ভারতে যেন পণ করেছে, বিশ্ব জয়ের আগে থামবে না একদন্ড। তাই তো টানা আট ম্যাচ খেলেও একবারও জিততে ভোলেনি তাঁরা; একের পর এক প্রতিপক্ষকে দুমড়েমুচড়ে দিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়ে টেবিল টপার হিসেবে। এখন পর্যন্ত যা দেখা গেলো, তাতে মনে হচ্ছে অতিমানবীয় কিছু না ঘটলে হয়তো অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হবে স্বাগতিক দল।
আর এই অপ্রতিরোধ্য পথ চলায় যারা সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন তাঁদের নিয়ে আলোচনা করা হলে নিশ্চিতভাবেই সবচেয়ে বেশি শোনা যাবে বিরাট কোহলি, মোহাম্মদ শামির নাম। কেউ কেউ হয়তো রবীন্দ্র জাদেজা কিংবা লোকেশ রাহুলের কথাও বলবেন।
অবশ্য আরো দুইটি বড় নাম আছে, যারা খানিকটা পিছিয়ে থাকবেন কোহলিদের তুলনায়। কিন্তু পারফরম তাঁরাও করেছেন, নিজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন নীরবে। ছায়ার মত ছুটতে থাকা এই দুজন হলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা আর পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ।
কোহলির দুর্দান্ত ফর্মের সামনে আসলে ম্লান হয়ে যায় সবকিছুই। তবে রোহিত যা করে চলছেন সেটাকে সেরার স্বীকৃতি না দিলে লজ্জা পেতে হবে। আগের বিশ্বকাপে রান মেশিন হয়ে ওঠা এই ব্যাটার এবার নিয়মিত বড় রান করেননি ঠিকই, কিন্তু প্রতি ম্যাচেই দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছেন।
পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগিয়ে বোলারদের আত্মবিশ্বাসে শুরুতেই আঘাত করেছেন তিনি। প্রথম দশ ওভারে কমপক্ষে ৫০ বল মোকাবিলা করেছেন এমন ক্রিকেটারদের মাঝে সবচেয়ে বেশি ১৩১ স্ট্রাইক রেট এই তারকার।
রোহিতের মতই নতুন বলে ভারতকে এগিয়ে দেয়ার কাজটা করছেন বুমরাহ। তিনি অবশ্য বল হাতে নিজের মুন্সিয়ানা দেখাচ্ছেন; সুইং আর ভ্যারিয়েশনে বিশ্বসেরা ব্যাটারদের নাভিশ্বাস তুলে দিচ্ছেন এই ডানহাতি। বলতে গেলে তাঁর প্রথম স্পেলে রানই নিতে পারছে না, মাত্র ২.৭৩ ইকোনোমিতে বল করছেন তিনি। আর সেই চাপের বদৌলতে ‘আর্লি ব্রেক থ্রু’ পাচ্ছে ভারত।
পরিসংখ্যান ঘাঁটলে রোহিত, বুমরাহরা পিছনেই থাকবেন। সর্বোচ্চ রান কিংবা সর্বোচ্চ উইকেট কোথাও সেরা তিনে নেই তাঁরা। আট ম্যাচ খেলে ভারতীয় কাপ্তানের সেঞ্চুরি কেবল একটি, আর বুমরাহ এখনো ফাইফারের স্বাদ পাননি। অথচ কি ঈর্ষণীয় ভাবেই দলের জয়ে অবদান রাখছেন দুজনে; তাঁদের এমন পারফরম্যান্স বাকিদের কাজও সহজ করে দিচ্ছেন অনেকটাই।
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলেন একসাথে, ভারতের আকাশী-নীল জার্সিতেও তাই। এবার ঘরের মাঠে একই কাজ করছেন ভিন্ন দুই পথে; নিজেদের এই ধারাবাহিকতা আর কয়েকটা দিন ধরে রাখতে পারলেই ওয়াংখেড়ের স্মৃতি ফিরে আসবে আহমেদাবাদে।