৪৯ নম্বর ওভারের প্রথম বল, গর্জাতে থাকা ইডেন গার্ডেন্স যেন একটু চুপ করল। পাশেই কাজ করছিলাম, ভয় পেয়ে মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলাম রবীন্দ্র জাদেজা বাউন্ডারি মেরেছেন৷ শেষের ওভারগুলোতে দর্শকদের এমনিই চাহিদা থাকে চার-ছক্কার, তাও এরকম শান্তি? শেষ কবে দেখেছি এরকম?
যতটুকু মনে পড়ছে, এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শচীনের ২০০ রানের ইনিংসের সময়ই। সেবার মহেন্দ্র সিং ধোনির একের পর এক ছক্কায় বিরক্ত হচ্ছিল স্টেডিয়াম। প্রাণপনে চাইছিল, স্ট্রাইকে আসুন ক্রিকেট ঈশ্বর, প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ২০০ রানের ইনিংসের মালিক হন মাস্টার ব্লাস্টার খ্যাত শচীন টেন্ডুলকার।
কোহলি ক্রিকেট ঈশ্বর নন, শচীনের মতো একার কাঁধে দীর্ঘদিন ধরে দলকে বয়েও নিয়ে চলেননি। সমালোচকরা বলেন, তাঁর যুগের ক্রিকেট অনেকটাই সহজ, বোলিং ভীষণ নির্বিষ! কোহলি নিজেও তুলনা চান না, ইন্টারভিউতে স্যুপে চুমুক দিতে দিতে বলেন, ‘এসবের কোনও মানেই হয় না, আমি যাঁর খেলা টিভিতে দেখে ব্যাট ধরেছিলাম, তাঁর সঙ্গে তুলনা কীসের?’
২০১১ সালে বিশ্বকাপ জয়ের দিনে শচীনকে কাঁধে তুলে গোটা স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণের পর বিরাট বলেছিলেন, ‘শচীন এতবছর ধরে দলকে কাঁধে করে টেনেছেন। এবার আমাদের পালা।’ দিল্লীর সেই ছেলে কথা রেখেছেন, গত দেড় দশকে ভারতের সবচেয়ে ভরসার ব্যাট বিরাট কোহলি।
এবার কলকাতার নন্দন কাননে ক্রিকেটে ৪৯ নম্বর সেঞ্চুরি করে ছুঁয়ে ফেললেন তাঁরই রোল মডেল শচীনকে। তিন বছরের খরা কাটিয়ে একের পর এক সেঞ্চুরি আসছে ব্যাট থেকে, ১০০ নং সেঞ্চুরিও দূরের মাইলস্টোন মনে হচ্ছে না৷ নিজের শেষ বিশ্বকাপ জিতেই মাঠ ছেড়েছিলেন শচীন।
এবার কোহলিদের পালা, খুব করে চাইব দলের নতুন প্রজন্ম বিশ্বকাপ জিতে কোহলি-রোহিতকে কাঁধে তুলে গোটা স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ করুক! পরম্পরা, প্রতিষ্ঠা, অনুশাসন বজায় থাকুক ভারতীয় ক্রিকেটের।