মামুর ব্যাটাদের ঘিরে লিয়েছেন শান্ত

অভিষেক টেস্ট ম্যাচেই জয়। সাদা পোশাকের নতুন শুরুতেই দারুণ এক কীর্তি। নাজমুল হোসেন শান্ত জোর গলায় টেস্ট শুরুর আগেই বলেছিলেন, জিততে চান। নিউজিল্যান্ডের মত দলের বিপক্ষে এই জিততে চাওয়ার প্রবল বিশ্বাস খুব কম অধিনায়কই দেখিয়েছেন। শান্ত সেই সাহসটা দেখিয়েছেন অধিনায়কত্বের অভিষেক ম্যাচেই।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের প্রথম দুই চক্রে বাংলাদেশের জয় ছিল মোটে একটি। অথচ নতুন চক্রের শুরুতেই এলো জয়। তাও আবার এক সময়ের চ্যাম্পিয়ন দলের বিপক্ষে। ২০১৯-২১ সাইকেলের চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডের দলের মধ্যে এই দলটা খুব বেশি তফাৎ নেই।

তাইতো শান্তর অধিনায়ক হিসেবে পাওয়া প্রথম জয়টা নিশ্চিতরুপেই বড় এক জয়। অধিনায়ক হিসেবে গোটা দলকে এক সুতোয় তিনি বাঁধতে পেরেছেন। নিজের খেলোয়াড়দের সক্ষমতার যথাযথ ব্যবহার করতে পেরেছেন। তাইতো জয়ী অধিনায়কের মুকুট উঠেছে তার হাতে।

তিনি যে স্রেফ খেলোয়াড়দের ব্যবহার করেই ক্ষান্ত ছিলেন তাও কিন্তু নয়। তিনি নিজেও পারফরম করেছেন। ব্যাট হাতে শতকের দেখা পেয়েছেন তিনি। প্রতিপক্ষের পরিকল্পনায় আঘাত করে ব্যাটিং করেছেন। কখনো আগ্রসন দেখিয়েছেন, কখনো আবার একেবারে ‘রক সলিড ডিফেন্স’। তার করা শতকই তো জয়ের লক্ষ্যমাত্রা কঠিন করে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ডের জন্যে।

অধিনায়ক হিসেবে তিনি ভারতের কিংবদন্তি অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি-কে বেশ পছন্দ করেন। ধোনি তার ক্যারিয়ারে সবকিছুই জিতেছেন। সকল টুর্নামেন্টেই শিরোপার ছোঁয়া পেয়েছেন ধোনি। শান্ত তাকেই মানছেন রোল মডেল। শান্ত মস্তিষ্কের ধোনিকে দেখেই যেন শান্ত শিখেছেন ঠাণ্ডা মাথায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করবার কৌশল।

তাইতো টেস্টের পুরো পাঁচদিনেই তিনি ছিলেন চনমনে। প্রতিটা মুহূর্ত জয়ের জন্যে খেলেছেন। কিউই ব্যাটারদের মানসিকভাবে চাপে রেখেছেন তার ফিল্ডারদের ক্রমাগত জায়গা পরিবর্তন করে। দলকে উজ্জীবিত রাখতে বলেও ফেলেছেন, ‘মামুর ব্যাটাকে ঘিরে লে।’

প্রয়োজনের সময়ে ঠিকঠাকভাবে পার্টটাইমার বোলারদের ব্যবহারটাও করেছেন শান্ত। মুমিনুল হক তাইতো এনে দিতে পেরেছেন গুরুত্বপূর্ণ সব উইকেট। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে তো সৌরভ রেখেছিলেন দারুণ ভূমিকা।

এই সব গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বোলারদের সঠিক ব্যবহারটা যেন তিনি শিখেছেন সাকিব আল হাসানের কাছ থেকে। দেশের মধ্যে অধিনায়ক হিসেবে সাকিবই যে শান্তর রোল মডেল। তার কাছ থেকেই বিরুপ পরিস্থিতির মাঝেই জটিল সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার দীক্ষা নিয়ে রেখেছেন শান্ত।

তবে শান্ত অবশ্য ছাপিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় দেখাচ্ছেন। তিনি ভরসা জোগাচ্ছেন। তার অধিনায়কত্বের ভিন্ন এক রুপ প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। এখনও অবশ্য লম্বা পথ বাকি। তবে দেশের সেরা অধিনায়কদের মত সাদা পোশাকের শুরুটা দূর্দান্তই হল শান্তর। সাকিব, মাশরাফিদের মত টেস্ট অধিনায়কত্বের শুরুতেই পেয়েছেন জয়ের দেখা। তবে জয় বিচারে শান্তর জয় থেকে যাবে সবার উপরেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link