ষোল বছরের ছোকড়া স্পেনের কাণ্ডারি

বড় তারকা নেই, কাগজে-কলমে হেভিওয়েট স্কোয়াড নেই – ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ শুরুর আগে স্পেন দলে ছিল শুধু না থাকার হাহাকার। অথচ জার্মানি, ফ্রান্সকে টপকে তাঁরা ফাইনালে উঠে গেল; তারুণ্যের শক্তিতে উজ্জীবিত দলটা এবারের টুর্নামেন্টে নিজেদের নতুন করে চেনালো, সবশেষ ম্যাচেও ফ্রান্স হেরেছে দুই উদীয়মান স্প্যানিশ তারকার কাছেই।

বার্সেলোনার লামিন ইয়ামাল, বয়স মাত্র ১৬ বছর; কাঁধগুলো এখনো পুরোপুরি শক্ত হওয়ার কথা নয়। কিন্তু এই কিশোরের কাঁধে ভর করেই ছুটছে স্পেন, সেমিতে পিছিয়ে পড়েও তাঁর কল্যাণে সমতায় ফিরতে পেরেছিল তাঁরা। এছাড়া ড্রিবলিং আর থ্রু পাসে ফরাসি রক্ষণের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন তিনি। আধিপত্য দেখানো ম্যাচে শেষপর্যন্ত ২-১ গোলে জিতে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে তাঁর দল।

ফাইনালের ওঠার লক্ষ্যে এদিন স্পেন মাঠে নেমেছিল ৪-২-৩-১ ফরমেশনে৷ দানি অলমোকে নাম্বার টেন ভূমিকায় রেখে দুই উইংয়ে দুই তরুণ নিকো উইলিয়ামস আর লামিন ইয়ামালেকে রাখা হয়েছিল। অন্যদিকে ফ্রান্স অ্যান্টনি গ্রিজম্যানকে বাদ দিয়ে শক্তি বাড়িয়েছে মিডফিল্ডে, তাঁরা খেলেছিল ৪-৩-৩ ছকে।

তবে ট্যাকটিক্সের দিক থেকে দিদিয়ের দেশমকে হারিয়ে দিয়েছেন লা ফুয়েন্তে। স্পিডি স্প্যানিশ ফুটবলের বিপরীতে কিছুটা হলেও ছন্দ হারিয়ে বসেছিল ফরাসিরা। যদিও ম্যাচের শুরুতে ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কোলো মুয়ানি। কিলিয়ান এমবাপ্পের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন তিনি। কিন্তু সেটাই শেষ, এরপর কেবল স্প্যানিশদের দাপট দেখা গিয়েছে।

গোল হজমের মাত্র বারো মিনিট পরেই লামিন ইয়ামালের অবিশ্বাস্য এক শটে সমতায় ফেরে দলটি। সুন্দরতম মুহূর্তের রেশ কাটার আগেই আবারো দানি অলমো করে বসেন মনে রাখার মত আরেকটি গোল। সবমিলিয়ে পিছিয়ে পড়ার মিনিট পনেরোর ব্যবধানে লিডের দেখা পায় স্পেন।

ম্যাচের ভাগ্য এতেই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে; বাকি সময় দুই দলের কেউই স্কোরবোর্ডে বদল আনতে পারেনি। বিশেষ করে ফ্রান্স সত্যিকারের কোন সুযোগই তৈরি করতে পারেনি, শেষপর্যন্ত তাই বেদনা সঙ্গী করেই মাঠ ছাড়তে হয় তাঁদের। অন্যদিকে স্পেন এখন শিরোপা থেকে মাত্র নব্বই মিনিট দূরে পৌঁছে গিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link