জাকির হাসান কেন বাংলাদেশের টেস্ট দলে? – এই প্রশ্নটা বরং একটু উলটে দেয়া যায়। প্রশ্ন করা যেতে পারে জাকির কেন থাকবেন না দলে? ক্যারিয়ারের শুরুতেই প্রতিভাবান তকমা পাননি, তাঁকে নিয়ে গনমাধ্যমের আগ্রহ কম, খুব একটা পরিচিতও নন। তবুও জাতীয় নির্বাচকদের রীতিমত বাধ্য করেছেন এই ব্যাটার। কেউ কথা না বললেও, জাকিরের হয়ে কথা বলেছে তাঁর পারফর্মেন্স।
ভারতের বিপক্ষে ইতোমধ্যেই ওয়ানডে সিরিজ জয় করে ফেলেছে বাংলাদেশ। এবার দুই দলই পৌছে গিয়েছে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে। সেখানেই অনুষ্ঠিত হবে ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটা। আর প্রথম টেস্টের জন্য বাংলাদেশের দলও ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে নতুন মুখ জাকির সহ আছেন মোট ১৭ ক্রিকেটার।
জাকির লাল বলে প্রথম বার্তাটা দিলেন গতবছর বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে। সেখানে সাউথ জোনের হয়ে চার ম্যাচ ইনিংস খেলেছিলেন মাত্র ৫ টা। করেছিলেন ৩৯৬ রান। সর্বোচ্চ ১৫৮ রানের একটি ইনিংসও এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে। তবে সবচেয়ে নজরকাড়া বিষয় সেই আসরে জাকির ব্যাটিং করেছেন ঠিক ৯৯.০০ গড়ে।
তবে এখানেই শেষ নয়। ব্যাট হাতে নিজের এমন পারফর্মেন্স এবারের জাতীয় ক্রিকেট লিগেও ধরে রেখেছেন। সদ্য সমাপ্ত এই এই প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্টে জাকির খেলেছেন সিলেট বিভাগের হয়ে। আর এই আসরে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকারী তিনি। ৬ ম্যাচে ৫৫.২৫ গড়ে করেছেন ৪৪২ রান। এই আসরে একমাত্র ৪০০ রান করা ব্যাটারও তিনিই। এছাড়া ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ২১৩ রানের ইনিংসও এসেছে তাঁর কাছ থেকে।
ফলে তখন থেকেই তাঁকে জাতীয় দলে নিয়ে আসার ব্যাপারে একটা আলোচনা চলছিল। তবে তাঁর আগে জাকিরকে শেষবারের মত পরখ করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন নির্বাচকরা। তাঁকে ডাকা হয় ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার জন্য। আর কক্সবাজারের সেই পরীক্ষাতেই ভালোভাবেই পাশ করে যান এই ব্যাটার।
ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে সাগরপাড়ে ১৭৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। আর তাতেই টেস্ট দলে নিজের জায়গাটা পাকা হয়ে যায়। ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দলে প্রথমবারের মত ডাক পেলেন তিনি। ওদিকে টেস্টে নাজমুল হোসেন শান্ত কিংবা মুমিনুল হকরা ফর্মে না থাকায় তাঁর জন্য ডাক পাওয়াটা আরো সহজই হয়ে যায়।
টেস্টে তিন ও চার নাম্বার পজিশনে এই মুহূর্তে প্রমাণিত কেউ নেই বাংলাসদেশ দলে। ফলে এই জায়গাইয় জাকিরকে পরীক্ষা করে দেখতে পারে বাংলাদেশ দল। জাকির সেই পরীক্ষায়ও পাশ করে গেলে বাংলাদেশও একটা বড় চিন্তা থেকে মুক্তি পায়।
ওদিকে প্রথম টেস্টের জন্য ঘোষণা করা ১৭ জনের স্কোয়াডে নেই তামিম ইকবাল। ইনজুরির কারণে নিজের শহরে প্রথম টেস্টে খেলা হচ্ছেনা তাঁর। ওপেনার হিসেবে মাহমুদুল হাসান জয়ের সাথে দলে আছেন এনামুল হক বিজয়। ওদিকে ছুটি কাটিয়ে আবারতো টেস্ট দলে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম। যদিও ব্যাট হাতে তাঁর সময়টাও খুব একটা ভালো যাচ্ছেনা।
পেস বোলিং আক্রমণে এবারো মুস্তাফিজুর রহমান না থাকলেও আছেন তাসকিন আহমেদ। এছাড়া খালেদ, এবাদতরাও আছেন দলে।