খ্রীষ্টপূর্ব ৪৯০ সালে ফেইডিপ্পিডেস নামের একজন বার্তাবাহক ম্যারাথন শহর থেকে দৌড়ে রাজধানী এথেন্সে এসেছিলেন এই সুসংবাদ দিতে যে গ্রীকরা ম্যারাথনের যুদ্ধে জয়লাভ করেছে। এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতেই ম্যারাথন দৌড়ের প্রচলন।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- ম্যারাথন শহর থেকে এথেন্সের দূরত্ব আনুমানিক ২৫ মাইল। তাহলে এই বাড়তি ১.২ মাইল কীভাবে সংযুক্ত হলো?
ফেইডিপ্পিডেস ঠিক যে পথ ধরে দৌড়ে এথেন্স এসেছিলেন, ১৮৯৬ সালে প্রথম অলিম্পিকে ম্যারাথন দৌড়বিদরা ঠিক একই পথ ধরে দৌড়ানোর পর দেখা গেলো তাদের পাড়ি দেওয়া পথের দূরত্ব ৪০,০০০ মিটার বা ২৪.৮৫ মাইল। পরের অলিম্পিকে এই দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ২৫ মাইল করা করা হয়।
এরপর থেকে ম্যারাথনের দূরত্ব ২৫ মাইলই ছিল। ১৯০৮ সালে লন্ডন অলিম্পিকেও ম্যারাথনের দৈর্ঘ্য ২৫ মাইল হিসেব করেই রুট নির্ধারণ করা হয় লন্ডনের হোয়াইট সিটি পর্যন্ত। কিন্তু, রাজপরিবারের ইচ্ছায় উইন্ডসর ক্যাসেলের একদম সামনে থেকে ম্যারাথন শুরু করতে হয়।
রাজপরিবারের শিশুরা স্টার্টিং পয়েন্ট থেকে এই দৌড় দেখতে চেয়েছিল। ক্যাসেলের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাওয়ার যেহেতু কোনো উপায় ছিল না, তাই অলিম্পিকের কর্মকর্তারাও এটি মেনে নেন। নির্ধারিত স্টার্টিং পয়েন্ট থেকে উইন্ডসর ক্যাসেলের দূরত্ব ১ মাইল। তাহলে এবার মোট দূরত্ব হলো ২৬ মাইল।
কিন্তু, তারপরও ০.২ মাইলের হিসাব বাকী থাকে। এটাও রাজ পরিবারের ইচ্ছাতেই হয়েছে। রাজপরিবারের সবাই যাতে ভিউইং বক্স থেকে বিজয়ীকে দেখতে পারে, এজন্য ফিনিশিং লাইনও ৩৮৫ ইয়ার্ড পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ম্যারাথনের দৈর্ঘ্য ২৫ মাইল থেকে বাড়িয়ে ২৬.২ মাইল করা হলো, এই অতিরিক্ত ১.২ মাইলকে বলা হয় ম্যারাথনের অভিশাপ। সেবারের অলিম্পিকে অনেক দৌড়বিদই দৌড় শেষ করার আগেই একাধিকবার মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন এমনকি অনেকের আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে তাদেরকে অন্যের সাহায্যে দাঁড়াতে হয়েছিল।
পরবর্তীতে ম্যারাথনের দৈর্ঘ্য ২৪-২৬ মাইলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যামেচার অ্যাথলেটিক ফেডারেশন’ যখন ম্যারাথনের জন্য আদর্শ দৈর্ঘ নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন তারা সেই লন্ডন অলিম্পকের দূরত্বটাকেই আমলে নেয়। অর্থাৎ, ২৬ মাইল ৩৮৫ ইয়ার্ড, নির্দিষ্ট করে বললে ২৬.২১৯ মাইল।