গত এক বছরের বেশি সময় ধরে তারুণ্যের শক্তিতে ভর করে এগিয়েছে ভারতের টি-টোয়েন্টি দল। আধুনিক ক্রিকেটের সাথে পাল্লা দিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছে তাঁরা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপের আগে হুট করাই পুরনো খোলসে ঢুকে গেলো টিম ম্যানেজম্যান্ট, টি-টোয়েন্টিতে ‘বেমানান’ ভেবে যাদের বিবেচনার বাইরে রাখা হয়েছিল সেই রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলিকে পুনরায় দলে ফেরানো হয়েছে।
যশস্বী জসওয়াল, শুভমান গিল, রুতুরাজ গায়কোয়াড়, তিলক ভার্মাদের মত উদীয়মান ব্যাটাররা গত এক বছর ভারতের টপ অর্ডার সামলেছেন। তাঁদের মধ্যে ডান-বাম কম্বিনেশন ছিল, শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলেছিল। কিন্তু এখন রোহিত-বিরাট ফেরায় টপ অর্ডারে দুইটি স্পট নিশ্চিত, ফলে শঙ্কা জেগেছে সামনের দিনগুলোতে আগের মত উড়ন্ত সূচনা পাবে টিম ইন্ডিয়া?
২০২১ ও ২০২২ সালে দুজনের সেট হয়ে বড় ইনিংস খেলার মানসিকতার কারণে পিছিয়ে পড়েছিল দল। সেই ভুল এড়াতেই গত প্রায় চৌদ্দ মাস নতুন করে সবকিছু গুছিয়েছিলেন নির্বাচকরা। কিন্তু নিজেদের পরিশ্রম নিজেরাই পন্ড করে দিয়েছেন।
গত কয়েকটি আইপিএলে বলার মত কিছু করতে পারেননি ভারতীয় অধিনায়ক। সর্বশেষ ২০১৩ সালে এক আসরে ৪০০ রান করতে পেরেছিলেন তিনি; গত দুই বছরে তো ব্যাটিং গড় নেমে এসেছে ২০ এর ঘরে! কোহলি অবশ্য বড় রান করেছেন, কিন্তু তাঁর স্ট্রাইক রেট মোটেই মানানসই নয়।
মিডল ওভারেও দ্রুত রান তুলতে ব্যর্থ এই দুই ডানহাতি – গত কয়েক বছরে কোহলি মিডল ওভারে মাত্র ১১৬ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন আর রোহিতের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ১২১! স্পিন বলে তাঁদের অবস্থা আরো করুণ, দুজনের স্ট্রাইক রেট যথাক্রমে ১০৫ ও ১১৩.৮৯।
হার্দিক পান্ডিয়া এবং সুরিয়াকুমার যাদব ফিট হয়ে উঠলে একাদশে তাঁদের জায়গা নিশ্চিত। ওপেনিংয়ে জসওয়াল বা গিলের যেকোনো এক জনকে রাখতেই হবে। উইকেটকিপার হিসেবে জীতেশ শর্মা বা সাঞ্জু স্যামসন থাকবেন। সবমিলিয়ে ব্যাটিং লাইন আপের সাত জনের ছয় জনই অটো চয়েজ, অথচ বাইরে আছেন শ্রেয়াস আইয়ার, রিঙ্কু সিং, তিলক ভার্মা, রুতুরাজের মত পরীক্ষিত তরুণ পারফর্মাররা।
আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের সিরিজ তাই হতে যাচ্ছে দুই অভিজ্ঞের জন্য অগ্নি পরীক্ষা। স্পিন নির্ভর একটি দলের বিপক্ষে – তাঁরা কেমন ব্যাটিং করেন সেটাই নির্ধারণ করে দিবে তাঁদের ভবিষ্যৎ; তবে পারফরম্যান্স যাই হোক, সময়ের সাথে এই নিয়ে আলোচনা বাড়বে নি:সন্দেহে।