৪৭টি ওয়ানডে সেঞ্চুরি নিয়ে এবারের বিশ্বকাপ শুরু করছিলেন বিরাট কোহলি। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে খেললেন ১০৩ রানের অপরাজিত একটি ইনিংস। সেঞ্চুরির দিক দিয়ে শচীনকে ছোঁয়ার অপেক্ষা তখন থেকেই। সেই অপেক্ষা এবার ফুরলো। কলকাতার ইডেন গার্ডেনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের ৪৯তম সেঞ্চুরি।
ধর্মশালায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেন্ডুলকারকে ছুঁয়ে ফেলার খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন বিরাট। কিন্তু আউট হয়ে যান ৯৫ রানে। সেঞ্চুরির সুযোগ এর পরেও পেয়েছেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেঁটেছিলেন শতকের পথে। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আবার উপস্থিত ছিল স্বয়ং শচীন টেন্ডুলকারও।
শচীনের উপস্থিতিতে শচীনেরই গড়া ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ড স্পর্শ করবেন, আইকনিক একটা মুহূর্তের অপেক্ষাতেই ছিল পুরো বিশ্ব ক্রিকেট। কিন্তু আবারো বেড়েছিল অপেক্ষা। দিলশান মাদুশঙ্কার বলে থেমেছিলেন সেঞ্চুরি থেকে ১২ রান দূরে। তবে সেই আক্ষেপটা এবার মেটালেন প্রোটিয়াদের বিপক্ষে।
ইডেন গার্ডেনে নিজেদের ৮ম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। মজার ব্যাপার হলো, এই ইডেনের সাথেই জড়িয়ে আছে বিরাট কোহলির ‘প্রথম’ এর স্মৃতি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই মাঠেই তিনি পেয়েছিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি।
৪৯ সেঞ্চুরির কোহলির সেঞ্চুরি যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৪ বছর আগে, ২০০৯ সালে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সে ম্যাচে ১০৭ করেছিলেন ভারতীয় এ ব্যাটার। ১৪ বছর বাদে, সেই ইডেনের মাটিতেই ক্যারিয়ারের ৪৯তম শতক হাঁকালেন কোহলি।
এই ১৪ বছরে অনেক কিছু বদলে গিয়েছে। ওয়ানডে ক্রিকেটে কোহলির সেঞ্চুরি ১ থেকে পৌঁছে গিয়েছে ৪৯-এ। এই সময়ে এসে যখন শচীনের রেকর্ড ৪৯ সেঞ্চুরির স্পর্শ ছোঁয়ার হাতছানি তাঁর সামনে, তখন আবারো ক্রিকেটের নন্দনকাননে পা রেখেছিলেন কোহলি। দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ দিয়ে ইডেন প্রায় ৫ বছর পরে খেলতে নেমেছিলেন বিরাট।
ভারতের হয়ে সেঞ্চুরির শুরুটা যেখানে করেছিলেন, সেখানেই কি তবে ৪৯তম শতক তুলে নিবেন? এমন একটা সম্ভাব্যতা কিংবা স্বপ্নে যখন বিভোর পুরো ক্রিকেট বিশ্ব, তখন আর আক্ষেপ বাড়ালেন না কোহলি। ইডেন গার্ডেন হলো আরেকটি কীর্তির স্বাক্ষী। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম দেখেছিল শচীনের ৪৯তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। এ বার ওপার বাংলার ইডেন গার্ডেনে লেখা হলো বিরাটের ৪৯ তম সেঞ্চুরির গল্প।
আগের ম্যাচে লঙ্কানদের বিপক্ষে সেঞ্চুরিতে শচীনকে ছোঁয়া না হলেও একটি রেকর্ডে ঠিকই কিন্তু কোহলি তাঁকে ছাপিয়ে গিয়েছিলেন ভিন্ন এক কীর্তিতে। লঙ্কানদের বিপক্ষে ৮৮ রানের সেই ইনিংস দিয়ে ওয়ানডেতে এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ ৮ বার ১০০০ রানের মাইলফলক গড়েছেন কোহলি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এক পঞ্জিকাবর্ষে ১০০০ রান করার দিক দিয়ে শচীনের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা ৭।
ভারতের সর্বশেষ বিশ্বকাপ জিতেছিল ২০১১ সালে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ১০০০ রানের দেখা কোহলি পেয়েছিলেন সে বছরেই। কাকতালীয় ভাবে এক যুগ বাদে আবারো একটি বিশ্বকাপের বছরে হাজার রান পেরিয়েছেন কোহলি। তাহলে কি এবারও বিশ্বকাপ জিতবে ভারত? সেটা অবশ্য সময়ই বলে দিবে।