আচ্ছা বলুন তো, সর্বশেষ এক দশকে বিশ্ব ক্রিকেটে সবচেয়ে সমীহ জাগানিয়া দলটা কোন দেশ? আপনার সম্ভাব্য উত্তরটা হতে পারে– আফগানিস্তান।
সর্বশেষ বিশ্বকাপে তাঁরা এসেছিল বাছাই পর্বের বাঁধা পেরিয়ে। তবে সেই বাছাইপর্বে উইন্ডিজদের হারিয়ে আফগানিস্তান হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন। তবে এবারের বিশ্বকাপে আর বাছাইপর্ব খেলতে হয়নি। ৪ বছরের ব্যবধানে নিজেদের অগ্রগামী যাত্রা ঠিকই প্রমাণ করেছে সুপার লিগে শীর্ষ ৮-এ থেকে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে।
বিশ্বকাপ আপাতত একপাশে রাখা যাক। দুয়ারে কড়া নাড়ছে এশিয়া কাপ। মনোযোগটা এই মহাদেশীয় টুর্নামেন্টটার উপরেই দেওয়া যাক। গেল বারের এশিয়া কাপে তাঁরা বাংলাদেশকে হারিয়ে পৌঁছেছিল সুপার ফোরে। কোনো বিস্ময়ের ব্যাপার হবে না, যদি এবার তাঁরা সেই অর্জনকেও ছাপিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে চোখ রাখে।
কারণ আফগানদের সেই শক্তি, সামথ্য— দুটোই আছে। এখন দেখার পালা আসন্ন এশিয়া কাপে আফগানদের তুরুপের তাস হতে পারেন কারা। চলুন সেই আলোচনায় করা যাক।
- রশিদ-মুজিব-নবী স্পিনত্রয়ী
এই মুহূর্তে ওয়ানডে ক্রিকেটের সেরা স্পিন শক্তি আফগানিস্তানের, এমন বিবৃতি দিলেও বোধহয় ভুল বলা হবে না। দলটার তিন স্পিনারই বোলারদের র্যাংকিংয়ে রীতিমত একটা স্পিন সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। তিন নম্বরে মুজিব উর রহমান, চারে রশিদ খান আর ১১ তে আছেন মোহাম্মদ নবী।
এই ট্রায়ো কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তার প্রমাণ মিলেছে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজেই। আফগানিস্তান যদিও প্রথম ম্যাচটা জিততে পারেনি। তবে পাকিস্তানের মতো ব্যাটিং সমৃদ্ধ দলকে তাঁরা অলআউট করেছিল মাত্র ২০১ রানে। রশিদ-মুজিব-নবীর ছন্দে থাকার দিনে তাই যেকোনো দলকেই গুড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যাশা করতে পারে আফগানিস্তান।
- ‘অলরাউন্ডার’ রশিদ-নবী
স্পিনার তো গেল। এই মুহূর্তে সেরা অলরাউন্ডারের দেশও বোধহয় বলা যেতে পারে আফগানিস্তানের এ দলটাকে। অলরাউন্ডার র্যাংকিংয়ে সাকিবের পরেই দুইয়ে আছেন মোহাম্মদ নবী। আর চার নম্বরে রয়েছেন রশিদ খান।
মিডল অর্ডারে মোহাম্মদ নবী সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিকভাবেই রান করছেন। আর রশিদ খানও পিঞ্চ হিটিংয়ে ভাল সক্ষমতা দেখাচ্ছেন। তাই একই একাদশে দুই বিশ্বমানের অলরাউন্ডার থাকাটা আফগানিস্তানকে দিতে পারে আলাদা সুবিধা।
- ফজল হক ফারুকি
স্পিনারদের দৌরাত্ম্যে যে আফগান পেসারদের আগ্রাসন নেই, তা একেবারেই নয়। বরং ফজল হক ফারুকি অল্প সময়ের মধ্যেই হয়ে উঠেছেন পরিণত এক পেসার। ভড়কে দিতে পারেন নামী ব্যাটারদেরও। যার প্রমাণ তিনি দিয়েছেন অসংখ্যবার।
বল হাতে দারুণ পারফর্ম করার কারণে জাতীয় দলের গণ্ডি টপকে সুযোগ পেয়েছেন বিদেশি লিগেও। সব মিলিয়ে এবারের এশিয়া কাপে আফগানদের পেস লাইনআপে তুরুপের তাসই হতে যাচ্ছেন তিনি। আর তাঁকে নিয়ে আলাদাভাবেই প্রতিপক্ষের দলগুলোকে সাজাতে হবে রণকৌশল।
- রহমানুল্লাহ গুরবাজ
আফগান বোলারদের প্রতাপে আড়ালে থেকে যায় তাদের ব্যাটিং লাইনআপ। তবে আফগান টপ অর্ডার এবার চেয়ে থাকবে রহমানুল্লাহ গুরবাজের উপরে। গেল বারের এশিয়া কাপে দারুণ পারফর্ম করেছিলেন। তার সুবাদে দরজা খুলে গিয়েছিল ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক টুর্নামেন্ট গুলোতেও। এবারও নিশ্চয় সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাইবেন এ ব্যাটার।