মালিকানা এবং নাম বদলানোর পর থেকে রীতিমতো উড়ছে দিল্লী ক্যাপিটালস। শিরোপা জিততে না পারলেও ২০২২ আইপিএল ব্যতীত প্রতিবারই ন্যূনতম শেষ চারে খেলেছে তাঁরা। তরুণ ক্রিকেটারদের দলে টানার সুনাম রয়েছে এই ফ্যাঞ্চাইজির। গত আসরের ব্যর্থতা ভুলতে এবারের নিলাম থেকে দারুণ সব তরুণ ক্রিকেটারকে দলে ভিড়িয়েছে দলটি।
শিরোপা স্বপ্নে বিভোর দলটি ধাক্কা খেয়েছে টুর্নামেন্ট শুরুর মাসদুয়েক আগে। তাঁদের নিয়মিত অধিনায়ক ঋষাভ পান্ত গাড়ি দুর্ঘটনায় ছিটকে গেছেন পুরো টুর্নামেন্টের জন্য। ফলে নতুন অধিনায়ক খুঁজতে হচ্ছে দিল্লি ম্যানেজমেন্টকে। আসুন দেখে নেয়া যাক কে হতে পারেন দিল্লির সম্ভাব্য নতুন অধিনায়ক।
- ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া)
২০২২ সালের মেগা নিলাম থেকে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে দলে টানে দিল্লী ক্যাপিটালস। সেবার ওয়ার্নারের সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ ছেড়ে দিল্লিতে নাম লেখানো আলোচনা ছড়িয়েছিল বেশ। হায়দ্রাবাদের হয়ে সম্ভাব্য সবকিছু জিতেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। আনকোরা এক দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আইপিএলের শিরোপা জিতিয়েছেন। আইপিএল ইতিহাসে বিদেশিদের মাঝে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক তিনি।
অভিজ্ঞতার ভাণ্ডারও পরিপূর্ণ। এখনো পর্যন্ত ১৬২ ম্যাচ খেলে তাঁর সংগ্রহ ৫৮৮১ রান। মজার ব্যাপার হলো ওয়ার্নারকে সবাই হায়দ্রাবাদের ঘরের ছেলে ভাবলেও এই তারকার আইপিএল ক্যারিয়ার শুরু কিন্তু দিল্লির হয়েই। তৎকালীন দিল্লী ডেয়ারডেভিলসের হয়ে ২০০৯-১৩ সাল পর্যন্ত খেলেন তিনি।
পান্তের ইনজুরির কারণে দিল্লির অধিনায়কত্ব পাবার দৌড়ে সবার চাইতে এগিয়ে আছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। তাছাড়া ক্যাপিটালসের কোচ রিকি পন্টিংয়ের সাথে তাঁর রসায়নও বেশ ভালো। তবে ওয়ার্নার দিল্লির অধিনায়কত্ব পেলে খানিকটা বিপাকে পড়বে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। বল টেম্পারিং বিতর্কে এই ক্রিকেটারকে ক্যাপ্টেন্সি ব্যান দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটি।
পৃথ্বী শ (ভারত)
২০১৮ সাল থেকেই দিল্লী ক্যাপিটালসের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনের দায়িত্ব পালন করছেন পৃথ্বী শ। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে রীতিমতো আলোড়ন তুলে আইপিএলের মঞ্চে আগমণ তাঁর। সাম্প্রতিক সময়েও দারুণ ফর্মে আছে শ। প্রথম ব্যাটার হিসেবে রঞ্জিতে ট্রিপল, বিজয় হাজারে ট্রফিতে ডাবল এবং সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে সেঞ্চুরি আছে তাঁর। আইপিএলেও তাঁর রেকর্ডটা মন্দ নয়, পাওয়ারপ্লেতে প্রতিপক্ষের বোলারদের উপর দিয়ে রীতিমতো ঝড় বইয়ে দিতে ওস্তাদ তিনি। ৬৩ ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ১৫৮৮ রান।
বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতাও আছে শ’র। ২০১৮ অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভারতের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। সেবার তাঁর নেতৃত্বেই চতুর্থবারের মতো ছোটদের বিশ্বকাপ জেতে ভারত। সবকিছু বিবেচনায় দিল্লির নতুন অধিনায়ক হতে পারেন শ। এছাড়া দিল্লী ম্যানেজমেন্টের মাঝে তরুণদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেবার প্রবণতা রয়েছে। ২০২১ সালেও একই কাজ করেছিল তাঁরা।
সেবার নিয়মিত অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার টুর্নামেন্টের মাঝপথে ইনজুরির কারণে ছিটকে যান। অধিনায়কত্বের দৌড়ে অভিজ্ঞ রবিচন্দ্রন অশ্বিন থাকলেও ম্যানেজমেন্ট বেছে নিয়েছিল অপেক্ষাকৃত তরুণ ঋষাভ পান্তকে। পান্তও হতাশ করেননি, অধিনায়ক হিসেবে সফলই বলা যায় তাঁকে। এবারে তাই দিল্লির অধিনায়ক হবার দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে আছেন পৃথ্বী শ।
- অক্ষর প্যাটেল (ভারত)
২০২২ সালটা স্বপ্নের মতো কাটিয়েছেন অলরাউন্ডার আক্সার প্যাটেল। ব্যাটিং এবং বোলিং দুই বিভাগেই আলো ছড়িয়েছেন। রবীন্দ্র জাদেজার ইনজুরির সুবাদে জায়গা পেয়ে জাতীয় দলে নিজের জায়গাটা পাকা করে নিয়েছেন। ২০১৮ সালের নিলামে এই অলরাউন্ডারকে দলে ভেড়ায় দিল্লি ক্যাপিটালস। সেই থেকে দিল্লি শিবিরেই আছেন তিনি। চার বছরের অভিজ্ঞতার সুবাদে আক্সার আশা করতেই পারেন ম্যানেজমেন্ট তাঁর উপর দলের নেতৃত্বভার তুলে দিক।
এখনো পর্যন্ত ১২২ ম্যাচ খেলে ১১৩৫ রানের পাশাপাশি ১২১ উইকেট তুলে নিয়েছেন প্যাটেল। জাতীয় দলের হয়েও রেকর্ডটা মন্দ নয়। আইপিএলেও তিনটি ভিন্ন ফ্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। সুতরাং দিল্লী ম্যানেজমেন্ট চাইলেই অধিনায়কত্বের ভারটা তুলে দিতে পারে এই অলরাউন্ডারের হাতে।