দীর্ঘ এক বছর পর টেস্ট খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ খর্ব শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজ হলেও লম্বা বিরতি শেষে সাদা পোষাকে খেলতে নেমে চ্যালেঞ্জ ছিলো অনেক। ব্যাটসম্যানদের আত্মহত্যার দিনে শেষটা অন্তত স্বস্তির করতে পেরেছেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস।
প্রথম দিনে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৪২ রান করেছেন বাংলাদেশ দল।
দিনের প্রথম দুই সেশন সাদমান-শান্তর ভুল বোঝাবুঝি ও মমিনুলের আত্নহত্যায় পুরোপুরি নিজেদের করে নিতে না পারলেও শেষ বিকালে সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে বড় স্কোরের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে স্বাগতিকরা।
টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই সাদমানের বাউন্ডারি দিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশের ইনিংস। তবে উদ্বোধনী জুটিতে দলকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাদমান ইসলাম। দলীয় ২৩ রানে কেমার রোচের স্কিড করে অ্যাঙ্গেলে ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান রান করা তামিম।
তামিমের বিদায়ের পর উইকেটে এসে সাদমান ইসলামের সাথে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করতে থাকেন নাজমুল ইসলাম শান্ত। আত্মবিশ্বাসী শান্ত ও ধৈর্যশীল সাদমানের জুটি যখন জমে গিয়েছে তখনই ভুল বোঝাবুঝি হয় দুজনের। লং লেগের দিকে বল পাঠিয়ে সাদমান প্রথম রান সহজেই নেওয়ার পর দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রান আউটের ফাঁদে ফেলেন শান্তকে। এই দুজনের জুটিতে আসে ৪৩ রান। শান্তর ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে সাদমান ইসলামের সাথে জুটি বাঁধেন অধিনায়ক মমিনুল হক। দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ঘণ্টা নিরাপদেই কাটিয়ে দেন দুজন। ১৪ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন সাদমান। এই জুটি যখন বড় কিছুর স্বপ্ন দেখাচ্ছে তখনই উইকেটে থিতু হয়েও ওয়ারিক্যানের নিরীহ এক ডেলিভারিতে শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান মমিনুল ইসলাম। আউট হওয়ার আগে অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান।
বাজে শটে অধিনায়ক আউট হয়ে যাওয়ার পর আবারো ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। সাদমান ইসলাম ও মুশফিকুর রহিমের যৌথ ভাবনায় আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে রিভিউ না নিয়েই মাঠ ছাড়েন সাদমান ইসলাম। রিপ্লেতে দেখা যায় লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরে ছিলো বল। ফেরার ম্যাচে ৫৯ রান করে বিদায় নেন সাদমান।
সাদমানের বিদায়ের পরই দৃশ্যপটে আসেন বাংলাদেশের অন্যতম সফল মুশফিক-সাকিব জুটি। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান দেখে শুনে খেলতে থাকেন ক্যারিবিয়ান বোলারদের। ৫ম উইকেট জুটিতে দুজন যোগ করেন ৫৯ রান। এই জুটিতে যখন বড় কিছুর স্বপ্ন দেখছে স্বাগতিকরা তখনই প্রথম স্লিপে রাহকিম কর্নওয়ালের হাতে ধরা পড়ে ফিরে যান মুশফিকুর রহিম। মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ৩৮ রান।
মুশফিক যখন ফিরে যান তখনও দিনের খেলা বাকি ছিলো ২৫.৪ ওভার। লিটন দাসকে সাথে নিয়ে দিনের বাকি সময় উইকেটে কাটিয়ে দেন সাকিব আল হাসান। এই দুজন ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে যোগ করেছেন ৪৯ রান। সাকিব ৩৯ ও লিটন দাস ৩৪ রান নিয়ে আগামীকাল আবারো ব্যাট করতে নামবেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে জোমেল ওয়ারিক্যান ৩ টি ও কেমার রোচ ১ টি উইকেট শিকার করেন। সিরিজ শুরুর আগে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা রাহকিম কর্নওয়াল ২২ ওভারে ৫৬ রান দিয়ে থাকেন উইকেট শূন্য।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৪২/৫ (সাদমান- ৫৯, তামিম- ৯, শান্ত- ২৫, মুমিনুল- ২৬, মুশফিক- ৩৮ , সাকিব- ৩৯*, লিটন- ৩৪*; রোচ ১৬-৫-৪৪-১, গ্যাব্রিয়েল ১৭-৩-৫২-০, কর্নওয়াল ২২-১-৫৬-০, মেয়ার্স ৭-২-১৬-০, ওয়ারিক্যান ২৪-৫-৫৮-৩)।