চূড়ান্ত বিজয়ের আগে একটু বেশিই উৎযাপন করাই কি কাল হয়ে দাড়ালো রংপুর রাইর্ডাসের জন্য! উড়তে থাকা রংপুরের টানা তিন ম্যাচে হার। কোয়ালিফায়ারের আগে আরও একবার ছন্দপতন উত্তরবঙ্গের দলটির?
গতবারও সবার আগে কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করে সেলিব্রেশনে ফেটে পড়েছিল নুরুল হাসান সোহানের দল। খেলোয়াড়রা সবাই উপহার হিসেবে পেয়েছিল লেটেস্ট মডেলের আইফোন। এবারও টানা আট ম্যাচ জিতে সেলিব্রেশন আর রোড-শো করতে গিয়ে জিততেই যেন ভুলে গেছে দলটি।
চার বলে চার ছক্কা হাঁকিয়ে ১৪ বল আগেই ৫ উইকেটের বিশাল জয় তুলে নিলেন চিটাগং কিংসের হায়দার আলী। সাথে সাথে উঠল প্রশ্ন, মনে পড়ল ওই খরগোশ আর কচ্ছপের গল্পটা। চূড়ান্ত বিজয় নিশ্চিত হওয়ার আগেই কেন ঘুমিয়ে গেল এই গল্পের খরগোশ, রংপুর রাইডার্স?
অথচ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) রীতিমতো অপরাজেয় হয়ে উঠেছিল দলটি। তবে সপ্তাহ খানেকের বিরতি পেয়ে কি একটু বেশিই উৎযাপনে মেতে উঠেছিল? সম্প্রতিই গ্লোবাল সুপার লিগ জিতে আসা দলটা নিজেদের জেলায় গিয়ে করে এসেছে রোড শো এবং কনসার্ট। এতেই হয়ত মনোযোগ বিঘ্ন হয়ে হারিয়েছে ছন্দ। পঁচা শামুকে পা কাটিয়েছে দুইবার। এবার টানা তিন হারের স্বাদ দিল বন্দর নগরীর দল চিটাগং কিংসও।
রংপুর শিবিরে তাই আরও একবার শঙ্কার মেঘ দেখা দিয়েছে। আবারও কি তীরে এসে তরী ডুবাতে যাচ্ছে দলটি। দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড খুশদিল শাহও ফিরে গেছেন পাকিস্তানে। দলের টপ আর মিডিল অর্ডারের ব্যাটাররাও নেই ছন্দে। এক ইফতেখার আহমেদই যেন টেনে নিচ্ছেন দলটাকে। ব্যাট বল হাতে নিজের সর্বস্বটা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
তবে আরেক পাকিস্তানি হায়দার আলীর ছিল যেন বড্ড তাড়াহুড়ো। রংপুরের এই আসরের সেরা বোলার আকিভ জাভেদকে টানা চার বলে চার ছক্কা হাঁকিয়ে ১৮ বলের ৪৮ রানের ঝড়ো ফিনিশিং টাচ দিয়ে গেলেন তিনি।
দুই ম্যাচ হারের পরে বেশ কড়াকড়ি করতে দেখে গিয়েছিল রংপুরের কোচ মিকি আর্থারকে। দলের সবাইকে নিয়ে শলাপরামর্শ করেছেন আগের দিন অনুশীলনে। নেটে দীর্ঘক্ষন ঘাম ঝড়িয়েছেন সোহান, সৌম্যরা। তবে কিছুতেই যে কিছু হচ্ছে না আর রংপুরের ফেভারে। বড্ড খাপছাড়া এখন কাগজে কলমে সবচেয়ে শক্তিশালী দল রংপুর রাইডার্স।
তবে কি আবারও তীরে এসে তরী ডুববে? গতবারের মতো এবারও কি রংপুর ভুলে গেল—শেষ বাঁশিটাই নির্ধারণ করে, কে বিজয়ী আর কে ব্যর্থ? বিজয়ের উল্লাস তখনই সত্যি হয়, যখন শেষ বাঁশি বাজে। রংপুর রাইডার্স, তোমরা কি সেটা বুঝতে পারছো?