গুঞ্জনের পালে হাওয়া দিচ্ছেন সাকিব-মুশফিক

এশিয়ার কাপের আগের টি-টোয়েন্টি সিরিজগুলোতে দলে চার থেকে পাঁচ জন ওপেনার ছিল। তা নিয়ে বেশ সমালোচনাও সইতে হয়েছে বাংলাদেশের নির্বাচকদের। সে সমালোচনার কারণেই হোক কিংবা অন্য কোন পরিকল্পনা থেকে এবার মাত্র দুইজন ওপেনার নিয়ে এশিয়া কাপের মত একটা বড় মঞ্চে খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। একটু চিন্তার ভাঁজ পড়া স্বাভাবিক। ইনজুরি হলে কি হবে?

এই চিন্তার ভাঁজকে খানিকটা নিস্তার দিচ্ছে একটা গুঞ্জন। দলের প্রয়োজনে সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহিমের একটা উদ্বোধনী জুটি হওয়ার সম্ভাবনার কথা বিভিন্ন মহলেই শোনা যাচ্ছিল। আর আজ তো মিরপুরের সেন্ট্রাল উইকেটের দুই জন অভিজ্ঞ ব্যাটার একসাথে ব্যাট করেছেন একটা লম্বা সময় ধরে। তবে কি গুঞ্জন সত্যি হতে চলেছে?

হতেও পারে। প্রস্তুতির ছক খানিকটা সেদিকেই তো ইঙ্গিত দিচ্ছে। মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে অত্যন্ত পরিশ্রমি একজন ক্রিকেটার। সেটা নিয়ে দ্বিমত পোষন করবার মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের তাঁর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে বেশ সমালোচনার আসর বসে চায়ের কাপ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া এমনকি মূল ধারার গণমাধ্যমেও। আর অদ্ভুত সব কাণ্ড করে তিনি খানিকটা হয়েছে অপছন্দের পাত্র।

তবে সব কিছুর উত্তরটা তিনি দিতে চান মাঠের ক্রিকেটে। তাইতো অক্লান্ত পরিশ্রমটা তিনি করে যাচ্ছেন। তিনি চেষ্টা করছেন নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়ার। তাঁর খেলা সুইপ শটগুলো নিয়ে তো রীতিমত নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। তবে তিনি সে নিন্দার তোয়াক্কাই করেন না। বরং আরও বেশি মনোযোগ দিয়ে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি দাবি করেন সেটাই তাঁর প্রধান অস্ত্র। সেই অস্ত্রে আরেকটু শাণ দিয়েই নিচ্ছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।

অন্যদিকে, সাকিব আল হাসান দায়িত্ব পেয়েছেন টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কের। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তাঁকে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যাচ্ছে, হোম অব ক্রিকেটে। কখনো তিনি ফিটনেসের কাজ করছেন তো কখনো আবার ব্যাট হাতে নেমে পড়ছেন নেট অনুশীলনে। তাঁর ঝুলিতে থাকা সবরকম শটই বাজিয়ে দেখছেন সাকিব আল হাসান। আপার কাট কিংবা রিভার্স সুইপ সব কিছু নিজের আয়ত্ত্বে নিয়ে আসতে কোন রকমের কমতিই রাখছেন না এই অলরাউন্ডার।

সাকিব একটু ভিন্নভাবেই চিন্তা করেন। শেষ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তিনি ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক ছিলেন। তিনি তাঁর দলকে ফাইনাল অবধি নিয়ে গিয়েছিলেন। সে যাত্রায় তিনি দলে বহু পরিবর্তন এনেছেন। বিশেষ করে ওপেনিং জুটিতে। তিনি গদবাঁধা কোন নিয়মের মাঝে আটকে থাকতে চান না। তিনি বরং চমকে দিতে চান প্রতিপক্ষকে। সে চমকটা যে তিনি দেবেন না এশিয়া কাপের মঞ্চেও তা বলার উপায় নেই।

সে পরিকল্পনা থেকেই হয়ত মুশফিকের সাথে ওপেনিং জুটি বাঁধতে চলেছেন সাকিব। এই জুটি বাংলাদেশের বহু ম্যাচ জয়ের ভীতটা গড়ে দিয়েছে। এই জুটি আমাদের বহুবার আনন্দে ভাসিয়েছে। এই জুটিতে ভরসা আমাদের বহু দিনের। সাকিব হয়ত পরিকল্পনা করে ফেলেছেন। তাইতো দীর্ঘদিনের বন্ধুকে সাথে নিয়েই চলছে বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের অনুশীলন। আর তাঁদের ভুলের তদারকি করছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স। সকল দূর্বলতার জায়গাগুলোকে তিনি রুপান্তরিত করতে চাইছেন শক্তিতে।

এখন দেখবার পালা বাংলাদেশ আসলেও কোন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটায় মাঠের ক্রিকেটে। সত্যি বলতে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের আর হারাবার কিছু নেই। বর্তমান অবস্থান থেকে কেবল ঘুরে দাঁড়ানোই সম্ভব। পিঠটা তো দেয়ালেই ঠেকে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link