দ্য মিস্ট্রি অব নাঈম শেখ

দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে ঘোষণা করা হয়েছে এশিয়া কাপের দল। অধিনায়ক কে হবেন সেই উত্তর জানা না থাকায় দল চূড়ান্ত হলেও ঘোষণা করতে পারেনি নির্বাচকরা। তবে শেষমেশ সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যদের দলে দিয়েছে তাঁরা, আর সেখানে ওপেনার হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন মোহাম্মদ নাইম শেখ।

এশিয়া কাপের জন্য একটা সময় পর্যন্ত কেবল ব্যাকআপ ওপেনার খুঁজেছিল টিম ম্যানেজম্যান্ট। কিন্তু তামিম ইকবাল হুট করেই এই টুর্নামেন্টে না খেলার সিদ্ধান্ত জানান।

ফলে কিছুটা বাধ্য হয়েই লিটন দাসের পাশাপাশি আরো দুইজনকে নির্বাচন করতে হয়েছে। সম্ভাব্য ওপেনার হিসেবে জাকির, জয়, নাইম শেখ, তানজিদ তামিম, সৌম্য সরকারকে বিবেচনা করা হলেও শেষ পর্যন্ত নেয়া হয়েছে তামিম আর নাইমকেই।

তানজিদ হাসান তামিমকে নিয়ে অবশ্য দ্বিমত নেই খুব একটা। তিনি উদীয়মান ক্রিকেটার, এক্স ফ্যাক্টর হতে পারেন দলের জন্য। যত আলোচনা নাইম শেখকে নিয়ে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখনো নিজেকে মেলে ধরতে না পারা এই বামহাতি কিভাবে বড় আসরে সুযোগ পান সেটা নিয়েই সবার যত ভাবনা।

সত্যি বলতে, নাইম শেখ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মানিয়ে নেয়ার মত যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছেন কি না সেটাও ভাবার বিষয়। এখন পর্যন্ত এই ব্যাটার কখনোই টানা খেলতে পারেননি। ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়নি তাঁকে; এরপর আবার এক ম্যাচ খেলে বাদ পড়েছেন, সর্বশেষ আফগানিস্তান সিরিজে অবশ্য টানা দুই ম্যাচ খেলেছিলেন।

সব মিলিয়ে চার ম্যাচে মাঠে নামা নাইম শেখ ওয়ানডে দলে খেলেছেন তিন দফায়। অথচ কোন ক্রিকেটার নিজেকে প্রমাণ করতে হলে দিতে হয় পর্যাপ্ত সুযোগ; বাদ পড়ার ভয় মনে নিয়ে নিশ্চয়ই স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করা যায় না। টানা কয়েক ম্যাচ সুযোগ না দিয়েই নাইমকে বিচার করাটা বোকামি হবে।

অনেকে হয়তো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের কথা বলতে পারেন। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে এই সংস্করণে রান করা নিয়ে তেমন সমস্যা ছিল না নাইম শেখের; সমালোচনা হয়েছে স্ট্রাইক রেট নিয়ে। কিন্তু এই বাম-হাতির রান তোলার গতি ওয়ানডের সাথে মানানসই বলেই মনে করেন ক্রিকেটাঙ্গনের অনেকে।

নাইম শেখকে দলে নেয়ার জন্য তাই বিবেচনা করা হয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স; গত ঢাকা লিগেও সর্বোচ্চ রান করেছিলেন তিনি। এছাড়া গত এশিয়া কাপে খেলার অভিজ্ঞতাও আছে তাঁর। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর কথাতেও মিলেছে সেসব ইঙ্গিত।

তিনি বলেন, ‘নাঈম শেখ ঘরোয়া ক্রিকেটে যথেষ্ট ভালো খেলেছে। ইমার্জিং কাপে খুব একটা ভালো করতে পারেনি কিন্তু স্টেবল ছিল। এর সঙ্গে যেহেতু আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা আছে। এজন্য আমরা চিন্তা করেছি ওকে আরেকটু সুযোগ দেওয়া যায়।’

তামিম ইকবাল থাকলে হয়তো নাইম শেখ দলে জায়গা পেতে নাও পারতেন। সেক্ষেত্রে একমাত্র ব্যকআপ ওপেনার হিসেবে হয়তো তানজিদ হাসান তামিমকে নিয়েই উড়াল দিতো টিম বাংলাদেশ। কিন্তু, তামিম না থাকাতে দুইজন ওপেনারকে নিতে হচ্ছে। আর সেই দুইজন যদি একেবারে নতুন হন তাহলে ঝুঁকিটা একটু বেশিই হয়।

সেই ঝুঁকিটা নিতে চায়নি বলেই টিম ম্যানেজম্যান্ট বেছে নিয়েছে নাইম শেখকে। আপাতত তাই নাইমের সমালোচনার চেয়ে তাঁর উপর বিশ্বাস রাখাটা জরুরি। কি জানি, হয়তো সেই বিশ্বাসের জোরই বিরাট কোহলি, বাবর আজমদের সঙ্গে একই মঞ্চে নিজের সেরাটা দিতে পারবেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link