বিশ্বকাপের জন্য আদৌ প্রস্তুত ছিল তো যুক্তরাষ্ট্র!

অবকাঠামোগত দূর্বলতা রয়েছে। সেই সাথে আবহাওয়াজনিত সমস্যাও রয়েছে। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজক দেশ যুক্তরাষ্ট্র, সহ-আয়োজক হিসেবে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উইন্ডিজদের ক্রিকেট কাঠামো রয়েছে বেশ আগে থেকেই। কিন্তু সেদিক বিবেচনায় একেবারে নতুন যুক্তরাষ্ট্র।

দেশটিতে পুরোদস্তুর ক্রিকেট মাঠের সংখ্যা প্রায় নেই বললেই চলে। প্রায় প্রতিটা মাঠই প্রস্তুত করা হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে। এমনকি মাঠ প্রস্তুতের জন্য পর্যাপ্ত সময়ও প্রদান করা হয়নি। তড়িঘড়ি কোন রকমে খেলার উপযোগী করবার চেষ্টা করা হয়েছে আর কি।

২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল কাতারে। সেখানেও ফুটবল স্টেডিয়ামের ছিল বড্ড অভাব। তবুও বেশ সময় নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল খেলার মাঠ ও সংশ্লিষ্ঠ অবকাঠামো। সেই পথেই হাঁটতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে তাদের হিসেব-নিকেশ হয়েছে যেন খানিকটা গড়মিল।

সাধারণত ক্রিকেট মাঠের মাটিতে থিতু হতে লম্বা একটা সময় দেওয়া প্রয়োজন। ড্রেনেজ সিস্টেম দ্রুত হওয়ার ক্ষেত্রে যা অপরিহার্য। সেদিক বিবেচনায় বালুর আস্তরণের রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নব নির্মিত স্টেডিয়ামগুলোতে। সেই বালুর আস্তরণের উপর রয়েছে মাটির প্রলেপ। কিন্তু ওই যে মাটি থিতু হওয়ার সময় পেয়েছে অল্প।

তাইতো খেলোয়াড়দের জুতোর আঘাত ও হাওয়ায় ভেসে বল মাটিতে পড়া মাত্রই সৃষ্টি হচ্ছে গর্তের। মাটির প্রলেপ উঠে যাওয়া মাত্রই বালুর স্তর উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছে। তাতে করে আউটফিল্ড হয়ে পড়ছে বড্ড ধীর। টুর্নামেন্টের সময় যত গড়াবে ততই এই সমস্যা যেন বাড়তে থাকবে।

শুধুই কি তাই? যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি স্টেডিয়ামে বসানো হয়েছে ড্রপ ইন পিচ। অর্থাৎ উইকেট গুলো বাইরে থেকে প্রস্তুত করে তারপর গর্ত খুড়ে বসানো হয়েছে স্টেডিয়ামের মধ্যখানে। এখানেও সেই থিতু হওয়ার বিষয়টি রয়েছে। উইকেটগুলো ‘কম্প্যাক্ট’ নয়। কেননা উইকেটে ঘাস চাষ হয়নি। শেকড় ছড়ায়নি। মূলত ঘাসের শেকড় উইকেটের মাটিকে ‘কম্প্যাক্ট’ করতে সবচেয়ে বেশি সহয়তা করে।

ঠিক সেকারণেই বিরুপ আচরণ করছে উইকেটগুলো। কখনও বল হুটহাট নিচু হয়ে যাচ্ছে, কখনও আবার বাড়তি বাউন্স পেয়ে যাচ্ছে। এসবের পাশাপাশি টুর্নামেন্টকে প্রভাবিত করছে যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া। সময় অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে এখন গ্রীষ্মকাল। পৃথিবীর যেকোন প্রান্তেই গ্রীষ্মকালে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যায়। ভিন্নতা নেই যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও।

মোদ্দাকথা ক্রিকেটের এত বড় এক আয়োজন করবার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত ছিল কি-না সে প্রশ্ন তোলাই যায়। অবকাঠামোগত দূর্বলতা প্রকট আকারেই সামনে আসছে প্রতিনিয়ত। তাছাড়া আবহাওয়াও প্রশ্নবিদ্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্রের আয়োজনকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link