সিরিজের আগেই কেন তামিমের ইনজুরি হয়!

বড় দলগুলোর বিপক্ষে সিরিজের আগে তামিম ইকবালের ইনজুরি যেন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। ওয়ানডের অধিনায়ক এবং দেশসেরা ওপেনার তামিম দলের মূল স্তম্ভদের একজন। অথচ, জরুরি সিরিজগুলোর আগে ইনজুরিতে পড়ে বেশিরভাগ সময় পূর্ণ ফিট তামিমকে পায় না বাংলাদেশ দল। গেল ইংল্যান্ড সিরিজের আগে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) পিঠের চোটে পড়েছিলেন তিনি। এবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শুরু হওয়ার আগেও দৃশ্যপটটা একই।

২০১৫ বিশ্বকাপের পরের তিন বছর একদিনের ক্রিকেটে স্বর্ণযুগ কাটিয়েছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল মাশরাফি মর্তুজার দল। পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার পাশাপাশি ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জিতে নেয় স্বাগতিকরা। তবে ইংল্যান্ড ঠিকই ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে গিয়েছিল বাংলাদেশের মাটি থেকে। 

ছয় বছর পর আরো একবার বাংলাদেশে বাংলাদেরশে পা পড়েছিল বাটলারদের। বাংলাদেশের জন্য সিরিজটা যেন প্রতিশোধের, পুরনো ক্ষতে প্রলেপ দেয়ার। অথচ সিরিজের আগে কিনা দলের অধিনায়কই পড়ে গিয়েছিলেন ইনজুরিতে। বিপিএলের শেষের দিকে এসে জানা যায় তামিম ভুগছেন পিঠের চোটে। সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশ শিবিরে তাই দুশ্চিন্তার কালো ছায়া পড়েছিল সেবার। 

বড় সিরিজগুলোর আগে তামিমের এমন ইনজুরি আজকের নতুন ঘটনা নয়। গত বছর ইনজুরির কারণে মিস করেছেন পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ চারটি টেস্ট। এছাড়া পেটের পীড়ার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও প্রথম টেস্টে মাঠে নামেননি তিনি। এই টেস্টগুলোতে তাঁর অনুপস্থিতি ভালোই ভুগিয়েছে জাতীয় দলকে। একদম আনকোরা ওপেনারদের নিয়ে মাঠে নামতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।

অথচ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ঠিকই খেলেছিলেন এই ওপেনার। এছাড়া টি টোয়েন্টি থেকে ইনজুরি এবং নানা সমস্যায় নিজেকে সরিয়ে রাখলেও এভারেস্ট প্রিমিয়ার লিগে খেলতে গিয়ে আঙ্গুলের ইনজুরিতে পড়েন। বাঁ হাতের আঙুলে ব্যাথা পাবার পর স্ক্যান রিপোর্টে চিড় ধরা পড়ে।

ফলে মিস করেন পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট সিরিজ। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তালিকায় উপরের দিকে উঠার জন্য বাংলাদেশের কাছে সেই সিরিজের গুরুত্ব ছিল অনেক। সেই সিরিজের পুরোটা সময়জুড়ে তামিমকে মিস করেছে বাংলাদেশ। এরপর ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজও মিস করেন কুঁচকির চোটে পড়ে। 

এবার আবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের আগে শোনা যাচ্ছে তামিমের ইনজুরির কথা। কোমড়ের চোট বেশ পুরনো। সেই চোটে বারবার ভুগতে হয়েছে তামিম। সেই চোট আবার মাথা চাড়া দিয়েছে। যদিও কয়েকদিনের বিশ্রামে পরিত্রাণ মিলতে পারে তামিমের। কিন্তু তবুও তো সিরিজের আগে পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটায় এই ইনজুরিগুলো।

দলের সেরা ওপেনার তিনি। দলের ভালো শুরু এনে দেয়ার দায়িত্বটা তাঁর কাঁধেই বর্তায়। অথচ গুরুত্বপূর্ণ সিরিজগুলোতে তাঁকে পাওয়া যায় না। ফলে আদতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জাতীয় হয়। তাছাড়া তামিমের ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারও বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে এতে।

বারবারই তামিম জানিয়েছেন ক্যারিয়ার নিয়ে তাঁর লক্ষ্যের কথা, দশ হাজার রানে পৌঁছানোর টার্গেট সেট করার কথা। অথচ তামিম যেভাবে ইনজুরির কারণে সিরিজ মিস করছেন কিংবা হাফফিট হয়ে খেলছেন তাঁতে সে লক্ষ্যে পৌঁছানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ।  

বর্তমানে ফর্মের সাথে সাথে তামিমের  দুশিন্তার জায়গাটা ফিটনেস। কেবল আসন্ন আফগানিস্তান সিরিজ নয়, বরং বড় ক্যানভাসে যদি তামিমের ইনজুরির ঘটনাগুলো দেখা হয় তবে বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে দু:সময়। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link