দুচোখে নৈব্যক্তিক দৃষ্টি, কেমন যেন অগোছাল লাগছে লিটল মাস্টারকে! মহাতারকা হলেও চেনা কাউকে দেখলে যে মানুষটা শিশুসুলভ সারল্যে নিজেই এগিয়ে আসেন, আজ তিনি যেন চাইছেন সবাইকে এড়িয়ে যেতে!
দৃশ্যপট: ৬ অক্টোবর ২০০০। কেনিয়ার নাইরোবি জিমখানা গ্রাউন্ড, ২০০০ সালের মিনি বিশ্বকাপ, থুড়ি আইসিসি নকআউট ট্রফি! সেদিনের নেট প্র্যাকটিস শেষ হয়েছে। তার পরদিনই প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত নামছে টুর্নামেন্টের হট ফেভারিট তথা তখনকার একদিনের ক্রিকেটের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্টিভ ওয়াহর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে!
প্রথম ম্যাচে টিম ইন্ডিয়া সহজ জয় পেয়েছে আয়োজক কেনিয়ার বিরুদ্ধে। ভারতের নতুন বাঁ-হাতি পেস তুর্কী জ়াহির খানের বলের গতি আর বাউন্স চমকে দিয়েছে মাঠের অনেককেই। কেনিয়ার করা শদুয়েক মত রান তাড়া করতে নেমে ৪৪ ওভারে ভারত পৌঁছেছে কাঙ্খিত লক্ষ্যে, সৌরভ-দ্রাবিড়ের জোড়া হাফ সেঞ্চুরির পাশাপাশি বিনোদ কাম্বলীও খেলে গিয়েছেন ৩৩ বলে ৩৯ রানের অপরাজিত ঝোড়ো ইনিংস। কিন্তু শুরুটা ভালো করলেও রান পান নি শুধু শচীন। সেই দুশ্চিন্তাতেই কি মন ভালো নেই তাঁর?
সম্ভবত তা নয়। ১৯৯৮ সাল এখন অতীত। তারপর আরব সমুদ্র দিয়ে অগণিত ঢেউ বয়ে গিয়েছে। ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে সন্দেহভাজন হয়েও ১৯৯৯ সালে ওয়াসিম আক্রমের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান ভারতে খেলতে এসে মোটামুটি সব বিভাগেই আয়োজক দেশকে পর্যুদস্ত করে টেস্ট সিরিজ ড্র রেখেছে, এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নিয়েছে। আহত ইঁদুরকে নিয়ে বেড়ালের খেলা করবার মত পরপর দুটি ত্রিদেশীয় একদিনের টুর্নামেন্টের ফাইনালে স্রেফ ভারতকে উড়িয়ে দিয়েছে।
গোটা ঘরোয়া মরসুমে একবার চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে চেন্নাইতে আকরাম-ইউনুস-সাকলাইনের বিরুদ্ধে শচীনের মহাকাব্যিক ১৩৬ আর দিল্লীতে কুম্বলের এক ইনিংসে ১০ উইকেটপ্রাপ্তি বাদে ভারতের পক্ষে একটাও তেমন বলার মত পারফরম্যান্স নেই সেই অর্থে! তাও পিঠ ও কোমরের চোটে নাজেহাল শচীন খেলেনও নি এক দিনের ম্যাচগুলিতে।
গোদের উপর বিষফোঁড়ার মত ক্রিকেটের আকাশে উদয় ঘটেছে শোয়েব আখতার নামক এক তরুণ পাক ফাস্ট বোলারের, যিনি প্রথম বলেই ইডেনে শচীনের স্টাম্প উপড়ে দিয়ে কোথাও টেন্ডুলকারের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়েই কিছুটা ফিসফাস তুলে দিয়েছেন ক্রিকেট সার্কিটের আনাচে কানাচে।
১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপেও, ফাইনালে ওঠার আগে অবধি শোয়েব নাচিয়ে ছাড়ছিলেন বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটারদের। সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরলেও গোটা বিশ্বকাপে শচীন ছিলেন প্রায় নিষ্প্রভ। পিতৃবিয়োগের পরই খেলতে নেমে কেনিয়ার বিরুদ্ধে অপরাজিত ১৪০ করলেও ভারতবাসীর সামগ্রিক প্রত্যাশাপূরন হয় নি তাঁর ব্যাটে সেবার।
ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। ১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়াকে দুমড়ে দেওয়া টেন্ডুলকারকেই কি না বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তিনি ফেরালেন শূন্য রানে। ভারতের শোচনীয় হারের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াল সেটা, এবং শেষমেশ বিশ্বকাপ থেকে বিদায়েরও!
তারপর থেকেই ম্যাকগ্রা থাকা মানেই যেন অবধারিত গ্রহণ লাগল একদিনের আন্তর্জাতিকে শচীনের সেঞ্চুরির রেকর্ডে। শ্রীলঙ্কায় ত্রিদেশীয় সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তেমন রান এল না।
অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে একটিমাত্র টেস্ট সেঞ্চুরি পেলেন। ইতিমধ্যে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনকে সরিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য ভারতের অধিনায়ক হয়েছেন শচীন। নেতৃত্বের চাপ তো ছিলই, সঙ্গে আজহারউদ্দীন-অজয় জাদেজা-নয়ন মোঙ্গিয়ার মত সিনিয়রদের অনুপস্থিতিতে তখন ভারতীয় দল তরুণ ও অনভিজ্ঞ ক্রিকেটারে ভরা।
অস্ট্রেলিয়াতে আম্পায়ারদের নেওয়া বেশ কিছু সিদ্ধান্তও দুর্ভাগ্যজনকভাবে ব্যাটার শচীনের বিপক্ষে গিয়েছিল সেবার। একদিনের সিরিজও ভারতের পারফরম্যান্স ছিল তথৈবচ। ম্যাকগ্রা ও তাঁর সতীর্থরা রীতিমত বড়াই করতে শুরু করেন এই বলে যে, ১৯৯৮ সালে ম্যাকগ্রার ভারতের বিরুদ্ধে একটিও ম্যাচে না খেলাটাই না কি শচীনকে পরের পর বড় রান করতে সাহায্য করেছিল!
মানে সরাসরি তাঁর শ্রেষ্ঠত্বকে চ্যালেঞ্জ করে বসা। কিন্তু ঘটনা এটাও যে অস্ট্রেলিয়ার মাটি ছাড়ার আগে শোয়েব-ওয়াকারের বিষাক্ত পেস সামলে একদিনের ম্যাচে বেশ কিছু রান করেছিলেন শচীন। কিন্তু সৌরভ বাদে অবশিষ্ট ভারতীয় দলের পারফরম্যান্স সেবার এত করুণ ছিল যে ম্যাকগ্রাদের বারফাট্টাই বন্ধ করা যায় নি!
বিরক্ত ও বিভ্রান্ত শচীন দেশে ফিরেই সহ অধিনায়ক সৌরভের নাম পরবর্তী অধিনায়ক হিসাবে সাজেস্ট করেন, এবং জানান দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজের পরেই বরাবরের মত ভারতের নেতৃত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন। সেই সিরিজও ভারত হারে ২-০ তে।
তারপর নতুন অধিনায়কের উজ্জীবিত নেতৃত্বে একদিনের সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানো, আজহারউদ্দীন-অজয় জাদেজার দলে ফেরা, শারজাহ ও ঢাকার ব্যর্থতা, গড়াপেটার কালো ছায়া, অভিযুক্ত সিনিয়র ক্রিকেটারদের আজীবনের নির্বাসন – এসব পেড়িয়ে একঝাঁক প্রতিশ্রুতিমান তরুণ ক্রিকেটার ও কাম্বলী-রবিন-কুম্বলে-প্রসাদ-আগরকরদের মত অভিজ্ঞদের সংমিশ্রনে গড়া নতুন দল নিয়ে খেলতে নেমেছে ভারত।
ম্যাকগ্রা যথারীতি বলেই যাচ্ছেন তাঁর না থাকাতেই উপমহাদেশের পাটা পীচ পেয়ে শচীন দুবছর আগে অত রান করেন। শেষটা মোটেও বোধগম্য না হওয়ার নয়। শোয়েবের মত কেউ কেউ আবার মুখে কিছুই না বললেও জ্বালা ধরানো হাসিতে বুঝিয়েই দিচ্ছেন সবকিছু! অথচ ঘটনা হল, ১৯৯৬ সালেও দেশের মাটিতে বলের চামড়া খুলে নেওয়ার মত করে গ্লেন ম্যাকগ্রাকে পিটিয়েছিলেন শচীন।
একবার বিশ্বকাপে, আর একাধিকবার টাইটান কাপের ম্যাচে। সেকথা নিয়ে কোনও আলোচনা নেই। সবার ভাবখানাই এমন, যে ভারতের পীচে ব্যাটিংটাকে আবার ব্যাটিং বলা যায় না কি, তাও আবার ৫০ ওভারের ম্যাচে?
এত অতীত বিশ্লেষণ করার কারন একটাই। পরদিন শচীন যে ইনিংসটা খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে, সেটা তাঁর ১০০ টি সেঞ্চুরির একটিও নয়, না তাঁর অগণিত অর্ধশতরানগুলির কোনওটা। ভারত সেই ম্যাচে লড়ে জিতলেও আক্ষরিক অর্থেই ধুঁয়া-ধার ব্যাটিং করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন ১৯ বছরের সদ্যযুবক যুবরাজ! কাজেই শচীনের করা ৩৭ বলে ৩৮ কি এমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সে প্রশ্ন ওঠা যথেষ্ট স্বাভাবিক!
মাত্র ৩৮? আজ্ঞে না, গোটা পরিস্থিতির ইমপ্যাক্ট বোঝাতে ওটা বোধহয় ১৩৮ কি ২৭৬! ঐ একটা ইনিংস ভারতের আহত চ্যাম্পিয়নের ক্যারিশমা বের করে আনে – ঐ একটা ছোট্ট ৩৮ রান বিপক্ষের সেরা বোলারকে একলহমায় পাড়াস্তরের রানের খনিতে রূপান্তরিত করে..ঐ একটা ক্ষুদ্র ইনিংস যুবরাজকে ম্যাচশেষে বলায় যে, ‘ম্যাকগ্রাকে এভাবে মারার কায়দা আর সাহস তো শচীন পাজির থেকেই শিখেছি!’
ভারত সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করেছিল। শচীনের সঙ্গেই ওপেনিংয়ে যান অধিনায়ক সৌরভ। ব্যাটিংএর শুরুতেই শচীন কেমন যেন ছটফট করছিলেন। ম্যাকগ্রার প্রথম বলই শর্টপিচড্, কিন্তু বাউন্স কম হওয়ায় শচীন পুল করতে গিয়ে হাতে চোট পান।
ফিজিও এসে শুশ্রূষা করাকালীন ম্যাকগ্রার মুখে ছিল ফিচেল হাসির রেশ! সেই হাসিটা আরও চওড়া হয় যখন এক ওভার পরেই সেই ম্যাকগ্রার বলেই শচীনের বেপরোয়া শট মিসহিট হয়ে থার্ডম্যান জেসন গিলেস্পির মাথার বেশ কিছুটা উপর দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে পড়ে।
আসল খেলা শুরু হয় তারপরেই। ম্যাকগ্রার পরের ওভারেই আবার শচীন স্টেপ আউট করে বেরোন, এবং ফুল লেংথের ডেলিভারিকে লংঅফের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে পাঠান। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এত অনবদ্য আর নিখুঁত টাইমিংয়ে প্রকৃত ফাস্ট বোলারের মাথার উপর দিয়ে তাকে মাঠের বাইরে ফেলা কোন ভারতীয়র শট বলতে শুধুমাত্র গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হারিস রউফের বলে কোহলীর সোজা ছক্কাটাই মনে আসছে।
যাই হোক, আলোচনায় ফেরত আসছি। তার পরের বলেও ম্যাকগ্রাকে স্ট্রেট লফটেড পাঞ্চে বাউন্ডারিতে পাঠান শচীন। ম্যাকগ্রা হতাশায় মাথা নাড়েন। ম্যাকগ্রার পরের ওভারেও পুল করে তাঁকে ডিপ মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছয় মারেন শচীন। বিশ্বসেরা ফাস্ট বোলারের লাইন লেংথের যা হাল করছিলেন তিনি সেদিন, তাতে প্রথম স্পেল (স্টিভ ওয়াহ তখন মোটামুটি ৬ ওভার মত রাখতেন ম্যাকগ্রার কোটা প্রথমদিকে) পুরো শেষ না করিয়েই অধিনায়ক স্টিভ তাঁকে সরিয়ে গিলেসপিকে নিয়ে আসেন।
যদিও স্বভাবসিদ্ধ স্লেজিং বা ডেলিভাার দেওয়ার ঠিক আগে থেমে গিয়ে মাঝ পিচ অবধি চলে যাওয়া, এগুলো ম্যাকগ্রা করেই যাচ্ছিলেন তখনও অবধি। যেটা আশ্চর্যের সেটা হল, সেদিন ব্যাটের পাশপাশি বোলারকে পাল্লা দিয়ে টুকটাক গালিগালাজ আর কটাক্ষ বেরোচ্ছিল শচীনের মুখ থেকেও। অন্যপ্রান্ত থেকে ব্রেট লি দুরন্তগতিতে বল করছিলেন। শচীন তাঁর বলেও পয়েন্ট অঞ্চল দিয়ে ছবির মত ড্রাইভ করেন।
পরে লি-কেও নিখুঁত স্ট্রেট ড্রাইভে বাউন্ডারির বাইরে পাঠান। নিশ্চিত সেদিন তাঁর ব্যাটে বড় রানের আশা ছিল, কিন্তু সেই ব্রেট লীর অফস্টাম্পের বাইরের সামান্য বেশী লাফানো ডেলিভারীতেই কড়া ড্রাইভ করতে গিয়ে প্রথম স্লিপে মার্টিনের হাতে ধরা পড়াতে শেষ হয় শচীনের ইনিংস!
এই ইনিংসের গুরুত্ব বিবেচনায় কটি পরিসংখ্যান উল্লেখ করলাম।
বিশ্বকাপ ১৯৯৯ থেকে এই ম্যাচ অবধি ভারত অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে খেলা ৬টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ম্যাকগ্রার বোলিং গড়: ১০-১-৩৪-৩, ১০-০-৫৫-২ (শচীন খেলেন নি), ১০-১-৩২-১, ১০-৪-৮-৪, ৫-১-১৩-১, ৯-৩-২২-১। ঐ ম্যাচে ম্যাকগ্রার বোলিং ফিগার ৯-০-৬১-০!
শচীন আউট হওয়াতে অস্ট্রেলিয় অধিনায়ক স্টিভ ওয়া আবার তাঁর স্ট্রাইক বোলারকে ফেরত আনেন ঠিকই, কিন্তু ততক্ষণে তেতে ওঠা যুবরাজ তাঁর বলে এমন কিছু আক্রমণাত্মক শট খেলতে থাকেন, যে সেদিন ম্যাকগ্রা তাঁর পুরো কোটা শেষ করতে পারেন নি!
এরপরে যে ম্যাকগ্রার ভূত চিরতরে উপড়ে ফেলা হয়েছিল সেটা বললে সত্যের অপলাপ হবে। তারপরেও ভারত হেরেছে ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে, বিপক্ষ সেই অস্ট্রেলিয়া। শচীন মাত্র ৪ রান করে উইকেট দিয়েছেন ম্যাকগ্রাকে। তার আগে ২০০১ সালে ভারতে এসে ম্যাকগ্রা উইকেটও তুলেছেন, পিটুনিও খেয়েছেন।
তুলনামূলকভাবে ২০০৪ সালের ভারত সফরে ম্যাকগ্রা সফল, চোটে বিপর্যস্ত শচীন খেলেনও নি দুটো টেস্ট। তারপরও মালয়েশিয়ায় আর দেশের মাটিতে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে (ততদিনে নকআউট নাম আর নেই) অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শচীন রান পান নি। ম্যাকগ্রা খেলেওছিলেন সেই ম্যাচগুলিতে।
কিন্তু যে লড়াইটা ম্যাকগ্রা প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে একতরফা নামিয়ে এনেছিলেন মাঝে, ঐ ৩৮ রানের চওড়া কলজের ইনিংসটা কোথাও না কোথাও আবার হিসাব ৫০-৫০ করে দিয়ে গিয়েছিল সেদিন। সৌরভের উজ্জীবিত নেতৃত্ব তো বটেই, কিন্তু এরপর থেকে ম্যাকগ্রার আতঙ্কে ভারত সেভাবে আর ভোগেনি (গ্রেগ-দ্রাবিড়ের যুগলবন্দী ঘটার আগে পর্যন্ত টুকটাক ব্যতিক্রম ছাড়া)।
আর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে পাল্টা লড়াইয়ের সূচনাও হয়েছিল এই ম্যাচ থেকেই। জাহিরের ইয়র্কারে স্টিভ ওয়ার বোল্ড হওয়াটা বোধহয় তারই দ্যোতক ছিল। কারন তারপরই ২০০১ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়াকে ভোগাতে নবজন্মই হয় হরভজন ও লক্ষ্মণের, সেটা কি অস্বীকার করার মত? স্বয়ং ম্যাকগ্রার কি বক্তব্য ছিল সেই ম্যাচের পর?
‘আমি বলছিলাম না কিছুই, কিন্তু দ্বিতীয় ছয়টি মারার পরে শচীনের ব্যাট ও মুখ চলছিল সমানতালে। লাইন অনুযায়ী বল করার চেষ্টা করলেও ও তা মেরে দিচ্ছিল। দিনটা আমার ছিল না..’ ফিচেল হাসিটা মিলিয়ে যাওয়াতেই প্রমাণ, সেদিন গুডলেংথ স্পটটা কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার গোটা ম্যাচেই খুঁজে পান নি!
কার কৃতিত্ব, তা বলার জন্য কোনও পুরস্কার নেই!