মেসি, দ্য বেস্ট ফরএভার

লন্ডনে জমকালো অনুষ্ঠান। ‘ফিফা দ্য বেস্ট’-অ্যাওয়ার্ড বলে কথা। দর্শক সারি থেকে শুরু করে সঞ্চালনাতেও তারকার উপস্থিতি। ব্রিটিশ ক্রীড়া সাংবাদিক, সম্প্রচারক ও সঞ্চালক রেশমিন চৌধুরীর সঙ্গে সঞ্চালনায় ছিলেন ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার থিয়েরি অঁরি। ম্যানচেস্টার সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা থেকে ব্রাজিলের কিংবদন্তি রোনালদোও জমকালো এ অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে ছিলেন। কিন্তু ছিলেন না ফুটবল মহাতারকা লিওনেল মেসি।

তবে মেসির শূন্যতা মিটে গেল ওই এক ঘোষণাতেই। আর্লিং হাল্যান্ড ও কিলিয়ান এমবাপ্পেকে পেছনে ফেলে ২০২৩ সালের ফিফা বর্ষসেরা পুরুষ ফুটবলারের স্বীকৃতি ‘দা বেস্ট ফিফা মেন’স প্লেয়ার অ্যাওয়ার্ড’ জিতলেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় এবং রেকর্ড অষ্টমবারের মতো ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের স্বীকৃতি পেলেন মেসি।

কাতার বিশ্বকাপে অসাধারণ পারফরম্যান্স দিয়ে আর্জেন্টিনার পরম আরাধ্য বিশ্বকাপখরা ঘুচিয়ে ছিলেন দ্য এলএমটেন। তবে সে বিশ্বকাপ এবারের পুরস্কারের জন্য বিবেচিত সময়ের মধ্যে ছিল না। সেরা খেলোয়াড় নির্বাচনে ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ২০ অগাস্ট পর্যন্ত সময় বিবেচনায় নেওয়া হয়। আর তাতে মেসির সাথে জায়গা পেয়েছিলেন আর্লিং হাল্যান্ড ও কিলিয়ান এমবাপ্পে।

এবারের ফিফা দ্য বেস্ট অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার দৌড়ে বাকি দুজনের চেয়ে কোনো অংশেই এগিয়ে ছিলেন না মেসি। বরং ম্যানচেস্টার সিটির ট্রেবলজয়ী স্ট্রাইকার হলান্ডকে এগিয়ে রাখা হচ্ছিল ফিফা দ্য বেস্ট অ্যাওয়ার্ড জেতার দৌড়ে। ২০২২-২৩ মৌসুমে সিটির জার্সিতে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে নরওয়ের এ স্ট্রাইকার করেন ক্লাব রেকর্ড ৫২ গোল। আর ফিফার বেঁধে দেওয়া সময়ে ৩৩ ম্যাচে তার গোল ছিল ২৮টি।

তবে পিএসজির সর্বশেষ লিগ জয়ের পথে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন মেসি। লিগ ওয়ানে সর্বোচ্চ গোলে সহায়তা ছিল তাঁর। ছিলেন লিগ ওয়ানের সেরা একাদশেও। এমনকি সে মৌসুমে এ লিগে সেরা বিদেশী ফুটবলারও নির্বাচিত হন তিনি। এর পিএসজি ছেড়ে গত জুলাইয়ে মেজর সকার লিগের দল ইন্টার মায়ামিতে যোগ দিয়েই রেখেছিলেন সাফল্যের ছাপ। লিগস কাপে ৭ ম্যাচে করেন ১০ গোল। আর এতেই প্রথমবারের মতো শিরোপার মুখ দেখে দলটি। মূলত এসব বিবেচনাতেই শেষ পর্যন্ত ফিফা দ্য বেস্টের পুরস্কার উঠেছে মেসির হাতে।

অবশ্য কাকতালীয়ভাবে এ পুরস্কারও বিশ্বকাপ ফাইনালের মতোই টাইব্রেকারে গড়িয়েছে। ভোটাভুটিতে হাল্যান্ড ও মেসি, দুজনই সমান ৪৮ স্কোরিং পয়েন্ট পেয়েছিলেন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় দলের অধিনায়কদের পছন্দের তালিকায় সবচেয়ে বেশিসংখ্যকবার প্রথমে থেকে এগিয়ে যান মেসি। মেসির সাবেক পিএসজি সমর্থক ৩৮ স্কোরিং পয়েন্ট পেয়ে হয়েছেন তৃতীয়।

১৯৯১ সাল থেকে শুরু হওয়া এ পুরস্কার মেসি প্রথম জেতেন ২০০৯ সালে। এরপর ২০১০, ২০১১, ২০১২ ও ২০১৫ মিলিয়ে আরো ৪ বার এই ফিফার বর্ষসেরা নির্বাচিত হন আর্জেন্টাইন এ ফুটবলার। তবে নতুন নামে ফিফা দ্য বেস্ট মেসি প্রথম জেতেন ২০১৯ সালে। এরপর ২০২২ ও ২০২৩, টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফিফা দ্য বেস্ট অ্যাওয়ার্ড জিতলেন দ্য এলএমটেন।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link