একটা ঝড় বয়ে গেলো হোবার্টের উপর দিয়ে। না, কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয় বরং হোবার্টের বেলেরিভ ওভাল স্টেডিয়ামে বোলারদের উপর তান্ডব চালিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শততম ম্যাচ খেলতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং আক্রমণভাগকে নিয়ে ছেলেখেলা করেছেন তিনি।
ওপেনিংয়ে নেমে খেলেছেন কেবল ৩৬টি ডেলিভারি, তাতেই নিজের নামের পাশে ৭০ রান জমা করেছেন এই ব্যাটার। প্রায় ২০০ স্ট্রাইক রেটে খেলা ইনিংসটিতে ছক্কা মেরেছেন স্রেফ একবার। চার হাঁকানোর দিকেই বেশি মনোযোগ ছিল, সবমিলিয়ে এদিন ১২টি বাউন্ডারি এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে।
আকিল হোসেনের প্রথম ওভারটা অবশ্য দেখে শুনে খেলতে হয়েছিল তাঁকে। ভাগ্য সুপ্রসন্ন না হলে সেই ওভারে আউট হলেও হতে পারতেন তিনি। তবে পরের ওভারেই সব বদলে যায় এক নিমিষে, রীতিমতো অতিমানব হয়ে উঠেন এই বাঁ-হাতি। জেসন হোল্ডারের এক ওভারে চার চারটি বাউন্ডারি মারেন তিনি।
এরপর আর তাঁকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি, যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন খুনে মেজাজে রান করেছেন। পাওয়ার প্লে যখন শেষ হয় তাঁর রান তখন ২০ বলে ৪৮। বলাই যায় অজিদের উড়ন্ত সূচনা এনে দেয়ার কাজটা দারুণভাবে করেছেন তিনি।
খানিক পরে ২২ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২৫তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন এই ওপেনার। শেষপর্যন্ত ৭০ রানের মাথায় আল জারি জোসেফের বলে আউট হন তিনি। শেষদিকে রান তোলার গতি কিছুটা কমে এসেছিল বটে, তবে দলকে বড় সংগ্রহের ভিত এর আগেই গড়ে দিয়েছিল তাঁর আগ্রাসী ব্যাটিং।
এই তারকা কল্যাণেই টিম ডেভিড, ম্যাথু ওয়েডরা পেয়েছেন ক্যামিও খেলার মঞ্চ। সেজন্যই নির্ধারিত বিশ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়া পেয়েছে ২১৩ রানের পাহাড়সম পুঁজি। যদিও সবকিছু ছাপিয়ে এখন টক অব দ্য টাউন ‘শততম ম্যাচে ওয়ার্নারের ঝড়ো ইনিংস’।
জাতীয় দলের জার্সিতে শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে পারাটাই অনেক ক্রিকেটারের জন্য আকাঙ্খিত মাইলফলক। সেই মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে নিজেকে নতুন করে চেনালেন ডেভিড ওয়ার্নার। হয়তো ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বিকেলে এসে আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন কতটা আধিপত্য দেখাতে পারেন তিনি, আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন কতটা বিধ্বংসী রূপ লুকিয়ে আছে তাঁর মাঝে।