বাংলাদেশি প্লেয়ারদের গেম সেন্স নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন তোলা হয়, সেই সাথে চাপের মূহুর্তে দিশাহীন হয়ে পড়াও একটা পরিচিত রোগ। সিনিয়র হোক বা জুনিয়র, সবাই যেন একই ছায়াতলে। ভারত এ দলের বিপক্ষে যা আরও একবার সামনে এলো। জিসান আলম, আকবর আলী কিংবা ইয়াসির রাব্বিদের দৃষ্টিকটু ভুলগুলো বুঝিয়ে দিল, বাংলাদেশ কেন বড় মঞ্চে সাফল্য পায় না!
একে তো সেমিফাইনাল, তার উপর প্রতিপক্ষ ভারতের মতো শক্তিশালী দল। জিততে হলে কোনও সুযোগই হাতছাড়া করার উপায় নেই। তবে বাংলাদেশ একের পর এক সুযোগ হেলায় হারিয়েছে। এক জিতেশ শর্মাই জীবন পেয়েছেন তিন তিন বার। যদিও ভাগ্যটা সহায় হয়েছে, বিধায় এ যাত্রায় ম্যাচ জিতেছে।
এদিন পুরো দলটার উপরই অদৃশ্য চাপ ভর করেছিল ফিল্ডিংয়ে। এমনকি বাদ যাননি অধিনায়কও। যার প্রেশার সিচুয়েশনে সবচেয়ে ঠান্ডা থাকার কথা, দলকে চাঙা রাখার কথা, তিনিই ভুল করে বসলেন সবার আগে। ১৯তম ওভারে সেট ব্যাটার নেহাল ওয়াধেরার সহজ ক্যাচ দস্তানা সমেত হাতছাড়া করলেন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। তবে ওটা ঐ পর্যন্ত হলেই বোধহয় ভালো হতো।

আকবর সবচেয়ে বড় ভুল করলেন যখন এক বলে দরকার চার রান। হার্স দুবের মারা বলটা লং অন থেকে এক রানের বেশি আসার সুযোগ ছিল না। তবে দুই রান হলেও সুপার ওভারের জন্য আরও লাগত এক রান, এক অর্থে যা অসম্ভব। ব্যাটার তখন দুই রান নিতে যাবেন এটাই স্বাভাবিক ছিল। তবে আকবর বল থ্রো করলেন, স্টাম্পে তো লাগলই না বরং ভারত আদায় করল তিন রান।
একটু দুই বল আগে ফিরে যাওয়া যাক। দলের যখন তিন বলে আট রান দরকার, জিসান আলম লং অফে আসুতোশের ক্যাচ ফেলে দেন, সাথে উপহার দেন চারটি মহাগুরুত্বপূর্ণ রান। চোখে-মুখে কেবলই ছিল চাপের ছাপ।
ইয়াসির রাব্বির কমন সেন্স নিয়ে একটু বলা যাক। সুপার ওভার জিততে হলে দরকার স্রেফ একটা রান। এমন অবস্থায় যে কেউ চাইবে ম্যাচটাকে সিঙ্গেল নিয়ে জিতিয়ে দিতে। তবে রাব্বি ছক্কা হাঁকানোর জন্য উদ্যত হলেন, ফলাফল আউট হয়ে দলকে কিনারা থেকে ঠেলে ফেললেন খাদের মধ্যে।

এইসব ছোট ছোট গল্পগুলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের চিরচেনা ছবি। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভুল করা, জাতীয় পর্যায়ে এসে মিনিমাম গেম সেন্স না থাকাটা আমাদের ক্রিকেটে উত্তরাধিকারসূত্রে বয়ে চলছে। ফলাফল, বড় মঞ্চে গিয়ে কেবল হতাশা আর অপদস্ত হয়ে ফিরে আসার গল্প। এমন মানসিকতা নিয়ে বড় মঞ্চে সফলতা পাওয়া যায় না, এমন বোকামি করে কখনও বড় দল হওয়া যায় না।











