মহেন্দ্র সিং ধোনি আমার অধিনায়ক। দেশের অধিনায়ক। জন গণ মনের অধিনায়ক। ওয়াংখেড়ের ওই আইকনিক ছক্কা হাঁকানোর দৃশ্য ভুলিনি! ভুলবো না ব্যাটটা ঘুরিয়ে নেওয়ার ছবিটাও। যেন তরোয়াল ঘোরালেন। এখন তিনি ৪১।
সচিন তেন্ডুলকর বিশ্বের দরবারে দেশের পতাকাবাহক। ক্রিকেটমাঠে আমাদের ছেলেবেলার প্রতিনিধি। সচিন পারলে আমরা পারব না কেন? আমাদের ছেলেবেলার চালিকাশক্তি সচিন ২৪ এপ্রিল পঞ্চাশে পা দেবেন।
গৌতম গম্ভীর ফাইনালে ৯৭ রান করেছিলেন। সেঞ্চুরি না পাওয়ার জন্য ধোনিকে অভিযুক্ত করেন এখনও। লখনৌ সুপারজায়ান্টসের মেন্টর তিনি।
বীরেন্দ্র শেবাগ ক্রিকেট থেকে বহু দূরে। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে টুইট করেন। ফাইনালে খাতা খোলেননি বীরু। নজফগড়ের নবাব এখন নিশ্চয় নবাবের মতোই দিনকাল কাটাচ্ছেন।
বিরাট কোহলি দৌড়ে চলেছেন। শচীন টেন্ডুলকার নামের এক ধ্রুবতারাকে ধাওয়া করছেন।
যুবরাজ সিংয়ের ওই কান্না ভুলতে পারি না। ভুলতে পারি না যুবির ছবির সঙ্গে ওই ক্যাপশন, জব তক বাল্লা চল রহা হ্যায়, তব তক ঠাট হ্যায়। একেকটা অবিশ্বাস্য শট খেলতেন, তার পরেই কাশতেন। তখন কি আর কেউ জানতেন, শরীরে বাসা বেঁধেছে রাজ রোগ! যুবি মৃত্যুঞ্জয়ী। ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন।
সুরেশ রায়না আর মহেন্দ্র সিং ধোনি অবসরের জন্য বেছে নিয়েছিলেন পনেরোই আগস্ট। সময়ের সামান্য ব্যবধানে দু’ জনেই গোটা ভারতবর্ষকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, অনেক হয়েছে আর ক্রিকেট নয়। রায়না লিজেন্ডস লিগ খেলেন।
সিংহরা বুড়ো হয়েছেন। হরভজন সিংও বলে দিয়েছেন, ক্রিকেট তোমায় দিলাম আজকে ছুটি।
ওয়াংখেড়ের ফাইনালের আগে আজকের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেছিলেন, কল্পচোখে দেখতে পাচ্ছি জাক বল হাতে দৌড়চ্ছে। রোহিত তখন দলে নেই। জাহির খান সেদিন ২ উইকেট নিয়েছিলেন। তিনিও ক্রিকেটমাঠ ছেড়েছেন।
মুনাফ প্যাটেলকে আমরা বলতাম ‘ভারুচ এক্সপ্রেস’। কোনওদিনই শিরোনামে আসতেন না। মুনাফের খবর এখন আর বেশি রাখি না।
একটা সময় শ্রীশান্থের মোবাইলের কলার টিউন ছিল ‘অ্যায় জিন্দেগি গলে লাগা লে’। মাঠের ভিতরে নানাধরনের কাণ্ডকারখানা করতেন। এখন দুর্দান্ত চেহারা বানিয়েছেন। সিনেমাও করেন বলে শুনেছি। একটা কথা বল হল না। শ্রীশান্থ দারুণ নাচেন।
বিশ্বজয়ের এক যুগ পূর্তি। ১২ বছর কম সময় নয়। এক ক্যারিবিয়ান সাংবাদিক বলছিলেন, ”ক্রিকেটার্স গেট ওল্ড অ্যান্ড আ নিউ জেনারেশন ইমার্জেস।” কলমচির দলও কি বুড়ো হননি!
সেদিনের নবীন সাংবাদিক আজ চল্লিশ অতিক্রান্ত। চলছে অফস্টাম্পের বাইরের বল নিয়ে নিরন্তর পরীক্ষানিরীক্ষা।
১২ বছর আগে আজকের রাতেই উঠেছিল ধোনির হাতে বিশ্বকাপ। সেদিন আমরা খুব কেঁদেছিলাম। মনে পড়ছে জাতীয় সঙ্গীত হচ্ছিল দূরে কোথাও।
আমার সঙ্গে এখনও রয়ে গিয়েছে সেবারের বিশ্বকাপের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড। সেটাই আমার স্বর্ণপদক। একবার করে দেখি, নস্ট্যালজিক হয়ে পড়ি। চোখের সামনে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে দেখেছিলাম আমার দেশকে।