ব্রাজিলের সামনে এরপরে কি!

ব্রাজিল ৩৫ কি ৩৬ মিনিটে চারটা গোল পুরে দিয়েছে, সমর্থকদের আনন্দের অন্ত নেই। এই নিয়ে ব্রাজিল বিশ্বকাপে ৪ টি ম্যাচ খেললো, ক্যামেরুনের সাথে এক্সপেরিমেন্টাল খেলা এবং শেষ মুহূর্তের গোলে হার যদি সরিয়েও রাখি, তাহলে কি চোখে পড়ছে?

প্রথমত, কালকে ছিল ব্রাজিলের প্রথম নক আউট ম্যাচ, কোরিয়ারও। ভাগ্যক্রমে কালকে ব্রাজিল ম্যাচে থিতু হতে হতেই ১২ মিনিটের মধ্যে ২ গোল করে এগিয়ে যায়; যার ফলে কোরিয়ার সামনে ডিফেন্স করার কোনো রাস্তা ছিলোনা, কেননা হারলে বিদায়, জিততেই হবে, এবং অন্তত দু গোল পরিশোধ করে অতিরিক্ত সময়ে খেলা নিয়ে যেতে হলে অল আউট এটাক ছাড়া উপায় নেই। এভাবেই কোরিয়া বারবার ডিফেন্স উন্মুক্ত করে এটাক এ গেলো এবং প্রতি আক্রমণে গোল খেয়ে গেলো।

এবারে যদি প্রথম দুটি গ্রুপ লিগের খেলার দিকে নজর দিই, তাহলে দেখবো ব্রাজিল জিতলেও প্রথমার্ধে কোনো ম্যাচেই গোল করতে পারেনি; যার ফলে ম্যাচ প্রায় ৬০-৭০% সময় অতিক্রান্ত হবার পরেও ম্যাচ কিন্তু ৫০-৫০ ছিল। এর কারণ গ্রুপ লিগে কোনো ছোট দল ব্রাজিলের বিরুদ্ধে অল আউট এটাক খেলবে না, ড্রয়ের লক্ষ্যে ডিফেন্সিভ খেলবে। তাতে ব্রাজিল যে অনেক গোল করতে পেরেছে বা দারুণ অ্যাটাকের ঝড় তুলে দিয়েছিলো সেরকম নয়; অনেক হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ হয়েছিল। ম্যাচ শুরু হতে না হতেই ২ গোল খেয়ে কোরিয়া সেই সুযোগটা পায়নি।

পরবর্তী রাউন্ডে ক্রোয়েশিয়া; এবং ব্রাজিল যদি আরো এগোতে পারে তবে আগামী রাউন্ডের টিমগুলো কিন্তু ব্রাজিলের সঙ্গে শুরু থেকে অল আউট এটাক এ যাবে না, এবং প্রতি ম্যাচে ব্রাজিল ১০ মিনিটে ২ গোলও দেবে না। প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকলে সব প্রতিপক্ষ চেষ্টা করবে গোল না খেয়ে খেলাটাকে আরো টেনে নিয়ে যাওয়া ও সুযোগ পেলে প্রতি আক্রমণ থেকে গোল করে ম্যাচ জেতার; সেটা না হলে টাই ব্রেকার।

ব্রাজিল কোনোদিনই টাই ব্রেকার অবধি গিয়ে জিততে চাইবে না, কেননা সীমিত ওভারের ক্রিকেটে যেমন যত ওভার কমে, ততো দুই দলের মধ্যে স্কিলের ব্যবধান কমে আসে, তেমনি ফুটবলে টাইব্রেকারে দুই দলের সামগ্রিক স্কিলের পরীক্ষা হয়না, হয় গোলকিপারের স্কিল আর শুটারদের নার্ভের। আর এখানেই ধারে ভারে এগিয়ে থাকা ব্রাজিল এর সঙ্গে অন্য প্রতিপক্ষের ব্যবধান কমে যাবে।

কিন্তু গোছানো ডিফেন্স আর মিডফিল্ডওয়ালা শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্রাজিল জিততে পারবেই, এরকম প্রমান কিন্তু এখনো পাওয়া যায়নি।

তাই, নাচানাচি একটু কম করলেই মনে হয় ভালো। আমি একজন সিজনাল ফ্যান, আমি ফুটবলের টেকনিক্যাল দিক অত বুঝি না, ক্লাব ফুটবল পারতপক্ষে দেখিনা, চ্যাম্পিয়ন্স লীগের নক আউট স্টেজ ছাড়া। খেলা দেখে যেটুকু মনে হলো সেটাই বললাম।

বিশেষজ্ঞরা ভুল ধরিয়ে দিতেই পারেন। তবে ব্রাজিল যদি প্রয়োজন অনুযায়ী নিজেদের খেলা পরিবর্তন করে বিপক্ষকে মেপে নিতে পারে, তাহলে এস্টেরিস্কের রণহুঙ্কারকে সামান্য পরিবর্তন করে আমরা বলতেই পারি – ‘তিতের নামে’!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link