তৃতীয় টেস্টে শাহীন শাহ আফ্রিদি বিহীন পাকিস্তানের বোলিং লাইনআপকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই সিরিজ অভিষেক হওয়া আমির জামাল। বল হাতে ছয় উইকেট নেয়ার পাশাপাশি ৮২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসও খেলেছেন। আর এই ইনিংস শেষে ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে তাঁর দেখা হয়ে যায় পুরনো বন্ধু প্যাট লরেন্সের সাথে; লরেন্স তখন গ্যালারিতে বসে হাততালি দিতে ব্যস্ত।
সাত বছর আগে হকসবেরি ক্রিকেট ক্লাবে দুজনেই খেলেছিলেন একসাথে; ছিলেন একই বাসায়। সেসময় নতুন নতুন অস্ট্রেলিয়ায় আসা পাক বোলারের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়তে সময় লাগেনি তাঁর। তাই তো বন্ধুর সাফল্যে মুগ্ধ তিনি। এই অজি বলেন, ‘সে যা করেছে তাতে আপনি আবেগতাড়িত হতে বাধ্য। আপনি জানেন – সে আমাদেরই একজন, সে আমাদের ভাই।’
ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি ঘরবাড়ির তৈরির কাজও করতেন লরেন্স। অতীতের স্মৃতি হাতড়ে তিনি বলেন, ‘জামাল খুবি বন্ধুসুলভ। প্রথম প্রথম সে লজ্জা পেতো, এরপর আস্তে আস্তে স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে মানিয়ে নিয়েছে। সে আমাদের জন্য প্রায় রান্না করতো, আমার সঙ্গে কাজও করতো। তবে কঠিন কিছু তাঁকে করতে দিতাম না, আবার তাঁর প্রার্থনার সময় হলে মনে করিয়ে দিতাম।’
জামাল পাকিস্তানে চলে আসার পরেও নিয়মিত তাঁরা কথা বলেছেন, অনেক অপেক্ষার গত বছর নিজের অভিষেকের খবর বন্ধুকে দিয়েছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়াতেই হতে যাচ্ছে তাঁর অভিষেক, লরেন্সও তাই বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে চলে এসেছেন ভাইকে নিয়ে।
অস্ট্রেলিয়ার দর্শকদের মাঝে বসেই একসময়ের সতীর্থের প্রতি সমর্থন জানিয়ে গিয়েছিলেন এই অজি যুবক। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা অস্ট্রেলিয়ানদের সাথেই ছিলাম। যখনই সে চার বা ছক্কা মারতো, আমরা চিৎকার করে উঠতাম। তখন সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকতো। তাঁর জন্য আমি সত্যি খুশি। তাঁকে দেখে ভালো লাগছে। অবশেষে সে খ্যাতির দেখা পেয়েছে।’
জামালের এমন অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে সবাই অবাক হলেও স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন লরেন্স এবং হকসবেরি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট রিচার্ডস টিম্বস। তিনি বলেন, ‘আসলে যখন সে আমাদের কাছে এসেছিল, আমরা বুঝতে পেরেছিলাম সে একজন উদ্বোধনী বোলার হবে এবং সম্ভবত ছয় নম্বর ব্যাটার হবে। কিন্তু মৌসুম যত এগিয়েছে, তাঁর ব্যাটিং সক্ষমতা তত সামনে এসেছে। সে পাওয়ার হিটার ছিল, তাই প্রচুর ছক্কা ও চার মারতে পারতো। তাঁর স্ট্রাইক রেট বরাবরই খুব ভালো ছিল।’