কখনো তিনি বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার, আবার কখনো তিনি পরিচয় বদলে হয়ে যান দলের সহকারী কোচ বা মেন্টর। কখনো তাকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে। আরো সহজে বললে কোন না কোন ভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাথে সব সময়ই ওতপ্রোত ভাবে জড়িত থাকেন খালেদ মাহমুদ সুজন।
কিন্তু অনেক দিন হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালকের দায়িত্ব পালন করলেও অন্য কোন দায়িত্বে ছিলেন না তিনি। সর্বশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছেন সুজন। এরপর শ্রীলঙ্কা সফরে দলের কোচ ছিলেন। দীর্ঘ বিরতির পর আবারো বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। আসন্ন শ্রীলঙ্কা সফরে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার করা হয়েছে সুজনকে।
সুজন এমন একটা সময় দায়িত্ব পেয়েছেন যখন একের পর এক সিরিজ হেরে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ দল। দেশের মাটিতে খর্ব শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হোয়াটওয়াশ হওয়ার পর নিউজিল্যান্ডে গিয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। তাই সুজনের এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ বিপর্যস্ত দলকে উজ্জীবিত করা।
গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে আজ সুজন জানিয়েছেন খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে উজ্জীবিত করবেন পুরো দলকে। আইপিএল খেলার জন্য এই সিরিজে থেকে ছুটি নিয়েছেন দলের সেরা তারকা সাকিব আল হাসান ও পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। তবে সুজন বিশ্বাস করেন তাঁরা না থাকলেও ভালো দল বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘আমার খেলোয়াড়দের সঙ্গে সব সময়ই ভালো একটা সম্পর্ক। আমি অনেক দিন ছিলাম, এখন হয়তো অনেক দিন পর আবার দলের সঙ্গে যাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি তাঁরা ঐ রকম শেপে আছে সবাই। আরও ফিট হয়েছে দেখলাম। তাই আমি বিশ্বাস করি, সে রকম উৎসাহী আমি ড্রেসিং রুমে গড়ে তুলবো। আমরা এক হয়ে খেলতে চাই। একটা বাংলাদেশ হয়ে খেলতে চাই। এটা ব্যক্তিগত না, এটা একটা দল।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি জানিনা ওরা উজ্জীবিত নাকি। হয়তো নিউজিল্যান্ডে ফলাফল ভালো না হওয়ায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে জিততে পারিনি। একটু হয়তো বা ব্যাকফুটে আছে। তবে সব সময় মনে করি বাংলাদেশ খুবই একটা সক্ষম দল, অবশ্যই আমাদের অনেক খেলোয়াড় নেই, তবে তার মানে এই নয় যে তাঁরা না থাকলে আমরা খারাপ দল। এখনও আমরা ভালো দল।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হারের পর দলের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ও ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেছিলেন ম্যাচ জেতার জন্য অভিজ্ঞদের পাশাপাশি পারফর্ম করতে হবে তরুণদেরও। সাকিব আল হাসানও একই কথা বলেছেন বিভিন্ন সময়। এবার এই দুজনের সাথে সুর মিলিয়েছেন সুজনও। নতুন এই ম্যানেজার জানিয়েছেন এ বিষয়ে তিনি সচেতন করবেন তরুণ ক্রিকেটারদের।
সুজন বলেন, ‘আমরা সব সময় বলি যে, তামিম, সাকিব, মুশফিক, রিয়াদ এদের কথা। অবশ্যই এদের দায়িত্ব অনেক। এরা অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। এরপর মুমিনুল অধিনায়ক। এদের অভিজ্ঞতা বেশি। তবে তরুণ খেলোয়াড়দের দায়িত্ব সমান থাকা উচিত। কারণ একটা ড্রেসিং রুম আমরা ভাগাভাগি করি, একটা দলের জন্য আমরা লড়াই করি। তরুণ খেলোয়াড়দের দায়িত্ব সম্পর্কে আমি সচেতন করতে চাই।’
জানিয়ে রাখা ভালো, আগামী ১২ এপ্রিল দুটি টেস্ট খেলতে শ্রীলঙ্কা সফরে যাবে বাংলাদেশ। এরপর ২১ এপ্রিল থেকে শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট এবং ২৯ এপ্রিল থেকে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। দুটি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।