প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারের অভিষেক হয়েছিল ১৫ বছর ২৩০ দিন বয়সে, আরেক কিংবদন্তি যুবরাজ সিং ১৫ বছর ৫৭ দিন বয়সে চারদিনের ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন প্রথমবার। সবচেয়ে কম বয়সে অভিষেক হওয়ায় ক্ষেত্রে দুই কিংবদন্তির রেকর্ড এবা ভেঙে দিয়েছেন ১২ বছরের ছোকড়া।
বৈভব সুরিয়াভানসি নামের এই কিশোর মাত্র ১২ বছর বয়সে রঞ্জি ট্রফিতে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। বিহারের হয়ে অভিষেক ম্যাচে ১৯ এবং ১২ রান করেছেন তিনি, তবে সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন শচীন ও যুবরাজ। তাঁদের রেকর্ড ভাঙা তো আর মুখের কথা নয়।
এই ব্যাপারে বৈভব বলেন, ‘আমি এই রেকর্ড সম্পর্কে জানতাম না। প্রথম ইনিংসে আউট হওয়ার পর যখন ড্রেসিংরুমে ফিরে আসি, তখন আমার সতীর্থরা এই খবরটি জানায়। আমি সত্যিই খুশি হয়েছিলাম যে আমি এখন তাঁদের (শচীন, যুবরাজ) সাথে আমার নাম দেখতে পাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা আমার জন্য অনেক বড় বিষয়। আমি যখন আমার অভিষেক ক্যাপ পেয়েছি তখন আমি রোমাঞ্চ অনুভব করেছি। তবে একইসাথে নার্ভাসও ছিলাম কিন্তু আমার সিনিয়র, সতীর্থ এবং টিম ম্যানেজমেন্ট আমার প্রতি আস্থা রেখেছিল। যখন প্রথম বল মোকাবিলা করেছিলাম তখন পুরো ড্রেসিংরুম হাততালি দিয়েছে। এরপর সবকিছু স্বাভাবিক মনে হয়েছিল।’
স্থানীয় টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে আলো কেড়েছিলেন এই উদীয়মান ব্যাটার। এমনি একটি টুর্নামেন্টে ৮০০ এর বেশি রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন তিনি; এরপর ভিনু মানকাড ট্রফিতে পাঁচ ম্যাচ খেলেই করেন ৪০০ রান। এজন্যই রাজ্য দলের ক্যাম্পে ডাক পেতে দেরি হয়নি তাঁর৷
এসব নিয়ে এই বাঁ-হাতি বলেন, ‘অনেক সিনিয়র এবং সতীর্থ আমাকে সমর্থন করেছিল। প্রেসিডেন্ট রাকেশ তিওয়ারি স্যার অনেক সাহায্য করেছেন এবং ক্রিকেটীয় চাহিদা পূরণ করেছেন। তিনিই আমাকে রঞ্জি ট্রফির স্কোয়াডে জায়গা করে নেয়ার জন্য পারফরম করতে বলেছিলেন। এখন দলের খেলোয়াড় তালিকায় নিজের নাম দেখতে পারাটা সত্যি দারুণ।’
কৃষক পরিবারে বেড়ে উঠলেও ক্রিকেটার হওয়ার পথে পরিবারের পূর্ণ সমর্থন পেয়েছেন তিনি। তাঁর বাবাই তাঁকে ক্রিকেটের প্রথম দীক্ষা দিয়েছে, এরপর ভর্তি করেছে একাডেমিতে। সেখানে চমৎকার সব কোচের অধীনে খেলেছিলেন বৈভব; আর সেজন্য এত দ্রুত উন্নতির দিকে এগুতে পারছেন। অবশ্য আপাতত এক পা এক পা করেই সামনে যেতে চান তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ব্যাটার ব্রায়ান লারা তাঁর আদর্শ; বারো বছর বয়সী এই ক্রিকেটার বলেন, ‘লারা আমার আদর্শ, আমি প্রায় তাঁর ভিডিও দেখি। লারার ম্যাচ জেতানোর মানসিকতা আমার সবচেয়ে পছন্দ।’
কখনো নিজের আইডলের সাথে দেখা হলে কি করবেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা হবে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মত। আমি তাঁর কাছ থেকে আশীর্বাদ নিব; তাঁকে ব্যাটিং, মানসিক দৃঢ়তা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করব।’