প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ব্যাটিং গড় ১৯, টি-টোয়েন্টিতে সেটা ২০ আর লিস্ট এ ক্রিকেটে ৩২; আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ম্যাচ খেলেছেন মোটে দুইটি – জেক ফ্রেসার ম্যাকগার্কের সম্বল এতটুকুই। আইপিএলে দল পাবেন সেই স্বপ্ন দেখার সাহস বোধহয় তাঁর ছিল না, তবু দিল্লি ক্যাপিটালস বেছে নিয়েছিল তাঁকে। কেন এত এত তারকার মাঝে তিনিই দিল্লির পছন্দ, সেই উত্তর অবশ্য প্রথম ম্যাচেই দিলেন।
লখনৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আইপিএলে অভিষেক হলো এই ব্যাটারের। তিন নম্বরে নেমে এদিন ম্যাচজেতানো ইনিংস খেলেছেন তিনি, ৩৫ বলে করেছেন ৫৫ রান। দুইটি চারের পাশাপাশি পাঁচটি ছয়ে সাজানো তাঁর ইনিংসটিতে ভর করেই ১৬৮ রানের লক্ষ্য সহজে পেরিয়ে গিয়েছে দিল্লি।
রেকর্ড বইয়েও ঝড় তুলেছেন অজি তরুণ, অভিষেক ম্যাচে তিন নম্বরে তাঁর চেয়ে বেশি রান করতে পেরেছেন কেবল স্বদেশী মাইকেল হাসি। আবার দিল্লির হয়ে অভিষেকে সবচেয়ে বড় ইনিংস খেলার তালিকাতেও দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন তিনি, এখানে সবার উপরে আছেন ভারতীয় কিংবদন্তি গৌতম গম্ভীর। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচ শেষে অধিনায়ক ঋষাভ পান্ত তাঁকে ভাসিয়েছেন প্রশংসার সাগরে।
পান্তের সঙ্গেই এই ডানহাতি গড়েছিলেন গুরুত্বপূর্ণ জুটি। পৃথ্বী শ এর বিদায়ের পর দু’জনে দলের হাল ধরেছিলেন। তাঁদের অনবদ্য ব্যাটিংয়েই জয়ের সমীকরণ ক্রমাগত সহজ হয়ে যায়। এরই মধ্যে ৩১ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি – খানিক পরেই অবশ্য থামতে হয় তাঁকে। তবে তার আগেই নিজের দায়িত্ব পূর্ণ করেছিলেন, দলকে পৌঁছে দিয়েছিলেন নিরাপদ জায়গায়।
ম্যাকগার্কের ব্যাটিংয়ে ফুটে উঠেছে প্রতিভার ছাপ; তাঁর শট খেলার সামর্থ্য আর ফিল্ডিংয়ের ফাঁক ফোঁকর গলে রান বের করার নিপুণতা মুগ্ধ করবে যে কাউকে। তবে তিনি সবচেয়ে ভাল যেটা পারেন সেটা বোধহয় মাথা ঠান্ডা রাখা। সাত থেকে দশ ওভার এ সময়টাতে দারুণ বোলিং করেছিল লখনৌর বোলাররা। ফলে রান আসেনি একদমই।
কিন্তু আতঙ্কিত না হয়ে এই উদীয়মান তারকা ধৈর্য ধরেছেন, এরপর সুযোগ পেতেই ক্রুনাল পান্ডিয়ার তিন বলে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে সব চাপ উড়িয়ে দিয়েছেন চোখের পলকে। স্লো পিচেও দিল্লি এত সহজে প্রায় ১৭০ ছুঁই ছুঁই লক্ষ্য এত সহজে তাড়া করতে পেরেছে সেটারও বড় একটা কারণ তাঁর দায়িত্বশীল ব্যাটিং। এখন শুধু ধারাবাহিকতা ধরে রাখার পালা; কেননা তাঁকে ঘিরে নিশ্চয়ই এখন বড় স্বপ্ন দেখছে সমর্থকেরা।