অপেক্ষা আর মাত্র কিছুক্ষণের। ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের ডাকা বিশেষ এক সংবাদ সম্মেলনের ক্ষণ গণনা চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে তামিম অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেবেন? বিশ্বকাপে নতুন অধিনায়কের অধীনে খেলবে বাংলাদেশ ? নাকি কোমরের চোটে ত্যক্ত-বিরক্ত তামিম আরও বড় কোন ঘোষণা দিতে চলেছেন? নাকি স্রেফ বোর্ড ও কোচের অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্রেফ আত্মপক্ষ সমর্থন করবেন তিনি?
অনেক প্রশ্ন ডালা মেলছে বাংলাদেশের ক্রিকেট আকাশে। নিজ উদ্যোগে কথা বলবেন ওয়ানডে অধিনায়ক। বৃহস্পতিবার এমনিতে বাংলাদেশ দলের কোনো অনুশীলন নেই। মিডিয়ার সামনে কেউ সিরিজ নিয়ে কথাও বললেন না। এর মধ্যে মধ্যরাতে আসা তামিমের এই ডাক নতুন করে জল্পনার সৃষ্টি করছে।
ঘটনার সূত্রপাত তামিমের ইনজুরি থেকে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে গোটা সিরিজেই তামিম ইকবালকে নিয়ে একটা সংশয় ছিল। নিজেও ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করে নিয়েছিলেন যে, খেলার জন্য শতভাগ ফিট তিনি নন।
তারপরও অনেকটা জোর করেই মাঠে নামেন তিনি। অথচ, তাঁকে ম্যাচে না খেলার ব্যাপারে একটা অলিখিত নিষেধাজ্ঞা ছিল টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচের আগের দিন তামিম ইকবালের সাথে বসেছিলেন কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে ও মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। সেখানে তামিমের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাওয়া হয়। পুরো ফিট না হলে না খেলার ব্যাপারে পরামর্শও দেয়া হয়।
তবে, তামিম নাছোড়বান্দা। তিনি খেলবেনই। খেললেনও বটে। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ২১ বলে করেন ১৩ রান। যথারীতি কট বিহাইন্ডের ফাঁদে পড়েন আফগান পেসার ফজল হক ফারুকির বলে।
তাতে দলের ক্ষতিই করলেন। অথচ, তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন দলের জন্য ক্ষতিকর কিছু তিনি করতে চান না। তামিম না বুঝলেও ক্ষতিটা আগেই টের পেয়েছিলেন কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে। বিষয়টা তিনি বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের নজরে এনেছেন। কোচের কথা শুনে বোর্ড সভাপতি স্বাভাবিক ভাবেই বেশ ক্ষিপ্ত।
তিনি বলেই দিয়েছেন, ‘এটা তো আর পাড়া-মহল্লার কোনো ম্যাচ নয়, আন্তর্জাতিক একটা ম্যাচ। এমন সিরিজের আগের দিন অধিনায়ক বলছে সে ফিট না। কিন্তু খেলবে। খেলে নিজের ফিটনেস বোঝার চেষ্টা করবে।’
মানে, অবস্থাটা এমন যে বোর্ড এবং টিম ম্যানেজমেন্ট – দুই পক্ষই অবস্থান নিয়েছে তামিমের বিপক্ষে। এখন এই অবস্থায় দলের মধ্যেই অস্তিত্বের সংকটে আছেন তামিম। স্থানীয় একটি গণমাধ্যমকে বোর্ড প্রধান বলে দিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিটনেস ছাড়া খেলতে চাওয়াটা বিরাট অন্যায়। তার ওপর ফর্মহীনতাও আছে।
সব মিলিয়ে দলে হুমকির মুখে পড়েছে তামিমের ইমেজ। এখন স্রেফ এই ইস্যুতেই তামিম মুখ খুলবেন নাকি ক্যারিয়ার নিয়েই জানাবেন বড় কোনো সিদ্ধান্ত – এটা নিয়েই এখন অপেক্ষা?
তামিম বলেছিলেন দলের ক্ষতির কারণ হতে চান না তিনি, তাহলে কি সরেই দাঁড়াবেন ? এখন কেবল বেলা দেড়টা বাজার অপেক্ষা।