নাভিশ্বাস উঠে যাওয়া বাইশ গজে দাঁড়িয়ে গ্লেন ফিলিপস আক্রমণের গান শুনিয়ে গেলেন। যেখানে ব্যাটারদের জন্যে এক একটি বল অগ্নি-পরীক্ষা, সেখানেই একটা পঞ্চাশোর্ধ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে গেলেন গ্লেন ফিলিপস।তবে নামের ভারের সাথে ৮৭ রানের ইনিংসে তৃপ্তি মানানসই নয়।
কিন্তু মিরপুরের উইকেটে এই রানই যে বিশাল বড় আশির্বাদ। এই রানেই অস্বস্তির তীব্র জ্বালার আগুনে একটু খানি জলের জোগান। রাজ্যের চাপ সামাল দিয়ে, ভয়ানক এক উইকেটে বাংলাদেশের স্পিনারদের বিপক্ষে দারুণ ভঙ্গিমায় ব্যাটিং করে গেছেন ফিলিপস।
স্রোতের বিপরীত মুখে, নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন যে বেজায় কষ্টসাধ্য এক কাজ। ৯ চার আর ৪ ছয়ের ইনিংসে সেই কাজটা সহজ করতে চেয়েছেন ফিলিপস। দলকে লজ্জার হাত থেকে বাচিয়েছেন তিনি। ১৮০ রানে শেষ হওয়া ইনিংসটির প্রায় অর্ধেক রানই এসেছে তার ব্যাট থেকে।
চলতি পথে তিনি গড়েছেন গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু জুটি। প্রথম দিনের খেলার শেষে ফিলিপসের সতীর্থ মিচেল স্যান্টনার ছোট ছোট কিছু পার্টনারশীপের প্রত্যাশা করেছিলেন। একই রকম সুর নিশ্চয়ই বইছিল নিউজিল্যান্ডের ড্রেসিং রুমে। সেই সুরের সাথে তাল মিলিয়ে দলের চাহিদা পুরন করেছেন ফিলিপস।
ড্যারিল মিচেলের সাথে ৪৯ রানের জুটি। এরপর আবার কাইল জেমিসনকে পাশে নিয়ে ৫৫ রান যোগ করেন দলের স্কোরবোর্ডে। ১০০ রানের আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা ছাপিয়ে তিনি দলকে এনে দিয়েছেন ৮ রানের লিড। তবে দলের চাহিদা পূরণের গল্প স্রেফ ব্যাট হাতেই যে লেখেননি তিনি।
নিজেকে যেন নতুন এক রুপেই হাজির করেছেন ফিলিপস। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে যেন পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার বনে গেছেন ডান-হাতি এই ব্যাটার। ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন তিনি বাংলাদেশের তিন ব্যাটারকে দেখিয়েছেন প্যাভিলনের পথ।
এরপর ব্যাট হাতে খেলে ফেললেন ম্যাচ ও মান বাঁচানো এক ইনিংস। ব্যাটিং ইনিংসের শেষটায় বেজায় চটেছিলেন ফিলিপস। এক বন্ধুর এক উইকেটে শতকের খুব কাছে থেকেই যে ফিরতে হয়েছে তাকে। শরিফুল ইসলামের দারুণ এক আউটসুইং বলে ‘কট বিহাইন্ড’ ফিলিপস।
তবে নিজের উপর যতটা না বিরক্ত ছিলেন ফিলিপস, তার থেকেও বিরক্তি ছিল তার মাঠের কোন এক অসঙ্গতিতে। তিনি আউট হওয়ার পরই তৃতীয় আম্পায়ার ঘুরে দেখেছেন সাইড স্ক্রিনের আশপাশ। সম্ভবত সেখানেই বেঁধেছিল গণ্ডগোল। যাতে করে মনোযোগের হেরফের আর আউট হয়ে ফেরা ফিলিপসের।
আউট হওয়ার আগেও ২৮ রানের একটা জুটি গড়েন তিনি। তাকে সঙ্গ দেন অধিনায়ক টিম সাউদি। ফিলিপসের বিদায়ের পরপরই প্যাভিলনের পথে হেঁটেছেন অধিনায়ক সাউদি।