চায়ের নগরী সিলেট। অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেরও এক লীলাভূমি সিলেট। তাইতো, যুগ যুগে লক্ষ্য কোটি মানব হৃদয়কে মোহাচ্ছন্ন করে বারবার নিজের দিকে আকৃষ্ট করে এই জায়গাটি। বাংলাদেশের ছোট্ট জেলাটায় এবার বসেছে তারার মেলা। নারী এশিয়া কাপের সব আয়োজন তো এখন সেখানে। ভারতের স্মৃতি মান্দানা, পাকিস্তানের বিসমাহ মারুফ কিংবা বাংলাদেশের নিগার সুলতানা জ্যোতিদের আলোতে মুখরিত হবে সিলেটের ক্রিকেটাঙ্গন।
অপরুপ সিলেটের সৌন্দর্য্য বাড়বে। সে সাথে বাড়বে উত্তাপ। ক্রিকেট মাঠের শিরোপা লড়াইয়ের উত্তাপটা নিশ্চয়ই ছড়িয়ে পরবে চায়ের নগরীতে। তরুণদের ঘুম কেড়ে নেয়া লাস্যময়ী ক্রিকেটার স্মৃতি মান্দানা। রূপের দিক দিয়ে যেমন চোখ জুড়ানো তিনি, ঠিক তেমনই স্টাইলিশ তাঁর ব্যাটিং। নিজের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য অনেকে তাকে নারী ক্রিকেটের বীরেন্দ্র শেবাগও বলে থাকেন। সেই স্মৃতি মান্দানাকে ব্যাট হাতে দেখা যাবে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আন্তর
এবারের এশিয়া কাপে দেখা যাবে নারী ক্রিকেটের যুবরাজ সিং খ্যাত ক্রিকেটার হারমানপ্রীত করকে। নিজের দিনে বিশ্বের যেকোনো বোলিং লাইনআপকে গুড়িয়ে দিতে পারেন এই ডানহাতি ব্যাটার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের সর্বশেষ সিরিজেও ব্যাট হাতে তিনি ছিলেন দুঃসাহসিক।
ভারতের এই দুজন তারকা ক্রিকেটার ছাড়াও, জিমাইমাহ রড্রিক্স, রাজস্রি গাইকোয়াড এবং শেফালি ভার্মার মতো প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা একা হাতে উলটে দিতে পারেন পাশার দান।
এছাড়াও, এবারের এশিয়া কাপে দেখা যাবে শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি নারী ক্রিকেটার চামারি আতাপাত্তুকে। অধিকাংশ সময়, নিজের ব্যাটিংয়ের মধ্যমে একাই দলকে সামলে রাখেন চামারি। তাই তো, এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কা দল কতোটুকু যেতে পারবে তা অনেকখানি নির্ভর করবে এই বাহাতি ব্যাটারের উপরই।
তবে, এবারের এশিয়া কাপে অনেকটাই তারুণ্য নির্ভর দল নিয়েই যাচ্ছে পাকিস্তান । তাইতো এবারের এশিয়া কাপে সাফল্যের জন্য পুরো দলকেই একসাথে পারফর্ম করতে হবে।
এশিয়া কাপের এই আসরে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ অংশগ্রহণ করবে মোট ৭টি দল। যেখানে, টুর্নামেন্টের সব থেকে শক্তিশালী দল হিসেবে শিরোপা জয়ের অন্যতম দাবীদার ভারত। তবে, ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কারণে এবারের আসরে শিরোপা জয় করার ব্যাপারে আশাবাদী হতে পারেন বাংলার মেয়েরাও।
কারণ, গেলোবারের এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টের সব থেকে আন্ডারডগ দল হয়েও শিরোপা জয়ের স্বাদ পায় বাংলার এই বাঘিনীরা। যার কারণে, আবারো নতুন করে শিরোপা জয়ের আনন্দে ভাসার স্বপ্ন দেখতেই পারে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। এখন পর্যন্ত, নারী এশিয়া কাপের মোট ৮ আসরে ভারতই সবচেয়ে বেশি ৭ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
ভারত ছাড়া, এশিয়ার নারী ক্রিকেটের এই শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট কেবল বাংলাদেশই নিতে পেরেছে। একেতো চিরচেনা কন্ডিশন, এর মধ্যে ঘরের মাটিতে দর্শকদের সাপোর্ট সব মিলিয়ে ভারতের পর এ টুর্নামেন্টে সব থেকে ফেভারিট দল বাংলাদেশ। এছাড়াও, বাংলাদেশ দলে থাকা অভিজ্ঞ সালমা, জ্যোতিরা যেকোনো সময়ই বদলে ফেলতে পারে ম্যাচের দৃশ্যপট।
নারী ক্রিকেটে গ্ল্যামার বিষয়টা ছাপিয়ে মাঠের ক্রিকেটে লড়াইটাও জমে বেশ। এশিয়া কাপের মত মহাদেশী লড়াইয়ে নারী ক্রিকেটারদের কেউ যে এক চুল পরিমাণ ছেড়ে কথা বলবেন না। সবাই হয়ত চাইবেন নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে। শিরোপা নিয়ে বাড়ি ফিরতে। তবে বাংলার বাঘিনীরা নিশ্চয়ই তেমনটা হতে দিতে চাইবে না। কিন্তু শেষমেশ শিরোপা কার হাতে উঠবে সেটা জানতে অপেক্ষা করতেই হবে। তার আগে অবশ্য জমজমাট কিছু ম্যাচ সামনে থেকে উপভোগ পুরোটাই লুফে নিতে চাইবে সিলেটের দর্শকরা।