নির্ভার শাহিন, নির্ভীক শিকারি

বলের সুইং, আর গতির হেরফের। সবকিছু মিলিয়ে শাহিন যেন আবারও দুর্ধর্ষ। 

একটু নির্ভার, অনেকখানি জেদ- এই দুইয়ের মিশ্রণে হিংস্র শাহিন শাহ আফ্রিদির চেনা প্রতিচ্ছবি। আগ্রাসনের ধারক হয়ে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং দূর্গে হেনেছেন আঘাত। তাও আবার তিন-তিনবার। বলের সুইং, আর গতির হেরফের। সবকিছু মিলিয়ে শাহিন যেন আবারও দুর্ধর্ষ।

অধিনায়কত্বের দায়িত্ব কাঁধ থেকে নেমে গেছে। সে প্রক্রিয়া নিয়ে অবশ্য বিস্তর সমালোচনা সভা চাইলেই শুরু করা যায় যেকোন মুহূর্তে। তবে নির্ভার শাহিন যে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের জন্যে আশির্বাদ, সেটা নিশ্চয়ই নতুন করে বলবার নয়।

প্রথম ম্যাচটা বৃষ্টির জলে গিয়েছিল ভেসে। অতিথি নিউজিল্যান্ডকে সেদিনও যে স্বস্তি দেননি শাহিন। দারুণ এক ইনসুইং ডেলিভারিতে উপড়ে ফেলেন টিম রবিনসনের স্ট্যাম্প। ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই শিকারি শাহিনের আঘাত। তবে এরপর অবশ্য বেরসিক বৃষ্টির বাঁধায় শেষ অবধি পরিত্যক্ত হয় ম্যাচ।

সেদিনই অবশ্য জানান দিয়েছিলেন শাহিন মুখিয়ে আছেন। উইকেট শিকারের জন্যে উদগ্রীব হয়ে আছেন। সে প্রমাণই মিলল রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই উইকেট পকেটে পুরেন শাহিন। ঠিক যেন চৌকস কোন শিকারি।

এদফা তার প্রথম শিকার টিম সাইফার্ট। অবশ্য সেই উইকেট প্রাপ্তিতে শাদাব খানও খানিকটা কৃতীত্ব পাওয়ার দাবিদার। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দুর্দান্ত এক ক্যাচ লুফে নেন শাদাব খান। তাতে করেই শিকারি বাজ পাখির মত উইকেট শিকারের অন্বেষণে নেমে পড়েন শাহিন শাহ আফ্রিদি।

দ্বিতীয় উইকেটটা যেন শাহিনের সিগনেচার। ১৪৩ কিলো/ঘন্টার একটি বল একেবারে ব্লকহোলে। ব্যাটার কোল ম্যাককঞ্চির কিছুই যেন করবার ছিলনা। উপড়ে যায় স্ট্যাম্প। একেবারে অপ্রতিরোধ্য এক ইয়োর্কার। নির্ভার শাহিন যে ঠিক কতটা ভয়ংকর- তারই যেন নির্দর্শন সেটা।

তৃতীয় উইকেটটিও ঠিক একই ধরণের এক ইয়োর্কারে আদায় করে নেন পাকিস্তানের এই বা-হাতি বোলার। বেন লিস্টারের উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে অলআউট করবার কার্য সম্পাদন করেন শাহিন। এই ম্যাচে ৩.১ এক বল করে তিনটি উইকেট নিজের করে নেন শাহিন আফ্রিদি।

তাতে করে একটা বিষয় স্পষ্ট- অধিনায়কত্ব অন্তত খানিকটা ব্যাকফুটেই রেখেছিল শাহিনকে। যদিও নিয়ম করেই উইকেট শিকার করেছেন তিনি। কিন্তু দলপতির বাড়তি দায়িত্ব সামাল দিতে গিয়ে খানিক ছন্দহীন হচ্ছিলেন বটে। তাছাড়া দলনেতা হিসেবে সময়টাও খুব একটা ভাল যাচ্ছিল না তার। পাকিস্তান সুপার লিগে তার নেতৃত্বে একটিমাত্র ম্যাচই জিতেছল তার দল। জাতীয় দলের দশাও ছিল সেই একই।

তাইতো অধিনায়কত্ব থেকে নিস্তার পাওয়া শাহিনের জন্যে হয়েছে সাপে বর। তার সাথে ঘটা ঘটনাবলি নিশ্চয়ই উচিত কিছু নয়। তবে ঘটনাগুলোকে জ্বালানি হিসেবে নিশ্চয়ই ব্যবহার করতে চাইছেন শাহিন আফ্রিদি। আর তেমনটি ঘটলে অপ্রতিরোধ্য এক শাহিনের দেখা মিলবে হয়ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। পাকিস্তানের জন্যেও যে তা হবে সোনায় সোহাগা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...