Social Media

Light
Dark

যে আকাশের মেঘ কেটে গেছে

গেল তিনটা বছর জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের জন্য ছিল এককথায় দুঃস্বপ্ন। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে না পারাটা এতদিন জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটারদের দু:স্বপ্নের মতো তাড়িয়ে বেড়িয়েছিল।

ads

২০১৮ সালে ঘরের মাঠে কোয়ালিফায়ার টুর্নামেন্ট খেলেও ২০১৯ বিশ্বকাপের টিকেট কাটতে ব্যর্থ হয় জিম্বাবুয়ে। ১৯৮৩ সালে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার পর এটাই ছিল বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই না করার তাঁদের প্রথম কোনো ঘটনা।

তারপর মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে আসে আইসিসির নিষেধাজ্ঞা। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে বোর্ডের ওপর সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে জিম্বাবুয়ের সদস্যপদ স্থগিত করে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। তাই সব ধরনের আইসিসি ইভেন্টে অংশ নেওয়ায় নিষেধাজ্ঞার খড়গ নেমে আসে তাঁদের ওপর। এ কারণে ২০১৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলতে পারেননি তাঁরা। ফলশ্রুতিতে ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটাও মিস করতে হয় রোডেশিয়ানদের।

ads

জিম্বাবুয়ের ওপর আইসিসির বেঁধে দেওয়া নিষেধাজ্ঞাটা অবশ্য খুব বেশিদিন টিকেনি। সবকিছু ঠিকঠাক হওয়ায় মাত্র তিনমাসের মাথায় সে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় আইসিসি।

সবশেষ তিন বছরে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া জিম্বাবুয়ে অবশেষে পায়ের নিচে মাটি খুঁজে পায় মাস তিনেক আগে। ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হবার মাধ্যমে তাঁরা ২০১৮ সালের ব্যর্থতার শাপমোচন করেন।

সেই থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ক্রেইগ আরভিনের দলকে। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করার পরপরই ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে জয় পায় জিম্বাবুয়ে। তারপর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাঁদেরকেই একটা ওয়ানডে ম্যাচে হারিয়ে বসেন তাঁরা। মাঝখানে নিজেদের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটায় ধবলধোলাই হলেও মাঠের খেলায় উন্নতির ছাপ ছিল স্পষ্ট। সিরিজের শেষ ম্যাচে জয়ের খুব কাছাকাছি গিয়েও অল্পের জন্য আর পেরে ওঠেননি তাঁরা।

দীর্ঘ ৩৬ বছর পর ওয়ানডে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে না পারা, আইসিসির নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আটকে পড়া, স্পন্সরের অভাবে প্রতি ম্যাচে গ্লু দিয়ে ছেঁড়া জুতা কোনোমতে সারিয়ে মাঠে নামা সেই জিম্বাবুয়ের এ বছরটা কী অসাধারণই না কাটছে! তারই ধারাবাহিকতায় আজ চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে জায়গা করে নিলো দলটা। এর আগে ২০১৪ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই নতুন ফরম্যাটটা চালু হবার পর কোনোবারই সুপার টেন বা সুপার টুয়েলভে জায়গা করে নিতে পারেনি জিম্বাবুয়ে।

বাংলায় একটা কথা আছে- ‘মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে।’ জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাকাশের মেঘ কেটে এখন যেন সে সূর্যটাই খিলখিল করে হাসছে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link