পাকিস্তানের বিপক্ষে সিডনি টেস্ট দিয়ে লাল বলের ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছেন ডেভিড ওয়ার্নার। বাঁহাতি এই ওপেনার দুর্দান্ত এক বিশ্বকাপ কাটালেও টেস্টের ফর্ম পড়তির দিকে। ২০১৯-২০ মৌসুমের পর থেকে টেস্টে ওয়ার্নারের গড় মাত্র ২৮। ২০২০ সালের পর টেস্টে শতক মাত্র একটি। এরপরও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া মাঠ থেকে বিদায় নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে ওয়ার্নারকে।
তবে ওয়ার্নারকে এমন আনুষ্ঠানিক বিদায় দেওয়ার বিষয়টি পছন্দ হয়নি ওয়ার্নারের এক সময়কার সতীর্থ অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার মিশেল জনসনের। ‘দ্য ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ান’-এ লেখা এক কলামে ওয়ার্নারকে রীতিমত ধুয়ে দিয়েছেন সাবেক এ ক্রিকেটার। মিশেল জনসনের মূল ক্ষোভের জায়গাটা হচ্ছে, বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির সাথে যুক্ত থাকা এক ক্রিকেটারের বিদায় নিয়ে কেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এত বড় আয়োজন করবে?
২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিং করে ধরা পড়েছিলেন ক্যামেরন ব্যানক্রফট, ওয়ার্নার আর স্টিভেন স্মিথ। এর দায়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া সেই ম্যাচের অধিনায়ক স্মিথ ও সহ-অধিনায়ক ওয়ার্নারকে এক বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করেছিল। ব্যানক্রফটকে নিষিদ্ধ করেছিল ৯ মাসের জন্য। একই সঙ্গে ওয়ার্নারকে অধিনায়কত্বে আজীবন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে জানা গিয়েছিল, ওয়ার্নারের পরিকল্পনাতেই সে টেস্টে বল টেম্পারিংয়ের কৌশল বেছে নেওয়া হয়েছিল।
এই কেলেঙ্কারির কথা টেনেই মিশেল জনসন তাঁর কলামে লেখেন, ‘যদিও ওয়ার্নার একা জড়িত ছিল না। তবে ওই সময় ওয়ার্নার দলে সিনিয়র সদস্য ছিল। এমন একজন ছিল, যে নেতা হিসেবে তার ক্ষমতা দেখাতে পছন্দ করত। এখন ও এমনভাবে অবসর নিচ্ছে, যেটা আমাদের দেশের প্রতি একই রকম ঔদ্ধত্য ও অসম্মান। এটার জন্য এত বড় আয়োজন কিংবা সুযোগ দেওয়া কোনোটাই অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতিতে যায় না।’
এরপর ফর্ম নিয়ে তিনি যোগ করে লেখেন, ‘আমরা এখন ডেভিড ওয়ার্নারের বিদায়ী টেস্ট সিরিজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। কেউ কি বলতে পারবেন, কেন? কেন ফর্মের সঙ্গে লড়াই করা একজন ওপেনার নিজেই নিজের অবসরের তারিখ ঠিক করে? অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের কেন্দ্রে থাকা একজন খেলোয়াড়কে কেনই–বা নায়কোচিত বিদায় দিচ্ছি আমরা?’
ওয়ার্নার প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ার্নার একটা ডাবল সেঞ্চুরি করেছিল। কিন্তু এটাই ছিল গত কয়েক বছরে ওর খেলা একমাত্র বড় ইনিংস। অ্যাশেজের আগে ১৭ ইনিংসের মধ্যে সে একবারই ৫০ রানের কোটা পার হতে পেরেছে। এমন পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট কতটা অফফর্মে ছিল সে।’