৯৬-এর ডি সিলভা কিংবা ২৩-এর হেড

সময়ের হিসেবে প্রায় ২৭ বছর। বিশ্বকাপ গননায় পাঁচটি বিশ্বকাপ। ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কার অরবিন্দ ডি সিলভা করেছিলেন যা, তা প্রায় তিন দশকের কোল ঘেষে করে দেখালেন ট্রাভিস হেড। অবশ্য হেড ছাপিয়ে গেলেন ডি সিলভাকেও।

১৯৯৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল শ্রীলঙ্কা। তাদের প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই বিশ্বকাপেও ২৪০ এর একটু বেশিই রান করেছিল অস্ট্রেলিয়া আগে ব্যাটিং করে। সহজেই জয় পাওয়ার আশায় গুড়ে বালি শ্রীলঙ্কার। শুরুতেই আউট হয়ে ফেরেন লংকান দুই ওপেনার।

এরপরই এক মহাকাব্যিক ইনিংস উপহার দেন অরবিন্দ ডি সিলভা। শতকে মোড়ানো এক শিরোপা উপহার দেন লংকা দ্বীপে। সেবার তিনি রান তাড়ায় করেছিলেন ১০৭ রান। তার সেই অনবদ্য ইনিংসে ভর করেই প্রথম শিরোপার স্বাদ পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা।

এরপর কেটে গেছে ২৭ খানা বছর আর পাঁচ বিশ্বকাপ। মাঝের সময়টায় বিশ্বকাপে রান তাড়ায় ছিল না কোন সেঞ্চুরি। সেই খরা কেটে গেল এক ট্রাভিস হেডের হাত ধরে। অথচ, হাত ভেঙে বিশ্বকাপ খেলাই অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল তার।

তবুও তার উপর ভরসা রেখেছিল অস্ট্রেলিয়ার টিম ম্যানেজমেন্ট। সেই ভরসার বর্ণিল এক প্রতীক হয়ে তিনি জিতে নিলেন শিরোপা। না অস্ট্রেলিয়ার প্রথম নয়, ষষ্ঠ। উপমহাদেশে আরও এক মহাকাব্যিক ইনিংসের জন্ম দিলেন হেড। শতকের ছোঁয়াতে তিনি এঁকে দিলেন শিরোপা জয়ের এক রঙিন চিত্র।

এই ম্যাচে ভারত আগে ব্যাট করে ২৪০ রানই সংগ্রহ করতে পারে। এরপর বোলিংয়ে নেমেই রোহিত বাহিণীর মৃদু আক্রমণে একটু ভয় ধরেছিল অজিদের মনে। তবে সে ভয়কে জয় করেই শেষ অবধি হেড লিখে গেছেন এক বিজয়ের গান।

৪৭ রানে তিন উইকেট হারিয়ে খানিক চাপেই পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই চাপকে আধিপত্য বিস্তার করতে দেননি হেড। একটা প্রান্ত আগলে রেখেছেন। তিন উইকেট পতনের পর একটু রানের গতি কমেছিল ঠিক। তবে সেঞ্চুরিটা তিনি করেছিলেন ৯৪ বলে।

এরপর ইনিংসের শেষটায় তার রান ছিল ১২০ বলে ১৩৭ রানে। ম্যাচটা শেষ করে আসতে না পারার একটা আক্ষেপ নিশ্চয়ই থাকার কথা। তবে, বাউন্ডারি লাইনে তাকে অভিবাদনে ভাসিয়েছে গোটা দল। কেননা তখন যে দলের জয়ের ফারাক কেবল দুই রানের।

একটা রুপকথার জন্ম দিয়েই ট্রাভিস ফিরেছেন সীমানা দড়ির বাইরে। দলের শিরোপা জয়ে অবদান রেখেছেন তিনি। সেটাই বরং সবচেয়ে প্রশান্তির। তবে ইতিহাসের বুকে জায়গা করে নেওয়াটাও নিশ্চয়ই প্রশান্তির। কেননা বিশ্বকাপ ফাইনালের ইতিহাসে রান তাড়ায় এখন যে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান তারই। ১৯ নম্ভেবর রাতটা তাই হেডের স্মৃতিতে কখনোই হবে না মলিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link