশ্বের চোখ কপালে উঠতে বাধ্য।
মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অ্যালকোহল নিষেধাজ্ঞার মত ইস্যুতে ইউরোপীয় দেশগুলোর সমালোচনার মুখে পড়েছিল কাতার। বয়কটের ডাকও ছিল। সেসবের মধ্যেই অবশেষে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অব আর্থ’ মাঠে গড়াল। তবে, বিতর্ক যেন পিছুই ছাড়ছে না।
বিশেষ করে, পোশাক-আশাক নিয়েও আছে বিধি নিষেধ। আর বিশ্বকাপের মত বৈশ্বিক আসরেও সেই বিধি-বিধানে কোনো শিথিলতা আসেনি।
নারীদের পোশাকের ব্যাপারেও এখানে বাড়তি নীতিমালা আছে। কাতারের আইন অনুযায়ী, নারীদের খোলামেলা পোশাক পরা নিষিদ্ধ। জনসম্মুখে ভ্রমণের সময় কাঁধ এবং হাঁটু ঢেকে রাখার কথা জানানো হয়েছে নারী দর্শকদের। আবার খুব আটোসাটো পোশাকও পরা যাবে না। এই নিয়মের বাইরে নন ফুটবলারদের স্ত্রী কিংবা প্রেমিকারাও।
ইংল্যান্ড ফুটবল দলের বহরে খেলোয়াড়দের সঙ্গীরা আছেন। তাদেরকে মিনি স্কার্ট ও লো কাট টপস পরতে বারণ করা হয়েছে। ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড দ্য ডেইলি মেইল জানিয়েছে লুক শ, মার্কাস রাশফোর্ড ও জন স্টোন্সের সঙ্গীরা এই ব্যাপারে তাঁদের ব্যক্তিগত স্টাইলিশ কোনি জোন্সের পরামর্শ পেয়েছেন।
কাতারের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৫০ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে। পশ্চিমারা এমন আবহাওয়ায় অভ্যস্ত নন। তবে, আইনে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আরেক ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড দ্য সান জানিয়েছে, ২৪ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ডের সমপরিমাণ অর্থ জরিমানার মুখোমুখি হবেন, এমনকি জেল হাজতেও যেতে হতে পারে।
যদিও, এখানে আবার ফিফার নীতিমালাও বড় একটা ভূমিকা রাখছে। তাঁরা জানিয়েছে, সমর্থকদের পোশাক বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা আছে; তবে আয়োজক দেশের নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।
এমনিতে, কাতারে নারীদের আবায়া নামক বোরকা জাতীয় পোশাক পরার নির্দেশনা আছে। যদিও, বাইরে থেকে আসাদের ক্ষেত্রে সেই বিধান নেই। তবে, তাঁদের পোশাকে জন-পরিসরে সংযত রাখতে হবে। তবে, হোটেলের নিজস্ব বিচ এবং সুইমিং পুলে সাঁতার-পোশাক পরার অনুমতি আছে।
পোশাক কেবল নয়, খাবার দাবারের ক্ষেত্রেও বিধি নিষেধ আছে। কাতারে শূকরের মাংস নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে শাস্তি হতে পারে, ফলে রাস্তায় বা স্টেডিয়ামে চাইলেই বিয়ার পান করা যাবে না। সব জায়গায় মদ্যপান আইন সম্মত। কেউ মদ্যপান করতে চাইলে যেতে হবে নির্ধারিত এলাকায়।
শুধু পোশাক কেন, শূকরের মাংস, পর্ণ সামগ্রী কিংবা সেক্স টয় নিয়ে কাতারে ঢোকার চেষ্টা করলেও হবে কঠোর শাস্তি। মদ্যপান করতে চাইলে যেতে হবে নির্দিষ্ট স্থানে। এর বাইরে রাস্তায় বা স্টেডিয়ামে মদ্যপান করলে পেতে হবে শাস্তি।
এবার সব মিলিয়ে তাই, ফুটবলার সঙ্গীরা জনসম্মুখে খুব কমই হয়ত আসবেন। বেশিরভাগ সময় তাঁরা হোটেল রুমে কাটালে অবাক হওয়ার কিছু নেই।