সকল বিতর্ক আর সমালোচনা ছাপিয়ে নিজের কাজে বড্ড বেশি মনোযোগী সাকিব আল হাসান। তিনি যে ক্ষেত্রেই পা রেখেছেন, সেখানেই দেখিয়েছেন মুন্সিয়ানা। নির্বাচনের মাঠেও সাকিবকে যায়নি আটকানো। তবে অপ্রতিরোধ্য সাকিবের পথচলার শুরু তো ক্রিকেট ময়দানে। পেশায় যে তিনি এখনও একজন ক্রিকেটার। পেশাদারীত্বের সাথে কখনোই আপোষ করেননি সাকিব।
তাইতো নির্বাচনের ঠিক পরদিনই সাকিব আল হাসান ব্যাট হাতে ফিরেছেন হোম অব ক্রিকেটে। শৈশবের কোচ নাজমুল আবেদীনকে সাথে নিয়ে করেছেন অনুশীলন। এর ঠিক পরদিন দলগত অনুশীলনে হাজির তিনি। সামনেই যে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দশম আসর মাঠে গড়াবে। তাইতো নিজেকে প্রস্তুত করতে পুরোদমে লেগে পড়েছেন সাকিব।
এমনকি নির্বাচনী প্রচারণার মাঝেও তিনি নিজের ফিটনেসের কাজ করে গেছেন মাগুরাতে। ঠিক এখানটায় সাকিব মাত দিয়ে দেন সবাইকে। ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেনি বিপিএলেও। সেখানেও নিজের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন তিনি। প্রায় প্রতিটা আসরেই ব্যাটে বলে সমানতালে পারফরম করেছেন সাকিব।
তাইতো সর্বোচ্চ সংখ্যকবার পেয়েছেন টুর্নামেন্ট সেরার পুরষ্কার। মোট চারবার তিনি হয়েছেন টুর্নামেন্ট সেরা। সামনেই যেহেতু আরও একটি আসর, সেখানেই নিশ্চয়ই সেরা হওয়ার দৌড়েই দেখা যাবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে।
এখন পর্যন্ত বিপিএলে ১০০ খানা ম্যাচে মাঠে নেমেছেন সাকিব। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের তালিকায় রয়েছেন এক নম্বরে। এমনকি রান সংগ্রাহকদের তালিকাতে তার অবস্থান সেরা পাঁচে। তিনি বরাবরই দলের জয়ের অবদান রাখার চেষ্টা করে যান।
সে প্রচেষ্টায় সমৃদ্ধ হয়েছে তার ব্যক্তিগত পরিসংখ্যানও। এখন অবধি বিপিএলে ২১৪২ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। স্ট্রাইকরেটও তার বেশ ভাল, ১৩৭.৩৯। শুধু তাই নয়, বল হাতে তিনি বেশ দূরত্ব রেখেই অবস্থান করছেন এক নম্বরে। ১৩২টি উইকেট রয়েছে তার নামের পাশে। যেখানে দ্বিতীয় স্থানে থাকে রুবেল হোসেনের সাথে ফারাক ২২ উইকেটের।
শুধু তাই নয়, সাকিব তিনবারের চ্যাম্পিয়নও বটে। ঢাকার হয়ে তিনবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেয়েছেন বা-হাতি এই অলরাউন্ডার। প্রথম দুই আসরে তো দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে সম্মুখভাগ থেকে রেখেছেন অবদান। সেই দুই আসরেই টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছিলেন সাকিব।
২০২২ সালেও টুর্নামেন্ট সেরার খেতাব পান তিনি। সেবার ফরচুন বরিশালকে নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনল অবধি নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ফাইনালে শিরোপা হাতছাড়া হয় সাকিবের। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে হারতে হয়েছিল সাকিবের দলকে। সর্বশেষ আসরে অবশ্য খানিকটা নিষ্প্রভ ছিলেন সাকিব।
তবুও ব্যাট হাতে সেরা পাঁচেই ছিল অবস্থান তার। কিন্তু বলহাতে সময়টা খুব একটা ভাল কাটেনি সাকিব আল হাসানের। তাইতো এদফা নিজের সক্ষমতার সর্বোচ্চটুকুই নিঙড়ে দিতে চাইবেন সাকিব আল হাসান। তাছাড়া আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্যেও নিজেকে প্রস্তুত রাখতে চাইবেন সাকিব। সেকারণেই বিপিএলের মঞ্চে ভাল করবার তাগিদ তার থেকেই যাচ্ছে।
এছাড়াও দল বদলে নতুন ফ্রাঞ্চাইজির সাথে যুক্ত হয়েছেন সাকিব। রংপুর রাইডার্সকে নেতৃত্ব দেবেন তিনি। আরও একটিবার শিরোপার স্বাদ অবশ্য নিতেই চাইবেন সাকিব আল হাসান। যেমনটি তিনি পেয়েছেন নির্বাচনের মাঠে।