নেইমারের বিকল্প যারা

বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই সার্বিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে দারুণ শুরু করেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। কিন্তু সমর্থকদের জন্য চিন্তার ব্যাপার হলো চোটে পড়ে গ্রুপপর্বের বাকি ম্যাচগুলো থেকে ছিটকে গেছেন দলের মূল তারকা নেইমার। 

শেষবার বিশ্বকাপে নেইমার চোটে পড়েছিলেন ২০১৪ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, কলম্বিয়ার বিপক্ষে। তাঁকে ছাড়াই ঘরের মাঠে জার্মানির বিপক্ষে সেমিফাইনাল খেলতে নেমেছিল ব্রাজিল। এরপরের ইতিহাস সবারই জানা। 

আরো একবার নেইমার ইনজুরিতে ছিটকে যাবার পর ব্রাজিলের তাই প্রয়োজন প্ল্যান বি। আট বছর আগের তুলনায় ব্রাজিলের স্কোয়াড অনেক বেশি ভারসাম্যপূর্ণ। আসুন দেখে নেয়া যাক নেইমারের বিকল্প হিসেবে কোন কোন ফুটবলারকে খেলাতে পারেন ব্রাজিল কোচ তিতে। 

  • ব্রুনো গুইমারেস 

নিউক্যাসল ইউনাইটেডের হয়ে এবারের মৌসুমে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন মিডফিল্ডার ব্রুনো গুইমারেস। প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নেবার পাশাপাশি আক্রমণে বলের জোগান দিতেও সমান পটু এই মিডফিল্ডার।

সবমিলিয়ে কমপ্লিট এক মিডফিল্ডার তিনি। নেইমারের বিকল্প হিসেবে প্রথম পছন্দ হিসেবে তাঁর নামটাই প্রথমে আসার কথা ব্রাজিল কোচ তিতের মাথায়। নিখাদ দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রথম ম্যাচে বেঞ্চে বসে থাকতে হয়েছে তাঁকে।

তবে তিতের মাথায় চিন্তার ভাঁজ ফেলবে রাইটব্যাক দানিলোর চোট। রাইটব্যাক হলেও সার্বিয়া ম্যাচের বেশিরভাগ সময় মিডফিল্ডের ডানপাশটা সামলেছেন তিনি। ফলে ব্রুনো খেললে তাঁর উপর দায়িত্বটা বেশিই বর্তাবে।  

  • ফ্রেড

জাতীয় দলে দায়িত্ব পাবার পর শুরু থেকেই তিতের পছন্দের ফুটবলারদের একজন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার ফ্রেড। তাছাড়া কাসেমিরোর সাথে একই ক্লাবে খেলায় মিডফিল্ডে তাঁদের রসায়নটাও বেশ ভালো। 

মিডফিল্ডের খানিকটা নিচে থেকে খেলা শুরু করলেও আক্রমণাত্নক মানসিকতায় উন্নতি ঘটেছে ফ্রেডের। সার্বিয়া ম্যাচেই বেশ উপরে উঠে খেলেছেন, বক্সের বাইরে থেকে বেশ কয়েকবার দূরপাল্লার শট নেবার চেষ্টা করেছেন। 

  • গ্যাব্রিয়েল জেসুস

প্রথম ম্যাচে চারজন আক্রমণভাগের ফুটবলার খেলিয়ে অলআউট অ্যাটাকে গিয়েছিলেন ব্রাজিল কোচ তিতে। দ্বিতীয় ম্যাচেও গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে খেলিয়ে সেই ধারা বজায় রাখতে পারেন তিনি। আর্সেনালের এই ফরোয়ার্ড কেবল বলের অপেক্ষা না করে নিচে নেমে আক্রমণ তৈরিতে পারদর্শী।

মিকেল আর্তেতার আর্সেনালে প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নেবার কাজটা প্রথম শুরু হয় জেসুস থেকেই। জাতীয় দলে তিতেও অনুসরণ করতে পারেন সেই নীতি। আক্রমণভাগে রিচার্লিসন এবং জেসুস থাকলে আক্রমণের গতি যে আরো বাড়বে, তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ থাকার কথা নয় কারো।

  • রদ্রিগো গোয়েজ

ব্রাজিলের জার্সিতে বরাবরই দুর্দান্ত খেলে থাকেন রদ্রিগো। ক্লাবের পাশাপাশি জাতীয় দলেও ভিনিসিয়াস জুনিয়রের ছায়াতেই থাকতে হয়েছে বেশিরভাগ সময়। তবে যখনই সুযোগ পেয়েছেন, তখনই নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। 

ডানপ্রান্তে রাফিনহা শুরু করায় সার্বিয়া ম্যাচে প্রথম একাদশে সুযোগ মেলেনি রদ্রিগোর। তবে যতটুকু সময় পেয়েছেন মাঠে, নিজের সেরাটা দিয়েছেন। গতি-ড্রিবলিংয়ে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছেন সার্বিয়ার রক্ষণভাগ। নেইমারের বদলি হিসেবে তাই রদ্রিগোর কথা ভাবতেই পারেন তিতে। 

  • অ্যান্টনি

এবারের মৌসুমের শুরুতেই প্রায় ১০০ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে আয়াক্স ছেড়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নাম লিখিয়েছেন অ্যান্টনি। দুর্দান্ত গতি আর ড্রিবলিংয়ের পাশাপাশি নেইমারের মতো বল পায়ে কারিকুরি দেখাতে পছন্দ করেন এই তারকা। নেইমারের রেখে যাওয়া নাম্বার টেন পজিশনে দারুণ এক সংযোজন হতে পারেন অ্যান্থনি। 

  • গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লি 

আর্সেনালের হয়ে এবারের মৌসুমে দারুণ ফর্মে আছেন গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লি। ইপিএলে পাঁচ গোল করার পাশাপাশি করিয়েছেন আর দুইটি। সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের শেষদিকে মাঠে নেমে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন জাতীয় দলেও। 

বল পায়ে রেখে টাচলাইন ধরে সামনে এগোতে পছন্দ করেন এই উইংগার। নেইমারের বদলি হিসেবে সরাসরি প্রথম একাদশে সুযোগটা হয়তো একটু দ্রুতই হয়ে যাবে মার্টিনেল্লির জন্য। তবে তাঁর বেঞ্চে থাকা প্রমাণ করে ব্রাজিলের আক্রমণভাগে এবার বারুদের কমতি নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link