ট্রাভিস হেড, রাঙা শতকে রাজকীয় প্রত্যাবর্তন

কে বলবে, প্রায় এক মাস ধরে বাঁ-হাতের চোটে মাঠের বাইরে ছিলেন ট্রাভিস হেড। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইনজুরি কাটিয়ে ফেরার দৃশ্যপটটা যেন অজি এ ব্যাটার তৈরি করলেন একদম রাজসিক ভাবে। আর তাঁর সেই ব্যাটিং তাণ্ডবলীলায় চূর্ণ বিচূর্ণ হয়েছে ট্রেন্ট বোল্ট, ম্যান হেনরিদের বোলিং আগ্রাসন।

ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপের আগের ম্যাচগুলো খেলতে পারেননি হেড। তবে আজ দলে ফিরেই বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান এই ওপেনার। তবে সেঞ্চুরি ছাড়াও এ দিন অনেক রেকর্ডেরই সঙ্গী হয়েছেন ট্রাভিস হেড। 

বাঁ-হাতি এ ব্যাটারের সামনে এ দিন পাত্তাই পায়নি কিউই বোলাররা। একদম উড়ন্ত শুরু যাকে বলে, সেই মানদণ্ডকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ট্রাভিস হেডের ব্যাটিং। শুরু থেকেই তাঁর আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে অজিরা যতটা এগিয়েছে, কিউই বোলারদের সকল রণকৌশলও সেই সাথে ভেস্তে গিয়েছে। 

ট্রাভিস হেডের এ তাণ্ডবলীলায় সহ-যাত্রী ছিলেন আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। হেডের সাথে পাল্লা দিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং করেছেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এ বাঁহাতি ব্যাটার। মাত্র ২৮ বলেই পৌঁছে যান ব্যক্তিগত অর্ধশতকে। 

ওদিকে হেড ফিফটি তুলে নিয়েছিলেন মাত্র ২৫ বলে। যা তাঁকে পৌঁছে দেয় এবারের বিশ্বকাপে দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ডে। যদিও এ রেকর্ডে তাঁর সাথে যৌথভাবে থাকছেন শ্রীলঙ্কার কুশল মেন্ডিস। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৫ বলে অর্ধশতক করেছিলেন লঙ্কান এ ব্যাটার।

হেড-ওয়ার্নারের ঝড়ো শুরুতে প্রথম ১০ ওভারেই স্কোরবোর্ডে অস্ট্রেলিয়া জমা করে  ১১৮ রান। প্রথম ১০ ওভারে রান তোলার দিক দিয়ে যা এখন যৌথভাবে তৃতীয় সর্বোচ্চ। আর ওয়ানডে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০০৩ বিশ্বকাপে কানাডার বিপক্ষে প্রথম ১০ ওভারে ১১৯ রান তুলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

মাত্র ২৫ বলে চলতি বিশ্বকাপের যৌথভাবে দ্রুততম ফিফটির পর ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে হেড খেলেন ৫৯ বল। ওয়ানডে ক্রিকেটে অজি ব্যাটারদের মধ্যে যা চতুর্থ দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড।

যদিও সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। ওয়ার্নারের পর ফিলিপসের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৬৭ বলে ১০৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। যেখানে ১০ টি চারের সঙ্গে ৭টি ছক্কা হাঁকান তিনি। আর তাঁর এমন ব্যাটিং তাণ্ডবেই উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ১৯ ওভারেই ১৭৫ রান যোগ করে অস্ট্রেলিয়া। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া যদিও ৫০ ওভার খেলতে পারেনি, তবে হেডের এমন ব্যাটিংয়েই ৩৮৮ রানের পাহাড়ে চড়ে অস্ট্রেলিয়া।  

বিশ্বকাপের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে জেরল্ড কোয়েটজের বাউন্সারে বাম হাতে চোট পেয়েছিল ট্রাভিস হেড। স্ক্যানে চিড় ধরা পড়লে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে যাওয়ার শঙ্কা জেগেছিল তাঁর। তবে অস্ট্রেলিয়ার টিম ম্যানেজমেন্ট আস্থা রেখেছিল এ ব্যাটারের উপরেই। তাই স্কোয়াডে ছিলেন এ ব্যাটার। প্রথম পাঁচ ম্যাচ খেলতে পারেননি। তবে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে এসে বিশ্বকাপ অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমেই প্রত্যাবর্তনটা রাঙালেন ট্রাভিস হেড।

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link